দিল্লি, 30 মে : 2019-এর লোকসভা ভোটের প্রায় এক বছর আগের ঘটনা । 2018-র মে মাস । মোদি সরকার প্রথম ইনিংসের চার বছর পূর্তিতে বড় অনুষ্ঠান করার তোড়জোড় শুরু করেছে । কংগ্রেস এই দিনটাকে “বিশ্বাসঘাতক দিবস” হিসাবে পালন করে । সেদিন রাহুল গান্ধির ডাকে বেশ কয়েক জন বিরোধী নেতাও মোদি-শাহের সমালোচনায় এগিয়ে এসেছিলেন । কিন্তু লোকসভা ভোটে বিরোধীরা প্রায় চূড়ান্ত ব্যর্থ হয় । রেকর্ড আসন পেয়ে মোদি সরকার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে । এখন 2020, মে মাস । মোদি সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসের এক বছর পূর্ণ হল । মোদি সরকারের বর্ষপূর্তিতে কড়া সমালোচনা কংগ্রেসের।
2019-এর লোকসভা ভোটে বিপুল জয়ের পর মোদি শাহ জুটির প্রতি মানুষের আকাশচুম্বি প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল । এই এক বছর অত্যন্ত ঘটনাবহুল কাটল সবদিকেই । তিন তালাক রদ, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্ষদা তুলে নেওয়া এবং জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা,নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ সবই এক বছরে ঘটে গিয়েছে। প্রথম বছরেই ঐতিহাসিক অযোধ্যার রাম জন্মভূমি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে । তবে ২০২০ সাল শুরু হতেই বিপত্তি । দেশে কোরোনা সংক্রমণ ও লকডাউনকে ঘিরে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যা নজিরবিহীন । কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা কে সি বেণুগোপাল এই প্রসঙ্গে বলেন, এই এক’বছর হতাশা, বিপর্যয় এবং অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে দেশবাসীকে চলতে হয়েছে।” বেণু গোপাল কোরোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন ।
কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সূরযেওয়ালা নরেন্দ্র মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, গত ছয় বছরে মোদি সরকার দেশের মানুষের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন । দেশে সম্প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্ব ধুলোয় মিশে গিয়েছে সূরযেওয়ালা অভিযোগ করেন ।তাঁর কথায়, “মানুষের অতি প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান করেনি সরকার । সাধারণ মানুষের সমস্যা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই সরকারের মদতে সাম্প্রদায়িক সমস্যা আরও বেড়েছে ।” তাঁর অভিযোগ, মোদি সরকারের আর্থিক নীতির ফলে বড়লোকের সুবিধা হচ্ছে, আর গরিব মানুষ আরও গরিব হচ্ছে এই এক বছরেই ।
কে সি বেণুগোপাল কথায়’ “ দায়িত্বশীল বিরোধী হয়ে যখনই সরকারকে আমরা পরামর্শ দিতে চেয়েছি , তখনই তা পরামর্শ না ভেবে সরকার ভেবেছে সমালোচনা । আর সরকারের এই মনোভাবের ফলে দেশের যা ক্ষতি হওয়ার তা হচ্ছে। কোরোনাভাইরাস মোকাবিলায় পরিকল্পনাবিহীন লকডাউন করে দেশের অসংখ্য মানুষকে সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে এই সরকার। ”
বেণুগোপাল বলেন, পরিযায়ী শ্রমিক ও কৃষকদের দুর্দশার বিষয়ে সরকার "সম্পূর্ণ অসংবেদনশীল"। সূরযেওয়ালাও দাবি করেছেন, অবিলম্বে সংসদের ভার্চুয়াল অধিবেশন আহ্বান করা উচিত ।