নয়াদিল্লি, 20 ডিসেম্বর: পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল এবং বর্তমানে দেশের উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যঙ্গাত্মক অভিনয় নিয়ে ক্রমেই চড়ছে বিতর্ক। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। এই অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর তাঁকে এই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। প্রথমে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য এড়িয়ে গেলেও পরে বিষয়টি হালকা করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে কল্য়াণ বন্দ্যোপাধ্য়ায় প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মমতা বলেন, "আমি এই বিষয় নিয়ে কোনও টিপ্পনী করব না। এ বিষয়ে যা বলার আমাদের সংসদীয় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও'ব্রায়েন বলবেন।" যদিও এরপরেও বারংবার তাঁকে একই বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয় ৷ জানতে চাওয়া হয় দলনেত্রী হিসেবে উপরাষ্ট্রপতিকে এই অসম্মানকে তিনি সমর্থন করেন কি না। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এটা সামান্য হালকা চালে করা। আমরা কাউকে অসম্মান করি না। অসম্মান করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আর তাছাড়া রাহুল গান্ধি মোবাইলে ভিডিয়োগ্রাফি না-করলে হয়তো কেউ জানতেও পারতো না বিষয়টি।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এই কথা বলছেন তখন সাংবাদিকদের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয়, তাহলে কি এই বক্তব্যের মাধ্যমে আপনি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কাজকে সমর্থন করছেন ? যদিও সেই প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "আজকে বাংলার বিষয় নিয়ে যদি কারও কোনও প্রশ্ন থাকে তার উত্তর আমি দেব। এই নিয়ে কিছু বলব না।" এরপর আর কথা বাড়াননি মুখ্যমন্ত্রী।
কিন্তু যখন প্রশ্ন উঠছে, দেশের উপরাষ্ট্রপতিকে অসম্মান করা নিয়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন বক্তব্যে রাজনৈতিক মহলের একাংশ এই নীরবতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে আলাদা করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কোনও বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। তবে এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের যে তালিকা প্রথমে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছিল তাতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম থাকলেও তাঁকে ডেলিগেশন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা কোথাও যেন একটা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
যদিও এদিন সংসদে এই বিতর্ক প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড় বলেছেন, "আমি পরোয়া করি না তুমি জগদীপ ধনকড়কে কতটা অপমান করছ। কিন্তু উপরাষ্ট্রপতির পদ এবং কৃষক সমাজকে অপমান করার প্রয়াসকে আমি কোনওভাবেই সমর্থন করতে পারি না। আমি কোনওভাবেই আমার পথকে অপমান সমর্থন করতে পারব না। ভুলে গেলে চলবে না সংসদের সম্মান রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। সেই দায়িত্বই আমি পালন করছি।"
আরও পড়ুন: