নয়াদিল্লি, 27 সেপ্টেম্বর: দেশে রেকর্ড হারে বেড়েছে বেকারত্ব ৷ এর সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতিও ৷ বুধবার এমনই অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি ৷ আনন্দ বিহার রেল স্টেশনে কুলিদের সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক কথোপকথনের একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে রাহুল দাবি করছেন, কুলিরা তাঁকে তাদের সমস্যাগুলি সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। যার মধ্যে এই দু'টি বিষয়ও ছিল বলে দাবি রাহুলের ৷ প্রসঙ্গত, গত 21 সেপ্টেম্বর আনন্দ বিহার রেলস্টেশনে কুলিদের সঙ্গে আলাপচারিতা করেছিলেন ৷ তাদের সমস্যাগুলি সম্পর্কেও জানতে চেয়েছিলেন তিনি।
প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি এদিন কুলিদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন ৷ সেখানেই রাহুল দাবি করেছেন, এই কুলিদের বেতন নেই, পেনশন নেই, স্বাস্থ্য বীমা নেই এবং রেলের তরফ থেকে কোনও সরকারি সুযোগ-সুবিধাও তারা পান না ৷ তবে এই মুহূর্তে তারা আশা করছেন, এর পরিবর্তন হবে।
কংগ্রেসের তরফে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে রাহুল গান্ধিকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, "কয়েকদিন আগে এক সবজি বিক্রেতা রামেশ্বরের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। এই খবর পাওয়ার পরই কিছু কুলি ভাই আমাকে তাদের সঙ্গেও দেখা করার জন্য অনুরোধ করেছিল। সেই সুযোগ পাওয়া মাত্রই আমি দিল্লির আনন্দ বিহার টার্মিনালে পৌঁছে গিয়েছিলাম। আমি তাদের সঙ্গে দেখা করেছি ৷ দীর্ঘ সময় ধরে আলাপচারিতা করেছি তাদের সঙ্গে ৷ যার মধ্যে তাদের জীবন ঘনিষ্ঠভাবে জানতে পেরেছি ৷ তাদের সংগ্রাম বুঝতে পেরেছি ৷”
রাহুল আরও জানিয়েছেন, "কুলিরা ভারতের সবচেয়ে পরিশ্রমী মানুষদের মধ্যে অন্যতম। প্রজন্মের পর প্রজন্ম, তারা তাদের যাত্রায় লক্ষ লক্ষ যাত্রীদের সাহায্য করার জন্য তাদের জীবন ব্যয় করছে। অনেক লোকের হাতে সেই ব্যাজটি কেবল একটি পরিচয় নয়, এটি তাদের প্রাপ্ত একটি উত্তরাধিকারও। কিন্তু তাদের জন্য অগ্রগতির পরিসর খুব কম ৷"
তিনি দাবি করেন, "আজ, ভারতে লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক রেলওয়ে স্টেশনে কুলি হিসাবে কাজ করে তাদের জীবিকা অর্জনের চেষ্টা করছে। কারণ রেকর্ড বেকারত্ব। দেশের শিক্ষিত নাগরিক দিনে দু'বেলা খাবারের জন্য লড়াই করছে ৷" রাহুলের দাবি, তারা প্রতিদিন 400 থেকে 500 টাকা আয় করেন ৷ যা তাদের পরিবারের খরচও বহন করতে পারে না ৷ সঞ্চয়ের তো প্রশ্নই আসে না।
রাহুল অভিযোগ করেন, "ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি। খাবার ব্যয়বহুল, বাসস্থান ব্যয়বহুল, শিক্ষা ব্যয়বহুল, স্বাস্থ্য ব্যয়বহুল ৷ এই অবস্থায় তারা কীভাবে বাঁচবে? তারা ভারতীয় রেলের বেতনভুক্ত কর্মচারী নয়। বেতন নেই, পেনশন নেই !" একইসঙ্গে তাঁর দাবি, এদের কোনও চিকিৎসা বিমা এমনকী মৌলিক কোনও সুযোগ সুবিধাও নেই ৷
রাহুলের দাবি, রেলের তরফে কোনও সরকারি সুবিধা তারা পায় না ৷ কিন্তু তাদের আশা আছে, সময় বদলে যাবে ৷ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এই কুলিদের মধ্যে অনেকেই জানিয়েছেন তাদের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি আছে ৷ কিন্তু চাকরি নেই ৷ তাই একরকম বাধ্য হয়ে তাদের পোর্টার হিসাবে কাজ করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মণিপুরের সমস্যার একটি কারণ অভিবাসীরা, শান্তি ফেরানোর চেষ্টা চলছে: বিদেশমন্ত্রী
রাহুলকে দেখা গিয়েছে কুলিদের সঙ্গে কথা বলার পর তাদের লাল জামা পরে মাথায় ব্যাগ তুলে নিতে ৷ এদের মধ্যেই একজন কুলি জানিয়েছেন, তার মা রাজস্থান সরকারের চিরঞ্জীবী যোজনার অধীনে 60 হাজার টাকার বিনামূল্যে চিকিৎসা পেয়েছেন ৷