জয়পুর, 25 জুলাই : রাজস্থানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি টালমাটাল ৷ এই অবস্থায় বিধানসভায় নিজেদের সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে মরিয়া কংগ্রেস ৷ কংগ্রেস শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধি গতকাল বলেন, ‘‘রাজ্যপালের উচিত বিধানসভার অধিবেশন ডাকা ৷’’ মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত বিধানসভার অধিবেশন যত দ্রুত সম্ভব ডাকার দাবি করেন ৷ তিনি চার ঘণ্টা রাজ্যপালের বাড়িতে বিক্ষোভ দেখান ৷ পালটা রাজস্থানের রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র জানিয়ে দেন, শুধু সংবিধান মেনে চলবেন তিনি ৷
কলরাজ মিশ্র গতকাল জানান, মুখ্যমন্ত্রী গেহলত বিধানসভার অধিবেশন ডাকার কোনও যুক্তি বা নির্দিষ্ট বিষয় উল্লেখ করেননি ৷ তাই অধিবেশন ডাকার আগে তিনি রাজ্য সরকারের থেকে কিছু বিষয়ের জবাব চান ৷ গতকাল রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি টুইটে লেখেন, ‘‘সংবিধান ও আইন মেনে দেশ পরিচালিত হয় ৷ সাধারণ মানুষের অনুমতিতে সরকার তৈরি হয় ও চলে ৷ BJP ষড়যন্ত্র করে রাজস্থান সরকারকে ফেলে দিতে চাইছে ৷ এটা রাজস্থানের আট কোটি মানুষের অপমান ৷ রাজ্যপালের উচিত বিধানসভার অধিবেশন ডাকা ৷’’
বিধানসভার অধিবেশন ডাকার আগে 21 দিনের নোটিস জারি করতে হয় বলে বিবৃতিতে জানান রাজ্যপাল ৷ পাশাপাশি তিনি জানান, ‘‘কোনদিন অধিবেশন ডাকা হবে তা নির্দিষ্ট করেনি গেহলত সরকার ৷ সব বিধায়ক যাতে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন, তা রাজ্য সরকারের দেখা উচিত ৷’’ রাজ্যপালের মতে, কোরোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে বিধানসভার অধিবেশন ডাকা প্রায় অসম্ভব ৷ গতকাল রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত ও তাঁর অনুগামী বিধায়করা রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রর বাড়িতে চার ঘণ্টার বেশি অবস্থান বিক্ষোভ করেন ৷ বিধানসভার অধিবেশন ডাকার জন্য তাঁরা চাপ দিতে থাকেন ৷ তার কিছু সময় আগেই সচিন পাইলট ও 18 জন বিধায়কের মামলায় স্থিতাবস্থা জারি করে রাজস্থান হাইকোর্ট ৷ ফলে সচিন শিবিরের বিরুদ্ধে এখন কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবেন না বিধানসভার অধ্যক্ষ ৷
গতকাল রাতে রাজ্যের মন্ত্রিসভার সদস্যরা প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন ৷ রাজ্যপাল মিশ্র বিধানসভা অধিবেশন ডাকার জন্য যে ছ’টি বিষয় উল্লেখ করেছেন, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয় ৷ বিধানসভার অধিবেশনে মূল আলোচ্য বিষয় ‘কোরোনা ভাইরাস ও অর্থনীতিতে তার প্রভাব’ হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ৷ এদিকে বিধানসভার অধ্যক্ষ সি পি যোশি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ৷ সোমবার তার শুনানি রয়েছে ৷ সব মিলিয়ে গেহলত সরকার নিজেদের সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে মরিয়া ৷ আস্থা ভোট হলে তাঁর সরকার পুনরায় ক্ষমতা দখল করবে বলে দাবি গেহলতের ৷ নিয়ম অনুযায়ী দল হুইপ জারি করলে বিধানসভায় তা মানতে বাধ্য থাকবেন কংগ্রেসের বিদ্রোহী নেতারা ৷ তা না হলে, তাঁদের বরখাস্ত করা হতে পারে ৷ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বিধায়করা নিজেদের দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলে তাঁদের বরখাস্ত করা যাবে ৷ কিন্তু বরখাস্তের পরও তাঁদের ভোট গণনা হবে ৷
রাজস্থান বিধানসভায় 200টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের 101টি আসন রয়েছে ৷ সচিন পাইলট শিবির দাবি করেছে, তাঁদের পক্ষে রয়েছেন 30 জন বিধায়ক ৷ যদিও তাঁরা 19 জনের প্রমাণ দেখাতে পেরেছেন ৷ অন্যদিকে BJP-র রয়েছে 72টি আসন ৷ অন্যান্য দল ও নির্দল প্রার্থীদের মিলিয়ে বিরোধীদের রয়েছে 97টি আসন ৷