জার্মানির সীমান্ত । পোল্যান্ডের উত্তর পশ্চিম প্রান্তের গ্রিফিনো শহর । সেখানেই প্রকৃতির সেই আশ্চর্য উদাহরণ । এক বাঁকানো গাছের বন বা ক্রুকড ফরেস্ট । বনে ঢোকার আগে রয়েছে এক সাইন বোর্ড । স্থানীয় ভাষাতেই লেখা সেই বনের আশ্চর্য কাহিনী । প্রায় 100টা গাছ রয়েছে সেখানে । কিন্তু বেশিরভাগ গাছই গোড়া থেকে 90 ডিগ্রি বেঁকে আকাশের দিকে উঠে গিয়েছে । ওদের উচ্চতা প্রায় 50 ফুটের কাছাকাছি । এই বনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেক ইতিহাস । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময় থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কাল পেরিয়ে জার্মানির একাধিক ইতিহাসের সাক্ষী এই বন । গাছগুলোর পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে মনে হবে কোনও পরাবাস্তববাদী দৃশ্য, যার অংশ আমরাও । বাস্তব ও কল্পনার মধ্যবর্তী বিভাজনরেখা বিলীন হয়ে যায় আমাদের অজান্তেই ...
1930 । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ক্ষতে তখনও প্রলেপ পড়েনি । রোপণ করা হয় গাছগুলি । কিন্তু তারপর এইরকমভাবে বৃদ্ধি কেন হল ? তারও রয়েছে হাজারও ব্যাখ্যা । কোনও হাইপোথিসিসে দাবি, গাছগুলো রোপণ করার পর প্রবল তুষারপাত হয় ৷ যার ফলেই গাছগুলি স্বাভাবিক আকারে বৃদ্ধি পায়নি ৷ অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, যে মাটিতে গাছগুলি বেড়ে উঠেছে । সেখানে মহাকর্ষ টান বেশি । তাই গাছগুলির আকৃতি এমন ৷ আবার অনেকে বলেন, স্থানীয় কৃষকরা প্রয়োজনীয় কাঠের জন্য গাছের এইরকম আকার দেন । যে কাঠে বানানো যাবে আসবাব বা নৌকা । গাছগুলি তাদের সাধারণ আকারে ফিরে আসতে পারত । কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেই প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয় ।
গাছকে বিশেষ আকার দেওয়া বিশ্বে বিভিন্ন স্থানেই হয় । ক্যালিফোর্নিয়ার 'ট্রি সার্কাস'ও বিশ্বে বিখ্যাত । পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ । তবে 'ক্রুকড ফরেস্ট' বা 'বাঁকানো গাছের বন'-এর তথ্যভিত্তিক সঠিক কারণ আজ পর্যন্ত অজানা ৷ কোনও কারণেই সিলমোহর দেয়নি স্থানীয় বনবিভাগ ৷ পরাবাস্তব এই বনের রহস্য এখনও অধরা বিশ্বে...