কোয়ুরু (অন্ধ্রপ্রদেশ), 2 জুলাই: অন্ধ্রপ্রদেশে খারাপ রাস্তার কারণে সময়মতো চিকিৎসা না-পেয়ে মৃত্যু হল তিনমাসের এক শিশুর ৷ এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার আলুরি সিতারামারাজু জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে ৷
জানা গিয়েছে, সেখানে গ্রামের বাইরে যাওয়ার জন্য এখনও কোনও পাকা রাস্তা নেই । হাসপাতাল থেকে বাজার কোনও কাজে যেতে হলে গ্রামবাসীদের সেই ভরসা অনুর্বর খারাপ রাস্তাই ৷ বছর পর বছর সরকারের বদল ঘটলেও এখানকার মানুষের অবস্থার বদল ঘটেনি ৷ একই অবস্থা রাস্তারও ৷ গ্রামে কোনো মৌলিক সুবিধা নেই বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ । ফলে কাঁচা খারাপ মাটির রাস্তারই ওই শিশুর জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়াল ৷ শিশুটির দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল ৷ তবে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে সময়মতো হাসপাতালে নিয়ে পৌঁছতে পারেনি ৷ যার জেরে চিকিৎসার অভাবে অকালে প্রাণ হারাতে হল শিশুটিকে । আর এসবের জন্য শিশুটির পরিবার থেকে এলাকাবাসী দূষছে রাস্তার বেহাল দশা ও সরকারকে ৷
নির্যাতিতার পরিবারের এক সদস্য জানান, আলুরি সীতারামরাজু জেলার গুদেম কোথাভেদি এবং কোয়ুরু মণ্ডলের সীমান্তে মারিপাকালু গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক কোরা সাথীবাবুর তিনমাস বয়সি ছেলে সাই অসুস্থ হয়ে পড়ে । চিকিৎসার জন্য সাথীবাবু পায়ে হেঁটে মল্লিকার্জুন গ্রামে নিয়ে যায় তাকে এবং সেখান থেকে তাকে একটি বাইকে করে চিন্তাপল্লী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শিশুটির অবস্থা ইতিমধ্যেই আরও খারাপ হয়ে যায় ৷ এর জেরে বিশাখাপত্তনম কিং জর্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় নরসিপত্তনমে তার মৃত্যু হয় । এমনকী মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার জন্য কোনও গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি ৷ তখন স্থানীয় বিজেপি নেতা পাদেরু আইটিডিএ (সমন্বিত আদিবাসী উন্নয়ন সংস্থা)-এর প্রকল্পের আধিকারিককে ব্যাপারটি জানানো হয় ৷ তখন তিনি একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেন ।
আরও পড়ুন: রাস্তার বেহাল দশা, হেঁটে 10 কিমি দূরে হাসপাতালে পৌঁছতে গিয়ে মৃত্যু শিশুর
তারপরেই শিশুটিকে গ্রামে নিয়ে আনা সম্ভব হয় । তবে রাস্তার বেহাল দশার কারণে শিশুটিকে সরাসরি বাড়িতে নিয়ে আসা যায়নি ৷ শিশুটি একটি বাইকে করে 18 কিলোমিটার দূরে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় । কাঁদতে কাঁদতে শিশুটির বাবা-মা বলেন, গ্রামের সঙ্গে নিকটতম শহরের সংযোগকারী রাস্তা ভালো থাকলে তাঁদের সন্তান বেঁচে যেত । এরপরেই সরব হয় এলাকাবাসী ৷ তারা কর্তৃপক্ষের কাছে আর দেরি না-করে তাদের গ্রাম সড়কটি সংস্কার ও মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি জানান ।