জম্মু, 5 অগাস্ট : একবছর আগে আজকের দিনে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল 370 ধারা । তখন সরকার দাবি করেছিল, এই পদক্ষেপ সংশ্লিষ্ট এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করবে । 370 প্রত্যাহারের বিরোধিতা করেছিলেন জম্মু -কাশ্মীরের প্রশাসনের একাংশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা । গৃহবন্দী থাকতে হয়েছিল সেখানকার কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীকে । তবে সরকারের এই পদক্ষেপকে সমর্থনও করেছিলেন অনেকে । কিন্তু বছর পেরিয়ে তাঁদের বক্তব্যেই আজ অন্যকথা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ।
এবিষয়ে মহিন্দর সিং নামে এক স্থানীয় যুবক বলেন, "370 ও 35 A ধারা প্রত্যাহারের পর এখানে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সংকট নেমে এসেছে । BJP সরকার জম্মুবাসীর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এই পদক্ষেপ তাদের জীবনে সমৃদ্ধি আনবে । কিন্তু এখন আরও খারাপ পরিস্থিতি । বেকারত্ব বেড়েছে । উজ্জ্বল ভবিষ্যতের লোভনীয় স্বপ্নগুলি শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি হয়েই থেকে গেছে ।"
স্থানীয় দলগুলি ও তাদের কর্মীরাও এনিয়ে বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন । এবিষয়ে ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রদেশ সভাপতি বসির আহমেদ বলেন, "গতবছর 5 অগাস্টের পদক্ষেপ জম্মু ও কাশ্মীরকে ধ্বংস করে দিয়েছে । বেকারত্ব বেড়েছে । ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ । তারা এখানকার সাংবিধানিতক গণতন্ত্রকেও ধ্বংস করে দিয়েছে । বিগত সত্তর বছরে আমরা যা অর্জন করেছিলাম, তা আমরা হারিয়ে ফেলেছি ।"
যাঁরা সরকারের এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছিলেন, তাঁরাও এই একবছরে যথেষ্ট হতাশ হয়েছেন । এবিষয়ে এক স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা অঙ্কুর শর্মা বলেন, " গতবছরের 5 অগাস্ট আমরা ভারত সরকারের এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছিলাম । দিনটি রীতিমতো উদযাপন করেছি । আমাদের প্রত্যাশা ছিল, এরপর জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ তাঁদের রাজনৈতিক ও উন্নয়নমূলক অধিকার পাবে । একবছর কেটে গেছে । কিন্তু এখনও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি । নিজেদের প্রতারিত মনে হয় ।"
একই সুর শিবসেনা নেতা মণীশ সাহনির গলায় । তিনি বলেন, "BJP আমাদের আমাদের স্বপ্ন ও আশাকে ধ্বংস করে দিয়েছে । "
এক্ষেত্রে 2020-21 অর্থবর্ষের বাজেটের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে । এবছর জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য 30,757 কোটি এবং লাদাখের জন্য 5,958 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে । অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ক্ষেত্রে এই পরিমাণ বরাদ্দ খুবই কম । তাঁদের কথায় এর থেকে যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়, তা হল সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলির সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিতে এখনও সেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে না সরকার।