নয়াদিল্লি, 24 মার্চ: আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল বৃহস্পতিবার গুজরাতের সুরাত আদালতের রায়দানের পর থেকেই ৷ শুক্রবার সেই আশঙ্কাই সত্যি হল ৷ 1951 সালের জন প্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী খারিজ হয়ে গেল কংগ্রেসের রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ (Rahul Gandhi disqualified from LS) ৷ সংসদের তরফে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর আরও চড়াল কংগ্রেস (Congress Slams BJP on Rahul Gandhi disqualification issue) ৷ পাশাপাশি তারা জানিয়েছে যে এই নিয়ে আইনগত লড়াই তো হবেই ৷ একই সঙ্গে রাজনৈতিক ভাবেও বিজেপির বিরুদ্ধে এই ইস্যুতে লড়াই হবে বলে কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে ৷
প্রসঙ্গত, 2019 সালের লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন কর্ণাটকে প্রচারে গিয়ে মোদি পদবি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন রাহুল গান্ধি ৷ সেই নিয়ে গুজরাতের বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদি মামলা দায়ের করেন সুরাত আদালতে ৷ সেই ফৌজদারি মানহানির মামলায় (Criminal Defamation Case) গত বুধবার রাহুল গান্ধিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় ৷ বৃহস্পতিবার রাহুলকে দু’বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আদালত ৷ সঙ্গে 50 হাজার টাকা জরিমানাও করা হয় ৷
একই সঙ্গে রাহুলকে জামিন দেয় আদালত ৷ উচ্চতর আদালতে আবেদনের জন্য একমাসের সময়ও দেওয়া হয় ৷ কিন্তু 1951 সালের জন প্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী দু’বছর বা তার বেশি সাজা হলে আইনসভা থেকে পদ খারিজ হয়ে যায় সংশ্লিষ্ট জন প্রতিনিধির ৷ ফলে বৃহস্পতিবারই আশঙ্কা করা হয় যে রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ বাতিল হয়ে যাবে ৷ শুক্রবার সেটাই হয়েছে ৷
কিন্তু এই নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকেই বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলছিল কংগ্রেস ৷ বিচারব্যবস্থায় বিজেপি প্রভাব বিস্তার করছে বলেও অভিযোগ করেছিল রাহুল গান্ধির দল ৷ শুক্রবার রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যাওয়ার পর সেই আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়িয়েছে কংগ্রেস ৷ এই ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধে তারা আইনি ও রাজনৈতিক লড়াই চালাবে বলে জানিয়েছে ৷
এই নিয়ে টুইট করেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ ৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা ভয়ও পাব না৷ চুপ করেও যাব না৷ প্রধানমন্ত্রী ও আদানির সঙ্গে যোগ থাকা মহা মেগা দুর্নীতি নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি তৈরি করার বদলে রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হল ৷ ভারতীয় গণতন্ত্রের ওম শান্তি ৷’’
অন্যদিকে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের (Congress Chief Mallikarjun Kharge) দাবি, রাহুলকে সংসদ থেকে বের করে দেওয়ার সবরকম চেষ্টা অনেক আগে থেকেই করছে বিজেপি ৷ আসলে যাঁরা সংসদে সত্যি কথা বলেন, তাঁদের সংসদে রাখতে চায় না বিজেপি ৷ তবে এই পরিস্থিতিতেও আদানি ইস্যুতে (Adani Issue) যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি থেকে তাঁরা সরছেন না বলে জানিয়েছেন খাড়গে ৷ তাঁর কথায়, ‘‘যদি প্রয়োজন পড়ে, তাহলে গণতন্ত্র রক্ষায় আমরা জেলে যেতেও রাজি ৷’’
তবে বিজেপি স্পষ্ট করেছে যে তারা কংগ্রেসের অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ৷ কারণ, আইন মেনেই সব সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তারা মনে করছে ৷ দলের নেতা তথা কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার রাষ্ট্রমন্ত্রী এসপিএস বাঘেল জানান, আইন মেনেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ কেউই আইনের ঊর্ধে নন৷ এই নিয়ে তিনি উত্তরপ্রদেশের উদাহরণ টেনেছেন ৷ জানিয়েছেন, একই আইনে উত্তরপ্রদেশে সম্প্রতি এক বিজেপি বিধায়কের পদ খারিজ করা হয়েছে ৷
