ETV Bharat / bharat

বিশ্বের 60 শতাংশ ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশেরেই হাল সবচেয়ে খারাপ

হু জানিয়েছে, প্রত্যেককে ভ্যাকসিন না দেওয়া পর্যন্ত কেউ নিরাপদ নয় ৷ বিশ্বের 60 শতাংশ ভ্যাকসিন উৎপাদন করলেও দফায় দফায় দেশের সব লোককে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থেকে এখনও অনেকটাই দূরে ভারত ৷ আর তা পূরণ করার নীতিগুলির সংশোধন আর বাস্তবায়নে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপই একমাত্র আশার আলো ৷

author img

By

Published : May 11, 2021, 12:55 PM IST

দরকার গণ-ভ্যাকসিনেশন
দরকার গণ-ভ্যাকসিনেশন

হায়দ্রাবাদ, 11 মে : সারা দুনিয়ায় গণ-ভ্যাকসিনেশন শুরু হয়েছে ৷ আর এতে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনের 60 শতাংশ উৎপাদিত হয় ভারতে ৷ অথচ দূরদৃষ্টির অভাবে সেই দেশের অবস্থাই বিশ্বে সবচেয়ে খারাপ ৷

প্রথম দফায় কেন্দ্রীয় সরকার নিজেই 45 বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিককে ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল ৷ অথচ বর্তমানে এই ভ্যাকসিনেশনের গতি এক মাস আগের থেকেও অর্ধেক হয়ে গিয়েছে ৷

এমনকি 1 মে থেকে 18 বছর ও তার বেশি বয়সিদের ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়াও ধাক্কা খেয়েছে ৷ দেশজুড়ে এই প্রক্রিয়া রূপায়িত করতে হলে মাসে 10-11 কোটি ভ্যাকসিন উৎপাদন করা দরকার ৷ কিন্তু এটা চিন্তার বিষয় যে, এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে আরো এক মাস বা তার বেশি সময় লাগবে ৷

এটাও উদ্বেগজনক যে, দেশের এই কোভিড সুনামিতে বারোটি রাজ্যে এক লক্ষেরও বেশি অ্যাকটিভ কোভিড কেস রয়েছে ৷ এই সংখ্যা কমার সম্ভাবনা রয়েছে শুধুমাত্র জুনের শেষের দিকে ৷ এরকম সংকটজনক পরিস্থিতি সামলাতে দেশের বিচারবিভাগের সক্রিয় হস্তক্ষেপই একমাত্র আশার আলো ৷

বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী, দেশের 18 বছর ও তার ঊর্ধ্বে 80 কোটি মানুষের সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে কমপক্ষে আট মাস সময় লাগবে ৷ এই সময় কেন্দ্র মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করছে, সম্প্রতি কেন্দ্রের ভ্যাকসিন নীতির সমালোচনা করে জানিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত ৷ কেন্দ্রকে একটা সার্বিক ভ্যাকসিন নীতি প্রণয়ন করার নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷

প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর সি রঙ্গরাজন পরামর্শ দিয়েছেন, একদিকে কেন্দ্র বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে একই সময় রাজ্যগুলিও যেন প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামোগুলির উন্নতির দিকে নজর দেয় ৷ প্রয়োজনে আরো হাসাপাতালের ব্যবস্থা করে ৷

বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলি 50 শতাংশ পরীক্ষার মাধ্যমে কোভিড রোগী শনাক্ত করে ফেলছে, ভারত মাত্র 20 শতাংশ পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পেরেছে ৷ এই ধীর গতি কোভিড ভাইরাসকে ছড়িয়ে পড়ার নতুন শক্তি জোগাচ্ছে ৷

দেশে শ'য়ে শ'য়ে মানুষ অক্সিজেন আর ভেন্টিলেটর না পেয়ে মারা গিয়েছেন ৷ তাঁদের পরিজনেরা বারে বারে সাহায্য চেয়ে ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছেন ৷ রাজ্যগুলি অক্সিজেন পেতে আইনি যুদ্ধে নামতে বাধ্য হয়েছে ৷ আর এটা দুর্ভাগ্যজনক, কোর্টের দ্বারস্থ না হওয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষকে তাদের অবস্থান থেকে সরানো যায়নি ৷

কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, রাজ্যগুলির হাসপাতালে আইসিইউ আর সাধারণ বেডের সংখ্যার অনুপাতে অক্সিজেনের বরাদ্দ ঠিক করা হয়েছে ৷ সুপ্রিম কোর্ট অক্সিজেন নিয়ে কেন্দ্রের এই অহেতুক তর্ক খারিজ করে দিয়েছে ৷ আর কেন্দ্রকে এই অক্সিজেন বরাদ্দের নীতি সংশোধনের কথা জানিয়েছে ৷

আরো পড়ুন : ভারতের বর্তমান করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি "দুশ্চিন্তাজনক", জানালেন হু-র বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন

গবেষণায় জানা গিয়েছে, এর পরের দফায় দেশের বাচ্চাদের মধ্যে ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ কেন্দ্রকে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে আগে তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ অক্সিজেন উৎপাদনের উপকরণগুলিকে জিএসটি মুক্ত করতে রাজি হয়নি কেন্দ্র ৷ এটা হাস্যকর, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত বদলের জন্যেও সুপ্রিম কোর্টকেই হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে ৷

এখনো পর্যন্ত বিশ্বের 174টি দেশে ভ্যাকসিনের মোট 125 কোটি ডোজ দেওয়া হয়েছে ৷

ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন ইতিমধ্যে জানিয়েছে, প্রত্যেককে ভ্যাকসিন না দেওয়া পর্যন্ত কেউ নিরাপদ নয় ৷ তাদের হিসেব অনুযায়ী, বিশ্বের ধনী দেশগুলির ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়ার গতি, গরিব দেশগুলির ওই প্রক্রিয়ার থেকে 25 গুণ বেশি ৷

এমনকি এই চেতাবনিও দিয়েছে তারা যে, ভ্যাকসিনেশনের এই বৈষম্য বিশ্বের জন্য আত্মহত্যার সামিল ৷

গত অক্টোবরে, ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যাকসিনের পেটেন্ট সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণগুলিকে সরিয়ে রেখে বিশ্বের সব দেশগুলিকে যাতে দ্রুত আর কম দামি ভ্যাকসিন সরবরাহ করা যায়, তা জানিয়েছে ৷

যদিও বর্তমানের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে একমেবদ্বিতীয়ম সুপারপাওয়ার আমেরিকা এ বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে, তবু পেটেন্ট সংক্রান্ত জটিলতা আলোচনা করে একটি যুক্তিসঙ্গত নীতি প্রণয়ন করতে অন্ততপক্ষে আরো কিছু মাস তো লেগেই যাবে ৷

হায়দ্রাবাদ, 11 মে : সারা দুনিয়ায় গণ-ভ্যাকসিনেশন শুরু হয়েছে ৷ আর এতে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনের 60 শতাংশ উৎপাদিত হয় ভারতে ৷ অথচ দূরদৃষ্টির অভাবে সেই দেশের অবস্থাই বিশ্বে সবচেয়ে খারাপ ৷

প্রথম দফায় কেন্দ্রীয় সরকার নিজেই 45 বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিককে ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল ৷ অথচ বর্তমানে এই ভ্যাকসিনেশনের গতি এক মাস আগের থেকেও অর্ধেক হয়ে গিয়েছে ৷

এমনকি 1 মে থেকে 18 বছর ও তার বেশি বয়সিদের ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়াও ধাক্কা খেয়েছে ৷ দেশজুড়ে এই প্রক্রিয়া রূপায়িত করতে হলে মাসে 10-11 কোটি ভ্যাকসিন উৎপাদন করা দরকার ৷ কিন্তু এটা চিন্তার বিষয় যে, এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে আরো এক মাস বা তার বেশি সময় লাগবে ৷

এটাও উদ্বেগজনক যে, দেশের এই কোভিড সুনামিতে বারোটি রাজ্যে এক লক্ষেরও বেশি অ্যাকটিভ কোভিড কেস রয়েছে ৷ এই সংখ্যা কমার সম্ভাবনা রয়েছে শুধুমাত্র জুনের শেষের দিকে ৷ এরকম সংকটজনক পরিস্থিতি সামলাতে দেশের বিচারবিভাগের সক্রিয় হস্তক্ষেপই একমাত্র আশার আলো ৷

বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী, দেশের 18 বছর ও তার ঊর্ধ্বে 80 কোটি মানুষের সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে কমপক্ষে আট মাস সময় লাগবে ৷ এই সময় কেন্দ্র মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করছে, সম্প্রতি কেন্দ্রের ভ্যাকসিন নীতির সমালোচনা করে জানিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত ৷ কেন্দ্রকে একটা সার্বিক ভ্যাকসিন নীতি প্রণয়ন করার নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷

প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর সি রঙ্গরাজন পরামর্শ দিয়েছেন, একদিকে কেন্দ্র বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে একই সময় রাজ্যগুলিও যেন প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামোগুলির উন্নতির দিকে নজর দেয় ৷ প্রয়োজনে আরো হাসাপাতালের ব্যবস্থা করে ৷

বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলি 50 শতাংশ পরীক্ষার মাধ্যমে কোভিড রোগী শনাক্ত করে ফেলছে, ভারত মাত্র 20 শতাংশ পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পেরেছে ৷ এই ধীর গতি কোভিড ভাইরাসকে ছড়িয়ে পড়ার নতুন শক্তি জোগাচ্ছে ৷

দেশে শ'য়ে শ'য়ে মানুষ অক্সিজেন আর ভেন্টিলেটর না পেয়ে মারা গিয়েছেন ৷ তাঁদের পরিজনেরা বারে বারে সাহায্য চেয়ে ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছেন ৷ রাজ্যগুলি অক্সিজেন পেতে আইনি যুদ্ধে নামতে বাধ্য হয়েছে ৷ আর এটা দুর্ভাগ্যজনক, কোর্টের দ্বারস্থ না হওয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষকে তাদের অবস্থান থেকে সরানো যায়নি ৷

কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, রাজ্যগুলির হাসপাতালে আইসিইউ আর সাধারণ বেডের সংখ্যার অনুপাতে অক্সিজেনের বরাদ্দ ঠিক করা হয়েছে ৷ সুপ্রিম কোর্ট অক্সিজেন নিয়ে কেন্দ্রের এই অহেতুক তর্ক খারিজ করে দিয়েছে ৷ আর কেন্দ্রকে এই অক্সিজেন বরাদ্দের নীতি সংশোধনের কথা জানিয়েছে ৷

আরো পড়ুন : ভারতের বর্তমান করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি "দুশ্চিন্তাজনক", জানালেন হু-র বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন

গবেষণায় জানা গিয়েছে, এর পরের দফায় দেশের বাচ্চাদের মধ্যে ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ কেন্দ্রকে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে আগে তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ অক্সিজেন উৎপাদনের উপকরণগুলিকে জিএসটি মুক্ত করতে রাজি হয়নি কেন্দ্র ৷ এটা হাস্যকর, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত বদলের জন্যেও সুপ্রিম কোর্টকেই হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে ৷

এখনো পর্যন্ত বিশ্বের 174টি দেশে ভ্যাকসিনের মোট 125 কোটি ডোজ দেওয়া হয়েছে ৷

ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন ইতিমধ্যে জানিয়েছে, প্রত্যেককে ভ্যাকসিন না দেওয়া পর্যন্ত কেউ নিরাপদ নয় ৷ তাদের হিসেব অনুযায়ী, বিশ্বের ধনী দেশগুলির ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়ার গতি, গরিব দেশগুলির ওই প্রক্রিয়ার থেকে 25 গুণ বেশি ৷

এমনকি এই চেতাবনিও দিয়েছে তারা যে, ভ্যাকসিনেশনের এই বৈষম্য বিশ্বের জন্য আত্মহত্যার সামিল ৷

গত অক্টোবরে, ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যাকসিনের পেটেন্ট সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণগুলিকে সরিয়ে রেখে বিশ্বের সব দেশগুলিকে যাতে দ্রুত আর কম দামি ভ্যাকসিন সরবরাহ করা যায়, তা জানিয়েছে ৷

যদিও বর্তমানের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে একমেবদ্বিতীয়ম সুপারপাওয়ার আমেরিকা এ বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে, তবু পেটেন্ট সংক্রান্ত জটিলতা আলোচনা করে একটি যুক্তিসঙ্গত নীতি প্রণয়ন করতে অন্ততপক্ষে আরো কিছু মাস তো লেগেই যাবে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.