ETV Bharat / bharat

Chandrayaan 3 Exclusive: চাঁদের মাটি ছোঁয়ার অপেক্ষায় চন্দ্রযান, অভিযানের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করলেন ইসরো বিজ্ঞানী

বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার কথা ভারতের চন্দ্রযানের ৷ তার আগে ইটিভি ভারতের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি হলেন ইসরোর বিজ্ঞানী পদ্মকুমার ই.এস ৷

Etv Bharat
ইসরো বিজ্ঞানী পদ্মকুমার ই.এস
author img

By

Published : Aug 21, 2023, 7:34 PM IST

Updated : Aug 21, 2023, 7:47 PM IST

ইসরো বিজ্ঞানী পদ্মকুমার ই.এস এর সাক্ষাৎকার

তিরুঅনন্তপুরম, 21 অগস্ট: ইতিহাস তৈরির দোর গোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা ৷ সৌজন্যে দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান-3 মিশন ৷ বুধবার সন্ধ্যে 6টা 4 মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার কথা ভারতের পাঠানোর চন্দ্রযানের ৷ সেদিন যদি ঠিকভাবে চাঁদের মাটিতে পা রাখতে পারে ল্যান্ডার 'বিক্রম', তাহলেই নয়া ইতিহাস গড়বে ভারত ৷ আন্তর্জাতিক মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে নয়া মাইলফলক গড়বে ইসরো ৷ কারণ এখনও পর্যন্ত বিশ্বের কোনও দেশের পাঠানো মহাকাশযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা রাখতে সক্ষম হয়নি ৷ এই প্রসঙ্গে ইটিভি ভারতের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি হলেন ইসরোর ইন্টারনাল সিস্টেমস ইউনিটের ডিরেক্টর পদ্মকুমার ই.এস ৷

চাঁদের দক্ষিণ মেরুর 69.37,32.35 অঞ্চলে অবতরণ করার কথা 'বিক্রম'য়ের ৷ 2019 সালের চন্দ্রযান-2 মিশনের সময় ল্যান্ডারের যেখানে অবতরণ করার কথা ছিল, এবার তার থেকে প্রায় 100 কিমি দূরে নামবে 'বিক্রম' ৷

কিন্তু ইসরো কেন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এই অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিল ?

এই প্রসঙ্গে ইসরোর বিজ্ঞানী পদ্মকুমার ই.এস জানান, চাঁদের দক্ষিণ মেরু বরফে ঢাকা এবং সেখানে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান চালিয়ে অনেক তথ্য পাওয়ার সম্ভবনা আছে সেকারণেই ভারত এলভিএম-3 মহাকাশযানকে সেই অঞ্চলের উদ্দেশ্যে পাঠায়, যাদে এই যানে চড়ে চাঁদের ওই অংশে নামতে পারে 'বিক্রম' ৷ তিনি বলেন, "এখনও পর্যন্ত চাঁদে যে অভিযানগুলি হয়েছে তার বেশিরভাগই উত্তর মেরু বা ইকুয়েটরে ৷ এই অংশটির আবহাওয়া ও প্রকৃতি তুলনামূলকভাবে ভালো দক্ষিণ মেরুর তুলনায় ৷ যেহেতু দক্ষিণ মেরু মরফাবৃত তাই মনে করা হচ্ছে সেখান থেখে অনেক তথ্য মিলতে পারে ৷ বিশেষ করে আপার ক্রাস্ট ম্যান্টল স্তর সম্পর্কে অনেককিছু জানা যেতে পারে ৷ চাঁদের উৎপত্তি এবং সৌরজগৎ সম্পর্কেও অনেক তথ্য মিলতে পারে ৷"

ভারতের এই মহাকাশ বিজ্ঞানী আরও বলেন, "তবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের বিষয়টি বেশ কঠিন ৷ তবে সেখানেই বিক্রমকে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা, দক্ষিণ মেরুতে 69.2 ডিগ্রি দক্ষিণে ৷" তিনি জানান, 14 দিন ধরে সেখানকার প্রকৃতি সম্পর্কে নানা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হবে ৷ চাঁদের পৃষ্ঠদেশ, সেখানে কী কী পদার্থ রয়েছে এবং সেখানকার রাসয়ানিক গঠন সম্পর্কে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলবে ৷ ভারতের এই চন্দ্র অভিযান সফল হলে চাঁদের গঠন রহস্য সম্বন্ধে আলোকপাত করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তিনি ৷ চাঁদের এই দক্ষিণ মেরু পৃথিবার এই উপগ্রহটির দক্ষিণতম অংশ ৷ বরফাবৃত ও অন্ধকারচ্ছন্ন এই অংশটি বরাবরই মহাকাশ বিজ্ঞানীদের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে ৷

আরও পড়ুন: অপেক্ষার 48 ঘণ্টা, চন্দ্রযান-2-এর সঙ্গে চন্দ্রযান-3-এর ল্যান্ডার মডিউলের সফল যোগ স্থাপন

রাশিয়ার লুনা 25 এর তুলনায় ভারতের এই চন্দ্রাভিযান কেন এত সময় সাপেক্ষ, এই প্রসঙ্গে বিজ্ঞানী পদ্মকুমার ই.এস বলেন, "ইসরো এইভাবেই এই অভিযানের পরিকল্পনা করেছিল ৷ এলভিএম 3 নামের যে মহাকাশ যানটি এই অভিযানের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে সেটি সর্বোচ্চ ভর বহন করেই চাঁদের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয় ৷ ইসরোর কাছে যে প্রযুক্তিগত সহায়তা রয়েছে তার সাহায্য নিয়েই পেলোডস ও রোভার পাঠানো হয়েছে চাঁদে ৷ সেক্ষেত্রে কতটা সময় লাগছে, তা এই অভিযানের সাফল্যের উপর প্রভাব ফেলবে না ৷ বরং প্রতিটি পদক্ষেপ যাতে নিখুঁত হয় এবং এই অভিযান যাতে সফল হয় সেদিকেই নজর দেওয়া হয়েছে ৷ আমরা সঠিকভাবেই এগোচ্ছি ৷ যে পরিমাণ ভর বহন করে চন্দ্রযান-3 গিয়েছে তা একটি চ্যালেঞ্জের বিষয় ৷ এটা আমাদের কাছে চাঁদে গবেষণা চালানোর সবচেয়ে বড় সুযোগ ৷ এই অভিযানে ভুল করার কোনও সুযোগ নেই, তাই আগাম পরিকল্পনা করে সতর্কতার সঙ্গেই আমরা এগোচ্ছি ৷"

ইসরো বিজ্ঞানী পদ্মকুমার ই.এস এর সাক্ষাৎকার

তিরুঅনন্তপুরম, 21 অগস্ট: ইতিহাস তৈরির দোর গোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা ৷ সৌজন্যে দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান-3 মিশন ৷ বুধবার সন্ধ্যে 6টা 4 মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার কথা ভারতের পাঠানোর চন্দ্রযানের ৷ সেদিন যদি ঠিকভাবে চাঁদের মাটিতে পা রাখতে পারে ল্যান্ডার 'বিক্রম', তাহলেই নয়া ইতিহাস গড়বে ভারত ৷ আন্তর্জাতিক মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে নয়া মাইলফলক গড়বে ইসরো ৷ কারণ এখনও পর্যন্ত বিশ্বের কোনও দেশের পাঠানো মহাকাশযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা রাখতে সক্ষম হয়নি ৷ এই প্রসঙ্গে ইটিভি ভারতের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি হলেন ইসরোর ইন্টারনাল সিস্টেমস ইউনিটের ডিরেক্টর পদ্মকুমার ই.এস ৷

চাঁদের দক্ষিণ মেরুর 69.37,32.35 অঞ্চলে অবতরণ করার কথা 'বিক্রম'য়ের ৷ 2019 সালের চন্দ্রযান-2 মিশনের সময় ল্যান্ডারের যেখানে অবতরণ করার কথা ছিল, এবার তার থেকে প্রায় 100 কিমি দূরে নামবে 'বিক্রম' ৷

কিন্তু ইসরো কেন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এই অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিল ?

এই প্রসঙ্গে ইসরোর বিজ্ঞানী পদ্মকুমার ই.এস জানান, চাঁদের দক্ষিণ মেরু বরফে ঢাকা এবং সেখানে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান চালিয়ে অনেক তথ্য পাওয়ার সম্ভবনা আছে সেকারণেই ভারত এলভিএম-3 মহাকাশযানকে সেই অঞ্চলের উদ্দেশ্যে পাঠায়, যাদে এই যানে চড়ে চাঁদের ওই অংশে নামতে পারে 'বিক্রম' ৷ তিনি বলেন, "এখনও পর্যন্ত চাঁদে যে অভিযানগুলি হয়েছে তার বেশিরভাগই উত্তর মেরু বা ইকুয়েটরে ৷ এই অংশটির আবহাওয়া ও প্রকৃতি তুলনামূলকভাবে ভালো দক্ষিণ মেরুর তুলনায় ৷ যেহেতু দক্ষিণ মেরু মরফাবৃত তাই মনে করা হচ্ছে সেখান থেখে অনেক তথ্য মিলতে পারে ৷ বিশেষ করে আপার ক্রাস্ট ম্যান্টল স্তর সম্পর্কে অনেককিছু জানা যেতে পারে ৷ চাঁদের উৎপত্তি এবং সৌরজগৎ সম্পর্কেও অনেক তথ্য মিলতে পারে ৷"

ভারতের এই মহাকাশ বিজ্ঞানী আরও বলেন, "তবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের বিষয়টি বেশ কঠিন ৷ তবে সেখানেই বিক্রমকে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা, দক্ষিণ মেরুতে 69.2 ডিগ্রি দক্ষিণে ৷" তিনি জানান, 14 দিন ধরে সেখানকার প্রকৃতি সম্পর্কে নানা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হবে ৷ চাঁদের পৃষ্ঠদেশ, সেখানে কী কী পদার্থ রয়েছে এবং সেখানকার রাসয়ানিক গঠন সম্পর্কে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলবে ৷ ভারতের এই চন্দ্র অভিযান সফল হলে চাঁদের গঠন রহস্য সম্বন্ধে আলোকপাত করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তিনি ৷ চাঁদের এই দক্ষিণ মেরু পৃথিবার এই উপগ্রহটির দক্ষিণতম অংশ ৷ বরফাবৃত ও অন্ধকারচ্ছন্ন এই অংশটি বরাবরই মহাকাশ বিজ্ঞানীদের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে ৷

আরও পড়ুন: অপেক্ষার 48 ঘণ্টা, চন্দ্রযান-2-এর সঙ্গে চন্দ্রযান-3-এর ল্যান্ডার মডিউলের সফল যোগ স্থাপন

রাশিয়ার লুনা 25 এর তুলনায় ভারতের এই চন্দ্রাভিযান কেন এত সময় সাপেক্ষ, এই প্রসঙ্গে বিজ্ঞানী পদ্মকুমার ই.এস বলেন, "ইসরো এইভাবেই এই অভিযানের পরিকল্পনা করেছিল ৷ এলভিএম 3 নামের যে মহাকাশ যানটি এই অভিযানের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে সেটি সর্বোচ্চ ভর বহন করেই চাঁদের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয় ৷ ইসরোর কাছে যে প্রযুক্তিগত সহায়তা রয়েছে তার সাহায্য নিয়েই পেলোডস ও রোভার পাঠানো হয়েছে চাঁদে ৷ সেক্ষেত্রে কতটা সময় লাগছে, তা এই অভিযানের সাফল্যের উপর প্রভাব ফেলবে না ৷ বরং প্রতিটি পদক্ষেপ যাতে নিখুঁত হয় এবং এই অভিযান যাতে সফল হয় সেদিকেই নজর দেওয়া হয়েছে ৷ আমরা সঠিকভাবেই এগোচ্ছি ৷ যে পরিমাণ ভর বহন করে চন্দ্রযান-3 গিয়েছে তা একটি চ্যালেঞ্জের বিষয় ৷ এটা আমাদের কাছে চাঁদে গবেষণা চালানোর সবচেয়ে বড় সুযোগ ৷ এই অভিযানে ভুল করার কোনও সুযোগ নেই, তাই আগাম পরিকল্পনা করে সতর্কতার সঙ্গেই আমরা এগোচ্ছি ৷"

Last Updated : Aug 21, 2023, 7:47 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.