ETV Bharat / bharat

WTO এবং ভুট্টার দামের অকাল মৃত্যু

দেশজুড়ে ভুট্টা চাষিরা দোলাচলে রয়েছেন । কারণ, কোরোনার জেরে লকডাউনের পর দেশে ভুট্টার দাম পড়ে গেছে । তার উপর বিদেশের বাজারে রমরমিয়ে চলেছে জেনেটিক্যালি মডিফায়েড তথা GM ভুট্টার ৷ এই ধরণের ভুট্টার দাম নন-GM ভুট্টার থেকে কম হয় ৷ তাই ভারতের ভুট্টা চাষিদের ক্রমাগত প্রতিযোগীতার মুখে পড়তে হচ্ছে ৷ বিষয়টি নিয়ে লিখছেন পলিসি অ্যান্ড আউটরিচ, ন্যাশনাল সিড অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার অধিকর্তা ইন্দ্রশেখর সিং ৷

author img

By

Published : Aug 7, 2020, 10:50 AM IST

ছবি
ছবি

WTO—র বাধ্যবাধকতার উল্লেখ করে সরকার পাঁচ লাখ মেট্রিন টন ভুট্টা এবং 10 হাজার মেট্রিক টন দুধ ও দুগ্ধজাত পণে্যর আমদানিতে অনুমতি দিয়েছে । দু’টি পণ্যই ট্যারিফ রেট কোটা স্কিমের আওতায় ১৫ শতাংশ রেয়াতি কাস্টমস রেটে আনা হচ্ছে । কিন্তু ভারতীয় কৃষকদের জন্য এই পদক্ষেপের তাৎপর্য কী তা আমাদের বুঝতে হবে ।

ভারত বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠন তথা WTO-র সদস্য ও তাদের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরকারী দেশ । এই চুক্তি হলো একটি বহুস্তরীয় চুক্তি , যার লক্ষ্য বিশ্বজুড়ে পুঁজিবাদী ‘মুক্ত বাণিজ্য’-র প্রচার করা । তারা এই কাজ করে বাণিজ্যে নানা ধরনের বিধিনিষেধ তুলে দিয়ে যেমন-সাধারণ শুল্ক, আমদানি শুল্ক ও ভর্তুকি প্রভৃতি তুলে দিয়ে । তাদের এই নীতি সত্ত্বেও বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ এবং ‘গ্লোবাল সাউথ’ নিজেদের দেশের কৃষকদের জন্য নানা ধরনের ছাড় দাবি করে কারণ, তাদের এবং উন্নত পশ্চিমী দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্যের উন্নতির অসাম্য অনেকটাই প্রকট । ছাড়ের দাবিতে সরব হওয়া এই দেশগুলির তালিকায় অগ্রণী ছিল ভারত । তবে ভারতের সঙ্গে আফ্রিকার কিছু দেশও ছিল । কিন্তু প্রতিবার আমেরিকার নেতৃত্বাধীন উন্নত দেশগুলি এই দাবির বিরোধিতা করেছে ।

যেখানে বিশ্বে মার্কিন কৃষকরাই সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি পান, সেখানেই অ্যামেরিকা চায় উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য যে যে কৃষিজাত পণ্যের শুল্কে ছাড় দেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করতে । তারা তৈরি করেছে ‘ট্যারিফ রেট কোটা স্কিম’ যার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলিও কৃষিজাত পণ্য বিক্রয়ের জন্য বাজার খুলতে পারবে, ওই পণে্য চাপানো আমদানি শুল্ক হ্রাস করে ৷ GATT-র 28 নম্বর ধারাকে সম্মান জানানোর উদে্যাগ গ্রহণ করে, দেশের বাজার খুলে দিয়ে ভারত সরকার, নতুন করে পণ্য আমদানির পক্ষে অনুমতি দিয়েছে । বর্তমানে ভারত ভুট্টার উপর 50 শতাংশ আমদানি শুল্ক রেখেছে এবং অন্যান্য খাদ্যশসে্যর উপর 40-60 শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছে । দেশের বাজারে যাতে খাদ্যশসে্যর অবাধ তথা কম দামে ঢেলে বিক্রি না হয় তা নিশ্চিত করতে ভারতের এই পদক্ষেপ ।

এই ভুট্টার বিষয়ে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখব, ভুট্টা চাষিদের পক্ষে এই সময় এর থেকে খারাপ কিছু হতে পারত না । রবিশস্যের মূল্য ইতিমধে্যই পড়ে যাচ্ছে, যেমনটা বিহারের চাষিরা জানিয়েছিলেন যে প্রতি একরে 20 হাজার টাকা করে দাম কমছে । ভুট্টার দামের পতনে অন্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত উৎপাদন, মজুত রাখার সুযোগ-সুবিধার অভাব প্রভৃতি । ‘ফল আর্মি ওয়ার্ম’ (FAW)—ভারতীয় উপমহাদেশে এই নতুন ফসল ধ্বংসকারী পতঙ্গের আর্বিভাবে ভুট্টা চাষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিহার, কর্নাটক ও তেলাঙ্গানাতেও এই পতঙ্গের আক্রমণের খবর মিলেছে । এই এলাকার ভুট্টা চাষিদের মধে্য ইতিমধে্যই তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে । কারণ, প্রচুর পরিমাণে কীটনাশক প্রয়োগ করেও তারা একে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না ।

দেশজুড়ে ভুট্টা চাষিরা দোলাচলে রয়েছেন । কারণ, কোরোনার জেরে লকডাউনের পর দেশে ভুট্টার দাম পড়ে গেছে । পোলট্রি সেক্টরে মুরগীদের খাদ্যের জোগানে 60 শতাংশই আসে ভুট্টা থেকে । আবার স্টার্চ তৈরি করতেও ভুট্টার বহুল ব্যবহার হয় । কোরোনার জেরে পোলট্রি সেক্টরে বড় ক্ষতি দেখা দিয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতেও এর প্রভাব কাটিয়ে এর চাহিদা যে আবার বাড়বে তার সম্ভাবনা অমিল ।

পরবর্তী চ্যালেঞ্জ হল, জিনগত সংস্কার হওয়া ভুট্টার (জেনেটিক্যালি মডিফায়েড তথা GM) আমদানির বিষয়টি । বিশ্বজুড়ে GM ভুট্টার দাম নন-GM ভুট্টা (যা ভারতে জন্মায়) থেকে কম । তাই 5 মিলিয়ন মেট্রিক টন GM ভুট্টা আমদানি করা সতি্য চ্যালেঞ্জ হবে । আর তা যদি সম্ভবও হয় তাহলে ভুট্টার দাম আরও পড়ে যাবে । কারণ, ব্রাজিল থেকে অ্যামেরিকা GM ভুট্টা চাষিরা প্রচুর ভর্তুকি পাবেন । তাঁদের সরকার কৃত্রিমভাবে ভুট্টা চাষের খরচ আরও কমিয়ে দেবে কৃষকদের জন্য নানাবিধ ছাড়ের ব্যবস্থা করে ।

কড়া বিধি নিষেধ না থাকায় ভারতকে GM ভুট্টার ভাণ্ডার করে তোলা সহজ টার্গেট । ভারতের ভুট্টা চাষিরা ইতিমধে্যই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে আছেন । তার মধে্য যদি বিদেশ থেকে ভুট্টা আমদানির মাধ্যমে নতুন ফসল ধ্বংসকারী পোকাও সঙ্গে চলে আসে তাহলে স্থানীয় স্তরে ভুট্টা উৎপাদন বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বে এবং ভারত বিদেশ থেকে আমদানি করা ভুট্টার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে ।

আমরা যদি সাম্প্রতিক খারিফ শস্য ফলনের বিন্যাস দেখি, তবে বোঝা যাবে, উত্তর ভারতের একটা বড় অংশ জুড়ে ভুট্টার চাষ হয় । এমনকী, এবার অনেক শাক-সবজি ও ফুল চাষি, নিজেদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভুট্টারও চাষ করেছেন । ভুট্টার ফলন হওয়া জমির পরিমাণও বেড়ে গেছে । যার অর্থ এই যে, অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য এবার ফের ভুট্টার দাম পড়বে । যদি আমাদের হিমঘরগুলি অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত বিদেশ থেকে আমদানি করা ভুট্টায় ভরতি থাকে তাহলে গ্রামীণ ভুট্টা চাষিদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা থাকবে না । আরও একটা জিনিস মনে রাখতে হবে যে, বর্তমানে ব্যবসায়ীদের জন্য ফসল মজুত করার সীমা তথা ‘স্টকিং লিমিট’ তুলে দেওয়া হয়েছে । আর তাই চাষিরা সরাসরি রপ্তানি দাতার কাছে শস্য বিক্রি করতে পারেন । এই সমস্ত পদক্ষেপ চাষিদের জন্য ক্ষতিকারক । কারণ, ভারতীয় ভুট্টা সবসময়ই GM ভুট্টার চেয়ে দামি । এই পরিস্থিতিতে ভারতের ভুট্টার বাজার দখলের জন্য বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়ীদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলবে । তাই ভারতের ভুট্টা চাষিরা যাতে MSP পান, সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে, যা তাদের কাছে চ্যালেঞ্জ । ভারতীয় ভুট্টা চাষিদের ভবিষ্যৎ আপাতত অন্ধকারাচ্ছন্ন মনে হচ্ছে কারণ তাঁরা কখনই কৃত্রিমভাবে কমানো বিদেশি ভুট্টার দামের সঙ্গে যুঝতে পারবে না । আগামী দিনগুলিতে আরও বেশি ভুট্টা বিদেশ থেকে আমদানি করার সরকারের সিদ্ধান্ত চাষিদের দূর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলবে ।

WTO—র বাধ্যবাধকতার উল্লেখ করে সরকার পাঁচ লাখ মেট্রিন টন ভুট্টা এবং 10 হাজার মেট্রিক টন দুধ ও দুগ্ধজাত পণে্যর আমদানিতে অনুমতি দিয়েছে । দু’টি পণ্যই ট্যারিফ রেট কোটা স্কিমের আওতায় ১৫ শতাংশ রেয়াতি কাস্টমস রেটে আনা হচ্ছে । কিন্তু ভারতীয় কৃষকদের জন্য এই পদক্ষেপের তাৎপর্য কী তা আমাদের বুঝতে হবে ।

ভারত বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠন তথা WTO-র সদস্য ও তাদের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরকারী দেশ । এই চুক্তি হলো একটি বহুস্তরীয় চুক্তি , যার লক্ষ্য বিশ্বজুড়ে পুঁজিবাদী ‘মুক্ত বাণিজ্য’-র প্রচার করা । তারা এই কাজ করে বাণিজ্যে নানা ধরনের বিধিনিষেধ তুলে দিয়ে যেমন-সাধারণ শুল্ক, আমদানি শুল্ক ও ভর্তুকি প্রভৃতি তুলে দিয়ে । তাদের এই নীতি সত্ত্বেও বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ এবং ‘গ্লোবাল সাউথ’ নিজেদের দেশের কৃষকদের জন্য নানা ধরনের ছাড় দাবি করে কারণ, তাদের এবং উন্নত পশ্চিমী দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্যের উন্নতির অসাম্য অনেকটাই প্রকট । ছাড়ের দাবিতে সরব হওয়া এই দেশগুলির তালিকায় অগ্রণী ছিল ভারত । তবে ভারতের সঙ্গে আফ্রিকার কিছু দেশও ছিল । কিন্তু প্রতিবার আমেরিকার নেতৃত্বাধীন উন্নত দেশগুলি এই দাবির বিরোধিতা করেছে ।

যেখানে বিশ্বে মার্কিন কৃষকরাই সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি পান, সেখানেই অ্যামেরিকা চায় উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য যে যে কৃষিজাত পণ্যের শুল্কে ছাড় দেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করতে । তারা তৈরি করেছে ‘ট্যারিফ রেট কোটা স্কিম’ যার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলিও কৃষিজাত পণ্য বিক্রয়ের জন্য বাজার খুলতে পারবে, ওই পণে্য চাপানো আমদানি শুল্ক হ্রাস করে ৷ GATT-র 28 নম্বর ধারাকে সম্মান জানানোর উদে্যাগ গ্রহণ করে, দেশের বাজার খুলে দিয়ে ভারত সরকার, নতুন করে পণ্য আমদানির পক্ষে অনুমতি দিয়েছে । বর্তমানে ভারত ভুট্টার উপর 50 শতাংশ আমদানি শুল্ক রেখেছে এবং অন্যান্য খাদ্যশসে্যর উপর 40-60 শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছে । দেশের বাজারে যাতে খাদ্যশসে্যর অবাধ তথা কম দামে ঢেলে বিক্রি না হয় তা নিশ্চিত করতে ভারতের এই পদক্ষেপ ।

এই ভুট্টার বিষয়ে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখব, ভুট্টা চাষিদের পক্ষে এই সময় এর থেকে খারাপ কিছু হতে পারত না । রবিশস্যের মূল্য ইতিমধে্যই পড়ে যাচ্ছে, যেমনটা বিহারের চাষিরা জানিয়েছিলেন যে প্রতি একরে 20 হাজার টাকা করে দাম কমছে । ভুট্টার দামের পতনে অন্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত উৎপাদন, মজুত রাখার সুযোগ-সুবিধার অভাব প্রভৃতি । ‘ফল আর্মি ওয়ার্ম’ (FAW)—ভারতীয় উপমহাদেশে এই নতুন ফসল ধ্বংসকারী পতঙ্গের আর্বিভাবে ভুট্টা চাষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিহার, কর্নাটক ও তেলাঙ্গানাতেও এই পতঙ্গের আক্রমণের খবর মিলেছে । এই এলাকার ভুট্টা চাষিদের মধে্য ইতিমধে্যই তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে । কারণ, প্রচুর পরিমাণে কীটনাশক প্রয়োগ করেও তারা একে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না ।

দেশজুড়ে ভুট্টা চাষিরা দোলাচলে রয়েছেন । কারণ, কোরোনার জেরে লকডাউনের পর দেশে ভুট্টার দাম পড়ে গেছে । পোলট্রি সেক্টরে মুরগীদের খাদ্যের জোগানে 60 শতাংশই আসে ভুট্টা থেকে । আবার স্টার্চ তৈরি করতেও ভুট্টার বহুল ব্যবহার হয় । কোরোনার জেরে পোলট্রি সেক্টরে বড় ক্ষতি দেখা দিয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতেও এর প্রভাব কাটিয়ে এর চাহিদা যে আবার বাড়বে তার সম্ভাবনা অমিল ।

পরবর্তী চ্যালেঞ্জ হল, জিনগত সংস্কার হওয়া ভুট্টার (জেনেটিক্যালি মডিফায়েড তথা GM) আমদানির বিষয়টি । বিশ্বজুড়ে GM ভুট্টার দাম নন-GM ভুট্টা (যা ভারতে জন্মায়) থেকে কম । তাই 5 মিলিয়ন মেট্রিক টন GM ভুট্টা আমদানি করা সতি্য চ্যালেঞ্জ হবে । আর তা যদি সম্ভবও হয় তাহলে ভুট্টার দাম আরও পড়ে যাবে । কারণ, ব্রাজিল থেকে অ্যামেরিকা GM ভুট্টা চাষিরা প্রচুর ভর্তুকি পাবেন । তাঁদের সরকার কৃত্রিমভাবে ভুট্টা চাষের খরচ আরও কমিয়ে দেবে কৃষকদের জন্য নানাবিধ ছাড়ের ব্যবস্থা করে ।

কড়া বিধি নিষেধ না থাকায় ভারতকে GM ভুট্টার ভাণ্ডার করে তোলা সহজ টার্গেট । ভারতের ভুট্টা চাষিরা ইতিমধে্যই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে আছেন । তার মধে্য যদি বিদেশ থেকে ভুট্টা আমদানির মাধ্যমে নতুন ফসল ধ্বংসকারী পোকাও সঙ্গে চলে আসে তাহলে স্থানীয় স্তরে ভুট্টা উৎপাদন বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বে এবং ভারত বিদেশ থেকে আমদানি করা ভুট্টার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে ।

আমরা যদি সাম্প্রতিক খারিফ শস্য ফলনের বিন্যাস দেখি, তবে বোঝা যাবে, উত্তর ভারতের একটা বড় অংশ জুড়ে ভুট্টার চাষ হয় । এমনকী, এবার অনেক শাক-সবজি ও ফুল চাষি, নিজেদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভুট্টারও চাষ করেছেন । ভুট্টার ফলন হওয়া জমির পরিমাণও বেড়ে গেছে । যার অর্থ এই যে, অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য এবার ফের ভুট্টার দাম পড়বে । যদি আমাদের হিমঘরগুলি অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত বিদেশ থেকে আমদানি করা ভুট্টায় ভরতি থাকে তাহলে গ্রামীণ ভুট্টা চাষিদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা থাকবে না । আরও একটা জিনিস মনে রাখতে হবে যে, বর্তমানে ব্যবসায়ীদের জন্য ফসল মজুত করার সীমা তথা ‘স্টকিং লিমিট’ তুলে দেওয়া হয়েছে । আর তাই চাষিরা সরাসরি রপ্তানি দাতার কাছে শস্য বিক্রি করতে পারেন । এই সমস্ত পদক্ষেপ চাষিদের জন্য ক্ষতিকারক । কারণ, ভারতীয় ভুট্টা সবসময়ই GM ভুট্টার চেয়ে দামি । এই পরিস্থিতিতে ভারতের ভুট্টার বাজার দখলের জন্য বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়ীদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলবে । তাই ভারতের ভুট্টা চাষিরা যাতে MSP পান, সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে, যা তাদের কাছে চ্যালেঞ্জ । ভারতীয় ভুট্টা চাষিদের ভবিষ্যৎ আপাতত অন্ধকারাচ্ছন্ন মনে হচ্ছে কারণ তাঁরা কখনই কৃত্রিমভাবে কমানো বিদেশি ভুট্টার দামের সঙ্গে যুঝতে পারবে না । আগামী দিনগুলিতে আরও বেশি ভুট্টা বিদেশ থেকে আমদানি করার সরকারের সিদ্ধান্ত চাষিদের দূর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.