নয়াদিল্লি, 22 সেপ্টেম্বর: বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)-এর সাংসদ দানিশ আলিকে যেভাবে ভরা সংসদে বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরী আপত্তিকর মন্তব্য করেন, তাতে ক্ষুব্ধ বিরোধী দলগুলি ৷ ক্ষুব্ধ দানিশ আলি শুক্রবার কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, বিধুরীর বিরুদ্ধে স্পিকার যদি তদন্ত না করেন বা কঠোর ব্যবস্থা না নেন, তবে তিনি সংসদ ছেড়ে দেবেন ৷
এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়, বিএসপি নেতা জানান, দক্ষিণ দিল্লির বিজেপি সাংসদ বিধুরী একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে এই মন্তব্য করে পুরো জাতিকেই অপমান করেছেন । একই সঙ্গে, বিজেপিকে কটাক্ষ করে দানিশ আলি বলেন, "বিজেপি রমেশ বিধুরীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেবে কি না, বা তাঁকে পদোন্নতি দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে কি না, তাও এখন দেখার বিষয়।"
এদিন সন্ধ্যায় দানিশ আলির বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি ৷ বেশ কিছুক্ষণ তাঁর সঙ্গে কথা বলার পর বেরিয়ে এসে রাহুল বলেন, "ঘৃণার বাজারে ভালোবাসার দোকান ৷" অন্যদিকে দানিশ বলেন, “আমার মতো একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্যের যখন এই অবস্থা, তখন একজন সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হবে ! আমি আশা করব, আমি ন্যায়বিচার পাব ৷ স্পিকার তদন্ত করবেন, নইলে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমিও এই সংসদ ছেড়ে দেবার কথা ভাবছি ৷ কারণ এটা আর সহ্য করা যাচ্ছে না। এই কারণেই কি আমরা নির্বাচিত হয়েছি, এই জন্যই কি আমাদের পূর্বপুরুষরা স্বাধীনতার জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন ?"
তিনি আরও বলেন, "তারা (বিজেপি) শুধু আমাকে এবং আমার অনুসারীদের অপমান করেনি বরং তারা পুরো জাতিকে অপমান করেছে ৷ এখন দেখা যাক বিজেপি রমেশ বিধুরীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয় কি না ? তাঁকে পদোন্নতিও দেওয়া হতে পারে ৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে ৷ হয়ত এটা বিজেপি নেতাদের মধ্যে এমন বিবৃতি দেওয়ার প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে শুধু সংসদের বাইরে নয়, এমনকী সংসদের ভিতরেও ৷”
আরও পড়ুন: মহিলা সংরক্ষণ বিলে ওবিসিদের জন্য কোটা ও জাতিগণনা নিয়ে সরব হওয়ার কৌশল কংগ্রেসের
দানিশ আলি আরও বলেন, "সংসদে নির্বাচিত সংসদ সদস্যের জন্য প্রথমবারের মতো অশোভন ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। আমি লোকসভা স্পিকারের অফিসে আমার চিঠি পাঠিয়েছি ৷ আমি নিশ্চিত যে লোকসভার স্পিকার ঘটনাটি বিবেচনা করবেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। এটি প্রথমবার ঘটল যে একজন নির্বাচিত সাংসদের জন্য এই ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে ৷” লোকসভায় এদিন চন্দ্রযান-3 মিশন নিয়ে বিতর্ক চলাকালীন এই ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে, সমাজবাদী পার্টির সাংসদ এসটি হাসান বলেন, "বিধুরীর মন্তব্যে দেশের মুসলমানরা আহত হয়েছে।
সাধারণত এই ধরনের ভাষা মূলত মূর্খ এবং নিম্নরুচির লোকেরা ব্যবহার করে। সংসদের একটা মর্যাদা আছে, সেটাকে ধ্বংস করা হয়েছে ৷ কিন্তু স্পিকার এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেননি। ছোটখাটো কারণে লোক সাসপেন্ড হয় সংসদে কিন্তু তাঁকে (রমেশ বিধুরী) এখনও সাসপেন্ড করা হয়নি। আমরা, এদেশের মুসলমানরা এসব শুনে হতাশ ৷ আমরা কখনও ভাবিনি এদেশে এমন দিন আসবে যখন সংসদের ভিতরে মুসলমানদের প্রকাশ্যে অপমান করা হবে ৷”