হায়দরাবাদ, 11 অগাস্ট: কোরোনা পরিস্থিতির মধ্যে LIC গ্রাহকদের জন্য সুখবর । ভারতের সর্ববৃহৎ বিমা সংস্থা LIC গ্রাহকস্বার্থে নতুন একটি সুবিধা প্রকল্প এনেছে । এই সুবিধা অনুযায়ী আগামী দুই মাস গ্রাহকরা তাঁদের ল্যাপস হওয়া বা বন্ধ হওয়া বিমা ফের চালু করতে পারবেন নির্দিষ্ট কিছু শর্তে ।
LIC বর্তমানে একটি বিশেষ রিভাইভাল ক্যাম্পেন শুরু করেছে । 10 অগাস্ট 2020 থেকে 9 অক্টোবর দুইমাস ব্যাপী এই ক্যাম্পেন চলবে । কিছু নির্দিষ্ট প্ল্যান এই ক্যাম্পেনের আওয়তাধীন । সেই বিমাগুলিই এই প্রকল্পের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত যেগুলির প্রিমিয়াম নির্দিষ্ট তারিখের পর থেকে শুরু হয়ে পাঁচ বছর পর্যন্ত দেওয়া হয়নি । কিন্তু পাঁচ বছরের অধিক সময় ধরে যদি কোনও পলিসির প্রিমিয়াম না দেওয়া হয়ে থাকে তবে তা এই প্রকল্পের আওতায় পড়বে না ।
কখন একটি জীবন বিমা পলিসি বন্ধ হয়ে যায়?
যদি কোনও বিমা ধারক নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে ধার্য প্রিমিয়ম দিতে ব্যর্থ হন অথবা অনুগ্রহকালের মধ্যেও না দিতে পারেন তখন তাঁর পলিসিটি ল্যাপস হিসেব বিবেচিত হয় বা বন্ধ হয়ে যায় । এছাড়া তাঁর বিমার সুবিধাগুলির থেকেও তিনি বঞ্চিত হন ।
LIC বিমার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় বা অনুগ্রহকাল কী?
অনেক সময় দেখা যায় বিমার প্রিমিয়াম নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে জমা দেওয়া গ্রাহকের পক্ষে সম্ভব হয়নি । তখনই গ্রাহকের সুবিধার্থে বিমা জমা দেওয়ার দিন কিছুদিন বাড়িয়ে দেওয়া হয় । কিন্তু যদি বিমাধারক সেই বাড়তি সময়ের মধ্যে প্রিমিয়ম জমা দিতে না পারেন তখন সেই বিমাটি বন্ধ বা ল্যাপস হয়ে যায় ।
প্রিমিয়ম জমা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে । এক্ষেত্রে যাঁদের মাসিক প্রিমিয়ম জমা দিতে হয় তাঁরা অতিরিক্ত সময়ের পরেও আরও 15 দিন বাড়তি সময় পাবেন ।
বর্তমানে কোন কোন পলিসিগুলির বিশেষ পুনর্জীবন সুবিধায় আওতায় এনেছে LIC ?
LIC-এর তরফে জানানো হয়েছে মূলত যে বিমাগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে রয়েছে অথবা বিমা চালু রাখার জন্য নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও প্রিমিয়ম জমা পড়েনি সেগুলিকে এর সুবিধার আওতাধীন করা হয়েছে । তবে এক্ষেত্রে শর্তাবলী রয়েছে । বিমাধারককে এক্ষেত্রে পাঁচ বছরের কম সময়ে প্রথম না দেওয়া প্রিমিয়মের টাকা মিটিয়ে দিতে হবে ।
বিমাধারক কীভাবে তাঁর বন্ধ হয়ে বিমা প্রকল্প পুনরুদ্ধার করতে পারবেন?
পলিসিটি যদি আবারও বিমাধারক চালু করতে চান তবে তাঁকে নির্দিষ্ট সুদ সমেত ও নতুন নীতি অনুযায়ী প্রদত্ত সময়কালের মধ্যে প্রিমিয়ম দিতে হবে । বিমা পুনরুদ্ধারকরণে বেশকয়েকটি নীতি রয়েছে । বিমাধারক সেগুলির মধ্যে যে কোনও একটি নীতি নির্বাচন করতে পারেন । নীতিগুলির মধ্যে রয়েছে সাধারণ পুনরুদ্ধার (অর্ডিনারি রিভাইভাল), স্পেশাল রিভাইভাল, কিস্তির মাধ্যমে পুনরুদ্ধার (রিভাইভাল বাই ইন্সটলমেন্ট), ঋণ ও পুনরুদ্ধার (লোন-কাম-রিভাইভাল) ইত্যাদি । সব নীতিগুলিই নির্ভর করছে বিমাধারকের আর্থিক ক্ষমতার উপর যে তিনি বাকি থাকা টাকা একেবারে দিয়ে দিতে পারবেন নাকি কিস্তিতে ৷
বিমা পুনরুদ্ধারে সঠিক উপায় কী?
বিমা পুনরুদ্ধারে বিমাধারকের উচিত LIC এজেন্টা বা উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করা ৷ এছাড়াও LIC-র নিজেস্ব ওয়েবসাইট থেকে চাইলে বিমাধারকেরা বিমা পুনরুদ্ধার ফর্ম ডাউনলোড করতে পারেন ৷ তারপর ফর্মটি পূরণ করে বিমাধারাক LIC-র যেই ব্রাঞ্চ থেকে বিমাটি গ্রহণ করেছেন সেই ব্রাঞ্চে পুনরুদ্ধার ফর্মটি জমা করতে হবে ৷ সেই সঙ্গে বাকি থাকা টাকা প্রয়োজনে দেরি হওয়ার জন্য বাড়তি জরিমানা নগদ বা চেকের মাধ্যমে দিতে হতে পাড়ে ৷
বর্তমানে বিমা পুনরুজ্জীবন প্রকল্পে LIC-এর তরফে কী কী ছাড় দেওয়া হয়েছে ?
LIC-র তরফে জানানো হয়েছে প্যানডেমিকের এই সময়কালে স্বাস্থ্য খাতে বাড়তি কিছু ছাড় দেওয়া সংস্থার পক্ষে সম্ভব নয় । তবে বিমার বাকি থাকা মোট প্রিমিয়ামের উপর নির্ভর করে 1,500-2,500 টাকা পর্যন্ত লেট ফি-তে ছাড় মিলবে বলে জানিয়েছে সংস্থা । যে সমস্ত প্রকল্পে ঝুঁকি বেশি যেমন, স্বাস্থ্য বিমা, ট্রাম অ্যাসুরেন্সের মতো আরও বেশ কয়েকটি বিমার ক্ষেত্রে মিলবে না এই ছাড় ৷
কেন আপনার ল্যাপসড পলিসি বা বন্ধ হয়ে যাওয়া পলিসি আবার চালু করবেন?
পুরানো বন্ধ হয়ে যাওয়া পলিসি পুনরুদ্ধার করা না একই সুবিধায় যুক্ত নতুন পলিসি কেনা উচিত তা বিবেচনা করা উচিত বিমাধারকের ৷বিমাধারকের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নতুন পলিসির প্রিমিয়ামও বৃদ্ধি হতে পারে ৷ সেই সঙ্গে নতুন স্বাস্থ্য বিমা কেনার ক্ষেত্রেও নতুন করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন ৷ সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের অবস্থা নির্ণয় করা হয় ৷ যা আপনার পলিসির প্রিমিয়াম বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে বাড়াতে পারে ।