নয়াদিল্লি, 5 সেপ্টেম্বর: জি20 শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশেষ নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রে রাষ্ট্রপতি ভবন দ্রৌপদী মুর্মুকে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ বলে উল্লেখ করেছে ৷ এই নিয়ে উচ্ছ্বসিত বিজেপি ৷ মঙ্গলবার দলের নেতারা এই নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশও করেছেন ৷ তাদের বক্তব্য, এই শব্দের ব্যবহার ভারতের সভ্যতার অগ্রগতির পরিচায়ক ৷ তাই এই নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন কেন্দ্রের শাসক দলের নেতারা ৷
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট অফ ভারত-এর বিষয়টি এ দিন প্রথম প্রকাশ্যে আনেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ ৷ তিনি অভিযোগ করেন, ভারত যে একটা বিভিন্ন রাজ্যের সমন্বয়ে তৈরি দেশ, কেন্দ্রের সরকার সেটাকে অমান্য় করার চেষ্টা করছে ৷ বিরোধীদের আরও অনেকে এই নিয়ে মোদি সরকার ও বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন ৷ বিরোধীরা ‘ইন্ডিয়া’ জোট তৈরি করেছে বলেই বিজেপি ভয় পেয়ে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলেও বিরোধীরা অভিযোগ করে ৷
কিন্তু বিজেপি বিরোধীদের সেই অভিযোগ খারিজ করে দেশের নাম ভারত করার পক্ষে সওয়াল করতে শুরু করেছে ৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান তাঁর আমন্ত্রণপত্র সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন ৷ সেখানে তিনি হ্যাশট্যাগ দিয়ে প্রেসিডেন্ট অফ ভারত কথাটি লিখেছেন ৷ সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীতের একটি লাইন পোস্ট করেছেন ৷ লিখেছেন, ‘‘জনগণমন অধিনায়ক জয় হে, ভারত ভাগ্য বিধাতা ৷’’ আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংও সোশাল মিডিয়ায় প্রেসিডেন্ট অফ ভারত-এর দেওয়া আমন্ত্রণের ছবি পোস্ট করেছেন ৷
আরও পড়ুন: দেশের নাম বদলে 'ভারত' রাখার জল্পনা, 'ইন্ডিয়া'র ব্র্যান্ডভ্যালু মনে করালেন থারুর
অন্যদিকে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘‘রিপাবলিক অফ ভারত ৷ খুশি ও গর্বিত যে আমাদের সভ্যতা এই অমৃতকালে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে ৷’’ বিরোধীদের অভিযোগ খারিজ করে তিনি লিখেছেন, ‘‘ভারত নামটা সংবিধানেই উল্লেখ করা হয়েছে ৷ এই নামেই আমাদের দেশকে কয়েক হাজার বছর ধরে মানুষ জানে ৷ আমাদের দেশ ভারত ছিল, ভারত রয়েছে এবং ভারত থাকবে ৷’’
তিনি এই ইস্যুতে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধিকেও কটাক্ষ করেন ৷ রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রার প্রসঙ্গ টানেন ৷ সেখানেই ভারত শব্দটা যে রয়েছে, সেটাও উল্লেখ করেন ৷ রাহুলকে ‘যুবরাজ’ বলেও তিনি কটাক্ষ করেন ৷ অন্যদিকে কেন্দ্রীয় রাজীব চন্দ্রশেখর বলেছেন, ‘‘আমাদের দেশ ভারত৷ আর এই নিয়ে কোনও দ্বিধা নেই ৷’’ এই ইস্যুতে কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, কংগ্রেসের তো সব বিষয় নিয়েই সমস্যা রয়েছে ৷
তাহলে কি আসন্ন বিশেষ অধিবেশনেই সংসদে দেশের নাম বদল করার প্রস্তাব পাশ করা হবে ? এই প্রশ্নও রাজীব চন্দ্রশেখরের কাছে করা হয় ৷ তিনি অবশ্য জল্পনার উপর নির্ভর করে তৈরি হওয়া কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে সম্মত হননি ৷ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘও এই নিয়ে বিরোধীদের নিশানা করেছেন ৷
তিনি বলেন, "ভারত শব্দটি নতুন নয় । এটি প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে । ভারত মাতা এবং বন্দে মাতরম আমাদের রক্তে রয়েছে এবং আপনার বিরোধিতায় কিছুই হবে না । ভারত শব্দটি সংবিধানে উল্লেখ আছে । নতুন খিলজি এবং নতুন মুঘল ভারতকে সরিয়ে দিতে চায় ৷"
সংবাদসংস্থা - পিটিআই
আরও পড়ুন: দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’ থেকে বদলে হবে ‘ভারত’ ! বিশেষ অধিবেশনে পাশ হতে পারে প্রস্তাব