নয়াদিল্লি, 24 জুন: মণিপুরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানো হোক ৷ এমনটাই দাবি করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে ৷ শনিবার নয়াদিল্লিতে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক হয় ৷ সেই বৈঠকেই এই প্রস্তাব দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ তাদের দাবি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই প্রতিনিধি দল পাঠানো হোক ৷ তবে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রস্তাব উপেক্ষা করছে ৷ কিন্তু মণিপুরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এই সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানো জরুরি বলে জানিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের দল ৷
ওই বিবৃতিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আবার মণিপুর ইস্যু নিয়ে তোপ দাগা হয়েছে তৃণমূলের তরফে ৷ বাংলার শাসক দলের বক্তব্য, মণিপুর জ্বললে অসম-মেঘালয় সহ পুরো উত্তর পূর্ব ভারতের উপর খারাপ প্রভাব পড়ে ৷ সারা দেশেই এর প্রভাব পড়ে ৷ তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার মণিপুরকে কাশ্মীরে পরিণত করতে চাইছে ৷
অমিত শাহের মণিপুর সফরকেও ওই বিবৃতিতে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল ৷ তাদের অভিযোগ, অমিত শাহ অনেক পরে সেখানে গিয়েছেন ৷ সেখানে চারদিন থাকলেও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেননি ৷ বিবৃতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে মণিপুরে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ার বিষয়টি তোলা হয়েছে ৷
গত 3 মে থেকে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয়ে রয়েছে মণিপুরের ৷ সেই নিয়ে শনিবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছিল ৷ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ সূত্রের খবর, মণিপুরের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়েই সেখানে আলোচনা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: সর্বদলীয় বৈঠকের আগেই মণিপুরে ইন্টারনেট বন্ধের মেয়াদ বৃদ্ধি
তফসিলি উপজাতিদের তালিকায় মেটেইদের অন্তর্ভুক্তির দাবির প্রতিবাদে অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সমাবেশের পরই হিংসা ছড়াতে শুরু করে মণিপুরে ৷ কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে প্রশাসন ৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজেও যান উত্তর পূর্ব ভারতের ওই রাজ্যে ৷ চারদিন তিনি সেখানে ছিলেন৷ এর পর কিছুটা শান্ত হয়েছিল মণিপুরের পরিস্থিতি ৷ তার পর আবার হিংসা ছড়াতে শুরু করেছে সেখানে ৷ এখনও পর্যন্ত 120 জনের মৃত্যু হয়েছে৷ আহত প্রায় 3 হাজার৷
গত দু’মাসে বিরোধীরা এই নিয়ে কেন্দ্রের সমালোচনা করেছে ৷ বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখে পড়েছেন ৷ সর্বদলীয় বৈঠক নিয়েও বিরোধীরা এই সমালোচনা করেছে ৷ যদিও বিরোধী দলের অধিকাংশই এ দিনের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছে ৷
বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা, মণিপুরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের ওকরাম ইবোবি সিং, তৃণমূলের ডেরেক ও'ব্রায়েন, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী এনপিপি-র কনরাড সাংমা, এআইএডিএমকে-র এম থাম্বিদুরাই, ডিএমকে-র তিরুচি শিবা, বিজেডির পিনাকী মিশ্র, আপের সঞ্জয় সিং, আরজেডির মনোজ ঝা ও শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠীর প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী উপস্থিত ছিলেন ৷ এছাড়া ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী, নিত্যানন্দ রাই ও অজয় কুমার মিশ্রা ৷ ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা, আইবি-র ডিরেক্টর তপন ডেকা প্রমুখ ৷
আরও পড়ুন: অশান্তই মণিপুর, ইম্ফলের গ্রামে চলল এলোপাথাড়ি গুলি