ETV Bharat / bharat

মস্তিকে আঘাত, প্রস্রাবে সমস্যা - Urinary

মস্তিষ্কে দু’টি ভাগ রয়েছে, একটি হল সেটি যা মূত্রথলিকে, মূত্র সঞ্চিত হওয়ার সময় সংযত রাখতে সাহায্য করে এবং দ্বিতীয়টি মূত্র নিঃসরণের সময় মূত্রথলিটিকে সংকুচিত হতে সাহায্য করে । স্বাভাবিক মূত্রত্যাগ নিশ্চিত করতে এই দু’য়ের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় সাধন হওয়া খুব জরুরি।

মস্তিকে আঘাতে প্রস্রাবে সমস্যা
মস্তিকে আঘাতে প্রস্রাবে সমস্যা
author img

By

Published : Sep 2, 2020, 6:04 PM IST

মূত্রত্যাগ একটি অতিজরুরি শারীরিক প্রক্রিয়া এবং এর জন্য শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের তরফে অভিনব সমন্বয় সাধনের প্রয়োজন হয় । শৈশবে অনেকেই আত্মীয়স্বজনদের কোলে মূত্রত্যাগ করেছে (যদিও বর্তমানে ডায়াপার এসে যাওয়ায় সেই মজার অভিজ্ঞতা থেকে অনেকেই বঞ্চিত) ৷ কিন্তু যত আমরা বড় হয়েছি, আমাদের মস্তিষ্ক ক্রমশ এই অভ্যাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখিয়েছে । টয়লেট ট্রেনিংয়ের কলাকৌশল রপ্ত করাতে সামাজিক নিয়মকানুন বড় ভূমিকা পালন করে । দ্বিতীয়ত, বয়স বাড়ার পর আমরা বুঝতে পেরেছি, একজনের প্রস্রাবে ভেজা জামাকাপড় অন্য কেউ পরিষ্কার করতে গেলে নাক সিঁটকোতে বাধ্য । কিন্তু বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যে, মাথায় আঘাত পেলে, মূত্রত্যাগের প্রক্রিয়া, মূত্রের বেগ নিয়ন্ত্রণ এবং নিক্ষেপের উপর প্রভাব পড়ে এবং তা আক্রান্ত এবং কেয়ারগিভার, দু’পক্ষের জন্যই বিড়ম্বনাদায়ক অভিজ্ঞতা হয় । সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যা সামাজিক স্তরে নানা ধরনের জটিলতাও সৃষ্টি করতে পারে ।

ETV ভারত সুখীভব এই বিষয়ে কথা বলেছে সিনিয়র ইউরোলজিস্ট এবং অ্যান্ড্রোলজিস্ট, গোয়ার মারগাঁওয়ের রয়্যাল হসপিটালের ডিরেক্টর অফ রেনাল সার্ভিসেস, MS, DNB, UROLOGY, MNAMS, FICS ডা. শৈলেশ কামাতের সঙ্গে ।

আমাদের মস্তিষ্ক কীভাবে মূত্রত্যাগকে নিয়ন্ত্রণ করে?

মূত্রত্যাগ চক্রের দু’টি স্তর আছে।

প্রথম স্তরটি হল স্টোরেজ তথা সঞ্চয় স্তর আর দ্বিতীয় হল ভয়েডিং তথা নিক্ষেপ স্তর ।

মস্তিষ্কে দু’টি ভাগ রয়েছে, একটি হল সেটি যা মূত্রথলিকে, মূত্র সঞ্চিত হওয়ার সময় সংযত রাখতে সাহায্য করে এবং দ্বিতীয়টি মূত্র নিঃসরণের সময় মূত্রথলিটিকে সংকুচিত হতে সাহায্য করে ।

স্বাভাবিক মূত্রত্যাগ নিশ্চিত করতে এই দু’য়ের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় সাধন হওয়া খুব জরুরি। স্ট্রোক কী মূত্রত্যাগের উপর কোনও প্রভাব ফেলে?

হ্যাঁ । যখন কারও স্ট্রোক হয়, তখন যে ভাগটি মূত্রথলিতে মূত্রের সঞ্চিত হওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় । ফলে মূত্রথলি সঞ্চয় দশাতেই সংকুচিত হতে শুরু করে । এতে যে সমস্যার সূত্রপাত হয়, তাকে চিকিৎসার পরিভাষায় ‘অ্যাক্টিভ ব্ল্যাডার’ বলা হয় । এতে আক্রান্তের মূত্র নিঃসরণের প্রয়োজনীয়তা এবং হার, দুইই বাড়ে ।

কখনও কখনও এই পরিস্থিতি এতটাই ভয়ংকর হয়ে ওঠে যে অনেকে বেগ সামলাতে না পেরে পোশাক ভিজিয়ে ফেলেন ।

এর চিকিৎসা কী?

প্রথমত, যাদের এই উপসর্গ দেখা দিয়েছে, তাদের আগে মস্তিষ্কের CT বা MRI scan করিয়ে নিতে হবে । আর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মূত্রথলির আল্ট্রাসাউন্ড করাতে হবে । এরপর চিকিৎসকরা তাঁকে এমন কিছু ওষুধপত্র দেবেন, যা মূত্রথলি নিয়ন্ত্রণ করতে কাজে লাগে । এদের ‘ব্লাডার সিডেটিভস’ বলা হয় । সাধারণত এই রোগীদের মলত্যাগের সময়ও সমস্যা হয়, এরও দ্রুত নিরাময় প্রয়োজন ।

মস্তিষ্কে আঘাত লাগলে কী যৌনক্রিয়ায় প্রভাব পড়ে?

হ্যাঁ পড়ে । মস্তিষ্কের কোন অংশে আঘাত লাগছে, তার উপর নির্ভর করে যা যা হতে পারে, তা হল,

১. যৌন তাড়ণা কমে যেতে পারে।

২. নার্ভ ড্যামেজ হয়ে ইরেকটাইল ডিসফাংশন হতে পারে । যদিও এই সব ক্ষেত্রে কোনও অ্যান্ড্রোলজিস্টকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া সবচেয়ে ভাল কারণ প্রতিটি ঘটনা একে অপরের থেকে আলাদা এবং প্রতে্যকটির নিরাময়ের জন্য নির্দিষ্ট ওষুধ তথা অস্ত্রোপচার রয়েছে ।

এই সব পরিস্থিতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে আক্রান্তকে যথাযথভাবে সাহায্য করা যায় এবং তাদের পরিবারবর্গও এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা পদ্ধতি ও ফলাফলের সঙ্গে সড়গড় হয়ে যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বাড়ালে রোগী ও কেয়ারগিভাররা উপকৃত হবেন। কারণ তারা রোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারবেন এবং সফলভাবে তা মোকাবিলাও করতে পারবেন।

আরও তথে্যর জন্য যোগাযোগ করতে পারেন ডা. শৈলেশ কামাতের সঙ্গে, এই ওয়েবসাইটে shaileshkamat@yahoo.com-এ ৷

মূত্রত্যাগ একটি অতিজরুরি শারীরিক প্রক্রিয়া এবং এর জন্য শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের তরফে অভিনব সমন্বয় সাধনের প্রয়োজন হয় । শৈশবে অনেকেই আত্মীয়স্বজনদের কোলে মূত্রত্যাগ করেছে (যদিও বর্তমানে ডায়াপার এসে যাওয়ায় সেই মজার অভিজ্ঞতা থেকে অনেকেই বঞ্চিত) ৷ কিন্তু যত আমরা বড় হয়েছি, আমাদের মস্তিষ্ক ক্রমশ এই অভ্যাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখিয়েছে । টয়লেট ট্রেনিংয়ের কলাকৌশল রপ্ত করাতে সামাজিক নিয়মকানুন বড় ভূমিকা পালন করে । দ্বিতীয়ত, বয়স বাড়ার পর আমরা বুঝতে পেরেছি, একজনের প্রস্রাবে ভেজা জামাকাপড় অন্য কেউ পরিষ্কার করতে গেলে নাক সিঁটকোতে বাধ্য । কিন্তু বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যে, মাথায় আঘাত পেলে, মূত্রত্যাগের প্রক্রিয়া, মূত্রের বেগ নিয়ন্ত্রণ এবং নিক্ষেপের উপর প্রভাব পড়ে এবং তা আক্রান্ত এবং কেয়ারগিভার, দু’পক্ষের জন্যই বিড়ম্বনাদায়ক অভিজ্ঞতা হয় । সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যা সামাজিক স্তরে নানা ধরনের জটিলতাও সৃষ্টি করতে পারে ।

ETV ভারত সুখীভব এই বিষয়ে কথা বলেছে সিনিয়র ইউরোলজিস্ট এবং অ্যান্ড্রোলজিস্ট, গোয়ার মারগাঁওয়ের রয়্যাল হসপিটালের ডিরেক্টর অফ রেনাল সার্ভিসেস, MS, DNB, UROLOGY, MNAMS, FICS ডা. শৈলেশ কামাতের সঙ্গে ।

আমাদের মস্তিষ্ক কীভাবে মূত্রত্যাগকে নিয়ন্ত্রণ করে?

মূত্রত্যাগ চক্রের দু’টি স্তর আছে।

প্রথম স্তরটি হল স্টোরেজ তথা সঞ্চয় স্তর আর দ্বিতীয় হল ভয়েডিং তথা নিক্ষেপ স্তর ।

মস্তিষ্কে দু’টি ভাগ রয়েছে, একটি হল সেটি যা মূত্রথলিকে, মূত্র সঞ্চিত হওয়ার সময় সংযত রাখতে সাহায্য করে এবং দ্বিতীয়টি মূত্র নিঃসরণের সময় মূত্রথলিটিকে সংকুচিত হতে সাহায্য করে ।

স্বাভাবিক মূত্রত্যাগ নিশ্চিত করতে এই দু’য়ের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় সাধন হওয়া খুব জরুরি। স্ট্রোক কী মূত্রত্যাগের উপর কোনও প্রভাব ফেলে?

হ্যাঁ । যখন কারও স্ট্রোক হয়, তখন যে ভাগটি মূত্রথলিতে মূত্রের সঞ্চিত হওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় । ফলে মূত্রথলি সঞ্চয় দশাতেই সংকুচিত হতে শুরু করে । এতে যে সমস্যার সূত্রপাত হয়, তাকে চিকিৎসার পরিভাষায় ‘অ্যাক্টিভ ব্ল্যাডার’ বলা হয় । এতে আক্রান্তের মূত্র নিঃসরণের প্রয়োজনীয়তা এবং হার, দুইই বাড়ে ।

কখনও কখনও এই পরিস্থিতি এতটাই ভয়ংকর হয়ে ওঠে যে অনেকে বেগ সামলাতে না পেরে পোশাক ভিজিয়ে ফেলেন ।

এর চিকিৎসা কী?

প্রথমত, যাদের এই উপসর্গ দেখা দিয়েছে, তাদের আগে মস্তিষ্কের CT বা MRI scan করিয়ে নিতে হবে । আর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মূত্রথলির আল্ট্রাসাউন্ড করাতে হবে । এরপর চিকিৎসকরা তাঁকে এমন কিছু ওষুধপত্র দেবেন, যা মূত্রথলি নিয়ন্ত্রণ করতে কাজে লাগে । এদের ‘ব্লাডার সিডেটিভস’ বলা হয় । সাধারণত এই রোগীদের মলত্যাগের সময়ও সমস্যা হয়, এরও দ্রুত নিরাময় প্রয়োজন ।

মস্তিষ্কে আঘাত লাগলে কী যৌনক্রিয়ায় প্রভাব পড়ে?

হ্যাঁ পড়ে । মস্তিষ্কের কোন অংশে আঘাত লাগছে, তার উপর নির্ভর করে যা যা হতে পারে, তা হল,

১. যৌন তাড়ণা কমে যেতে পারে।

২. নার্ভ ড্যামেজ হয়ে ইরেকটাইল ডিসফাংশন হতে পারে । যদিও এই সব ক্ষেত্রে কোনও অ্যান্ড্রোলজিস্টকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া সবচেয়ে ভাল কারণ প্রতিটি ঘটনা একে অপরের থেকে আলাদা এবং প্রতে্যকটির নিরাময়ের জন্য নির্দিষ্ট ওষুধ তথা অস্ত্রোপচার রয়েছে ।

এই সব পরিস্থিতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে আক্রান্তকে যথাযথভাবে সাহায্য করা যায় এবং তাদের পরিবারবর্গও এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা পদ্ধতি ও ফলাফলের সঙ্গে সড়গড় হয়ে যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বাড়ালে রোগী ও কেয়ারগিভাররা উপকৃত হবেন। কারণ তারা রোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারবেন এবং সফলভাবে তা মোকাবিলাও করতে পারবেন।

আরও তথে্যর জন্য যোগাযোগ করতে পারেন ডা. শৈলেশ কামাতের সঙ্গে, এই ওয়েবসাইটে shaileshkamat@yahoo.com-এ ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.