নয়াদিল্লি, 14 এপ্রিল : 24 ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ইউ-টার্ন কেন্দ্রের ৷ দিল্লি হাইকোর্টে তারা জানাল, নতুন বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী, রাজধানীতে সবরকমের ধর্মীয় জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ৷ অথচ একদিন আগেই দিল্লির নিজামউদ্দিন মারকাজ়ে রমজানের সময় প্রার্থনার অনুমতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার ৷
উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চ মাস থেকেই বন্ধ রয়েছে দক্ষিণ দিল্লির নিজামউদ্দিনের মসজিদ বাঙলে ওয়ালি ৷ সেই সময় এই মসজিদে পূর্ব ঘোষিত তবলিঘি জামাতে সামিল হন অসংখ্য ইসলাম ধর্মাবলম্বী ৷ অতিমারির সময় এই জমায়েত নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক ৷ অভিযোগ ওঠে, তবলিঘি জামাতে অংশগ্রহণকারীদের থেকেই দেশজুড়ে ছড়িয়েছে কোভিড-19 ভাইরাস ৷
এই প্রেক্ষাপটে এ বছর রামজান মাসে মসজিদ খোলার আবেদন জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় দিল্লি ওয়াকফ বোর্ড ৷ তাদের আর্জি ছিল, রমজান মাসে মারকাজ়ের ভিতরে প্রার্থনা করতে দেওয়ার অনুমতিটুকু অন্তত দেওয়া হোক ৷
ওয়াকফ বোর্ডের এই আবেদনের প্রেক্ষিতে গত সোমবার কেন্দ্র জানায়, একদিনে সর্বাধিক 200 জন মারকাজ়ের ভিতরে ঢুকে প্রার্থনা করতে পারবেন ৷ আর একসঙ্গে সর্বাধিক 20 জন ভিতরে ঢুকতে পারবেন ৷ এবং পুরো প্রক্রিয়াটাই সারতে হবে পুলিশের নজরদারিতে ৷
কেন্দ্রের এই অবস্থান শোনার পরই কড়া প্রতিক্রিয়া দেয় আদালত ৷ দিল্লি হাইকোর্টের তরফে কেন্দ্রের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘‘আপনারা কি আপনাদের বিজ্ঞপ্তিতে ধর্মীয় স্থানগুলিতে জমায়েতের সর্বোচ্চ সংখ্যা কমিয়ে 20 করে দিয়েছেন ?’’ প্রসঙ্গত, এবারের কুম্ভমেলায় জমায়েত নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷ বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, কুম্ভমেলায় অংশগ্রহণকারীদের থেকে সারা দেশের ছড়িয়ে পড়বে কোভিড-19 ভাইরাস ৷
আরও পড়ুন : কুম্ভমেলা হতে পারে করোনার ‘সুপার স্প্রেডার’, চিন্তায় সরকার
আদালতের প্রশ্ন, সমস্ত ধর্মীয়, রাজনৈতিক, শিক্ষা ও খেলাধুলো সংক্রান্ত এবং সামাজিক জমায়েত বন্ধ করার বিষয়ে নতুন কী অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্র ? হলফনামা দিয়ে তা সরকারকে জানাতে বলেছে দিল্লি হাইকোর্ট ৷
এই অবস্থায় ওয়াকফ বোর্ডের তরফে আদালতকে জানানো হয়, তাদের পক্ষে দিনে শুধুমাত্র 200 জনকে প্রার্থনার জন্য বাছাই করা সম্ভব নয় ৷ যা শুনে আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, তার কোনও প্রয়োজনও নেই ৷ কারণ, অন্যান্য় ধর্মীয় সমাবেশে যখন ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না, তখন নিজামউদ্দিন মারকাজ়েও তার কোনও প্রয়োজন নেই ৷ সর্বোচ্চ 200 জনের জমায়েতের এই প্রস্তাব মানা সম্ভব নয় বলেই মত আদালতের ৷
এরপরই অবস্থান বদল করে কেন্দ্র ৷ মঙ্গলবার তাদের তরফে জানানো হয়, দিল্লি বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী রাজধানীতে কোনও ধর্মীয় জমায়েতই করা যাবে না ৷ এই আইন শুধুমাত্র দিল্লির জন্যই প্রযোজ্য বলে জানিয়েছে কেন্দ্র ৷