নয়াদিল্লি, 17 জুলাই: রাহুল গান্ধি কেবল দলের নেতা নয়, পুরো বিরোধী দলের নেতা ৷ সোমবার বিরোধী জোটের বৈঠকের প্রথমদিন কার্যত আগ বাড়িয়ে ঘোষণা করে দিল কংগ্রেস ৷ বিরোধী জোটে কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে বেঙ্গালুরুতে দাঁড়িয়ে এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক কেসি বেনুগোপাল বলনে, "রাহুল গান্ধি কংগ্রেসের জননেতা এবং বিরোধী দলেরও। শেষ বৈঠকে, ভারত জোড়ো যাত্রার জন্য সবাই তাঁর প্রশংসা করেছিল ৷" তাৎপর্যপূর্ণভাবে, যেখানে বিরোধী জোটের মুখ নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তই হয়নি, সেখানে কংগ্রেসের এই বক্তব্যে জল্পনা যে বাড়বে তা নিয়ে সন্দেহ নেই রাজনৈতিক মহলে ৷
কংগ্রেস সূত্রে খবর, বেনুগোপাল আসলে পটনায় অনুষ্ঠিত 23 জুন প্রথম বিরোধী জোটের বৈঠকের কথাই উল্লেখ করে ব্য়াখ্য়া দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাঁর বক্তব্যের ৷ যে বৈঠকে প্রকাশ্যেই আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ যাদব রাহুলের উদ্দেশে বলেছিলেন, তাঁর এবার বিয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত ৷ সেই সঙ্গে, তিনি এও জানিয়েছিলেন, সমস্ত বিরোধী নেতারা তাঁর বরযাত্রীতে অংশ নেবেন ৷ যদিও লালু প্রসাদ হালকা চালে এই মন্তব্য করলেও, সর্বভারতীয় রাজনৈতিক বৃত্তে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে 2024 সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে পুরো বিরোধী দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পরোক্ষ ইঙ্গিত হিসাবে দেখা হয়েছে।
এর আগে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী এবং জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার স্পষ্টতই জানিয়েছিলেন, যে রাহুলকে বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করায় তাঁর কোনও আপত্তি নেই। সেই অনুসারে, রাহুল সোমবার বেঙ্গালুরুতে দ্বিতীয়বার বিরোধীদের বৈঠকে যোগ দিয়েছেন ৷ থাকছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধিও ৷ আর সেখান থেকেই দলের প্রবীণ নেতাদের দাবি, আগামী দিনে নয়া কোনও সমীকরণের ইঙ্গিত মিলবে এই বৈঠক থেকেই ৷
অন্ধ্রপ্রদেশের দায়িত্বে থাকা এআইসিসি'র সম্পাদক সিডি ময়াপ্পান বলেন, "কংগ্রেসের তরফে, রাহুল গান্ধি যে 2024 সালের লোকসভা ভোটের জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী তাতে কোনও সন্দেহ নেই। ভারত জোড়ো যাত্রার পর থেকে, তিনি দেশের সবচেয়ে বিশিষ্ট বিরোধী নেতা হিসাবে নিজেকে মেলে ধরেছেন ৷" ময়াপ্পানের মতে, পার্টির সাংসদ মানিকম ঠাকুর একই রকম অনুভূতি প্রকাশ করেছিলেন ৷ যিনি কয়েক মাস আগে জানিয়েছিলেন, যে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে মোকাবিলা করার জন্য দলের উচিৎ রাহুল গান্ধিকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ঘোষণা করা।
তিনি বলেন, "আমি সম্পূর্ণভাবে সেই বক্তব্যকে সমর্থন করি। কংগ্রেসের সেই ধরনের ঘোষণা করাই উচিত। শুধুমাত্র রাহুলই শীর্ষ পদের যোগ্য নন, তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধক হতে পারেন। এছাড়াও, সংখ্যার দিক থেকে কংগ্রেসই একমাত্র জাতীয় বিরোধী জোটে এমন একটি দল, যে সবকটি রাজ্যেই রয়েছে ৷ এবং অবশ্যই আগামী লোকসভা ভোটে একক বৃহত্তম দল হিসাবে আবির্ভূত হবে। তখন কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী পদ পাবে এটাই স্বাভাবিক ৷"
আরও পড়ুন: সোনিয়ার অনুরোধে নৈশভোজে 30 মিনিট ছিলেন মমতা
কংগ্রেসের কমিউনিকেশন ইনচার্জ জয়রাম রমেশ বলেন, "নেতৃত্বের ইস্যু বারবার উঠে আসছে। এই নেতৃত্ব কী (সরকারে) যে সীমান্তে অনুপ্রবেশের বিষয়ে চিনকে ক্লিন চিট দিয়েছে এবং মণিপুর পুড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে নীরব? আসল ইস্যু হল সংবিধানকে একসঙ্গে রক্ষা করা এবং সেই কারণেই এই 26টি দল বেঙ্গালুরুতে জড়ো হয়েছে।" তাঁর আরও সংযোজন, "চাকরি, মূল্যবৃদ্ধি, অর্থনীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তার মতো জনগণের সমস্যাগুলি আরও গুরুত্বপূর্ণ এবং আজ সেগুলির সমাধান করা দরকার। আমরা বৈঠক চালিয়ে যাব এবং আমাদের এজেন্ডা নিয়ে বের হব ৷"