রায়পুর (ছত্তিসগড়), 30 অগস্ট: অনলাইন ভিডিয়ো কনটেন্ট বর্তমান প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয় ৷ ভার্চুয়ালের বাড়-বাড়ন্তের যুগে ছোট ভিডিয়োর মাধ্যমে নানা বিষয় জেনে নিতে চান সবাই ৷ আর এই ট্রেন্ডকে কাজে লাগাতে ইউটিউবে চ্যানেল খুলে একের পর এক ভিডিয়ো কনটেন্ট পোস্ট করার চল শুরু হয়েছে ৷ সেরকমই ইউটিউবারদের হাবে (Village turns into YouTubers Hub) পরিণত হয়েছে ছত্তিসগড়ের তুলসী গ্রাম ৷ সেখানকার বাসিন্দাদের অধিকাংশ নেশা ও পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন এই বিষয়টিকে ৷ ভিডিয়ো কনটেন্ট তৈরি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট, এ ভাবেই কেরিয়ার গড়ে নিচ্ছেন গ্রামবাসীরা (Chhattisgarh village)৷
এই গ্রামের স্থানীয়দের প্রায় 40টি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে (YouTube video)৷ শুধু বিনোদন নয়, তাঁদের পোস্ট করা ভিডিয়ো কনটেন্টে থাকছে শিক্ষামূলক বিষয়ও ৷ দুই বন্ধু জ্ঞানেন্দ্র শুক্লা ও জয় ভার্মার হাত ধরেই এই গ্রামে পদার্পণ করে ইউটিউব সংস্কৃতি ৷ খুব শিগগিরই তা ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্যদের মধ্যেও ৷ নয়া পেশার খোঁজ পায় প্রত্যন্ত এই গ্রাম ৷ ইউটিউবে কেরিয়ার গড়তে এসবিআই-এর চাকরি ছেড়ে দেন জ্ঞানেন্দ্র ৷ আর শিক্ষকতার চাকরি ছাড়েন জয় ৷
জ্ঞানেন্দ্র কথায়, "আগে আমি এসবিআই-এ কাজ করতাম, নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ৷ আমার অফিসে ছিল হাই-স্পিড ইন্টারনেট ৷ সেখানেই ইউটিউবে ভিডিয়ো দেখতাম ৷ ফিল্ম দেখতে আগেই ভালো লাগত ৷ 2011-12 সালে ইউটিউবের নয়া ভার্সান এল ৷ সেই সময় ইউটিউবে হাতে গোনা কয়েকটি চ্যানেল ছিল ৷ 9টা-5টার ডিউটি আমার ভালো লাগত না ৷ তাই চাকরি ছেড়ে আমি ইউটিউবের জন্য ভিডিয়ো তৈরি শুরু করি ৷ এখনও পর্যন্ত আমরা প্রায় 250 ভিডিয়ো তৈরি করেছি ৷ আমাদের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা 1.15 লাখ ৷"
আরও পড়ুন: 8টি ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করল কেন্দ্র, এর মধ্যে একটি পাকিস্তানের
তবে এই কাজের শুরুটা খুব সহজ হয়নি দুই বন্ধুর ৷ কারণ এই পেশা নিয়ে সেই সময় মানুষের মধ্যে একটা অস্বস্তি কাজ করত ৷ সে কথাই জানিয়ে জ্ঞানেন্দ্র বললেন, "আগে ইউটিউবের জন্য কনটেন্ট তৈরি করতে গিয়ে আমরা খুবই অস্বস্তিতে পড়তাম ৷ পাবলিক প্লেসে কাজ করতে পারতাম না ৷ তবে গ্রামের বয়স্করা যখন আমাদের রামলীলার উপর কাজ করতে বললেন, তখন সব অস্বস্তি কেটে গেল ৷ এখন এই গ্রামের অনেকেই ইউটিউবের জন্য ভিডিয়ো তৈরি করছেন ও অর্থ উপার্জন করছেন ৷ গ্রামে প্রায় 3,000 লোক থাকেন ৷ তাঁদের মধ্য়ে 40 শতাংশই ইউটিউবের সঙ্গে জড়িত ৷"
অপর ইউটিউবার জয় ভার্মা বললেন, "আমাদের দেখাদেখি অনেকেই ইউটিউব ভিডিয়ো বানাচ্ছেন ৷ এখন রিলসও তৈরি করছেন ৷ আমার এমএসসি ডিগ্রি রয়েছে ৷ একটি প্রতিষ্ঠানে পার্ট-টাইম শিক্ষক ছিলাম ৷ আগে মাসে 12,000 থেকে 15,000 টাকা আয় করতাম ৷ তবে এখন প্রায় 30,000 থেকে 35,000 টাকা উপার্জন করি ৷"
মাও অধ্যুষিত এলাকায় মহিলাদেরও উপার্জনের মাধ্যম হয়ে উঠেছে ইউটিউব ৷ ইউটিউবার পিঙ্কি সাহু জানালেন, "আগে মহিলাদের অনেক কিছু করতে দেওয়া হত না ৷ এখন ইউটিউবের মাধ্যমে আমরা মহিলাদের জানাতে পারি যে তারা কী কী করতে পারে ৷"