দিল্লি, 15 সেপ্টেম্বর : ভারত-চিন যে সীমান্তরেখা রয়েছে, তা এখন বেজিং মানতে চাইছে না । তাই চিনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে সমস্যার এখনও কোনও সমাধান হচ্ছে না । সংসদের বাদল অধিবেশনে আজ এই কথা জানালেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং । তিনি আরও বলেন, “দুই দেশের সীমান্ত ইশুতে এই উপলব্ধিগত পার্থক্যের কারণেই সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে ।”
লাদাখে দুই দেশের সীমান্তরেখা অতিক্রম করে ভারতীয় ভূখণ্ডের দিকে ঢুকে আসার চেষ্টা করছে চিনের সেনা । সেই প্রসঙ্গেই আজ সংসদের বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে মুখ খুললেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী । বললেন, “1960-এর দশকে দুই দেশের সীমান্ত নিয়ে যে চুক্তি হয়েছিল, আমরা তা মেনে আসছি । কিন্তু চিন বর্তমানে তা মানতে চাইছে না । তাদের কথায়, সীমান্তরেখা নিয়ে দুই দেশের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে ।"
চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে প্যানগং লেক এবং লাদাখের বিভিন্ন অঞ্চলে চিনা সেনা বারবার সীমান্তরেখা লঙ্ঘন করার চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতিতে সংসদে রাজনাথ সিংয়ের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা । সীমান্ত নিয়ে এই সংঘাতের পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে জুন মাসে । 15 জুন ভারতের 20 জন জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষে । দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময়ে এমন ঘটনা এই প্রথম ।
আরও পড়ুন : হিমাচলের চিন সীমান্তে উচ্চ-সতর্কতা
রাজনাথ সিং বলেন, ভারত সার্বভৌমত্ব ইশু অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সবরকম পদক্ষেপ করার জন্য প্রস্তুত । সংসদভবনে রাজনাথ সিংয়ের এই বার্তা আদতে চিনকে সতর্ক করে দেওয়া হিসেবেই দেখছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ।
সম্প্রতি মস্কোয় চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন রাজনাথ সিং । সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "বৈঠকে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছি, তবে একইসঙ্গে স্পষ্ট করে দিয়েছি যে সার্বভৌমত্বের বিষয়টি ভারত অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখে।" প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “আমি এও স্পষ্ট করে দিয়েছি যে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই সমস্যাটি সমাধান করতে চাই । আমরা চাই চিনও আমাদের সঙ্গে সহমত হোক । একইসঙ্গে আমরা এটাও পরিষ্কার করে দিয়েছিলাম, যে আমরা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সবরকমভাবে চেষ্টা করব ।”
আরও পড়ুন : ভারত - চিন সেনা বৈঠকে মিলল না সমাধান
চিন একতরফাভাবে 1993 এবং 1996 সালে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি লঙ্ঘন করে আসছে বলেও জানান তিনি । তাঁর কথায়, “ভারতীয় সেনা চিনের সীমান্তরেখা লঙ্ঘনের চেষ্টা প্রতিহত করছে । ধৈর্য্য ও সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছে । আবার প্রয়োজনে সাহস ও বীরত্বের প্রমাণও দিতে জানে ।”
প্রসঙ্গত, সীমান্তে কী চলছে, তা স্পষ্টভাবে সংসদে জানানোর জন্য বারবার চাপ দেওয়া হচ্ছিল কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলির তরফে । তবে সরকারের থেকে পরিস্থিতির সংবেদনশীলতা বিচার করে এ-বিষয়ে আলোচনা না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।