জয়পুর, 14 জুলাই : সত্যকে উত্যক্ত করা যায় ৷ কিন্তু হারানো যায় না ৷ রাজস্থানের উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদ এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে বরখাস্তের পর প্রথমবার মুখ খুললেন সচিন পাইলট ৷ টুইটে মাত্র একটি বাক্যে দু’দিনের মৌনতা ভেঙে প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজস্থান সরকারের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী ৷ পাশাপাশি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে নিজের মন্ত্রীর পরিচয় সরিয়ে দেন তিনি ৷
-
सत्य को परेशान किया जा सकता है पराजित नहीं।
— Sachin Pilot (@SachinPilot) July 14, 2020 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">सत्य को परेशान किया जा सकता है पराजित नहीं।
— Sachin Pilot (@SachinPilot) July 14, 2020सत्य को परेशान किया जा सकता है पराजित नहीं।
— Sachin Pilot (@SachinPilot) July 14, 2020
মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের সঙ্গে মতান্তর ৷ সেই থেকে রাজস্থানে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আনলেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলট ৷ দ্বন্দ্ব এই পর্যায়ে পৌঁছয় যে, শনিবার নিজের অনুগামী বিধায়কদের নিয়ে দিল্লি উড়ে যান সচিন ৷ সংকটে পড়ে যায় কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান সরকার ৷ গোটা দেশের নজর তখন রাজস্থানের রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে ৷ কংগ্রেস হাইকম্যান্ড সোনিয়া গান্ধি, সাংসদ রাহুল গান্ধি ও দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব ঘন ঘন ফোন করতে থাকেন সচিনকে ৷ কথা বলার চেষ্টা করেন ৷ বুঝিয়ে, রাগ ভাঙিয়ে ঘরের ছেলেকে ঘরে ফেরানোর চেষ্টায় ত্রুটি রাখেননি কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ কিন্তু অভিমানী সচিন তখন একরোখা ৷ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি অশোক গেহলটকে দেখতে চান না ৷ তাঁর ও বাকি বিদ্রোহী বিধায়কদের অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেসকে সমর্থন করা মানে অশোক গেহলটের অনুগামী হয়ে থাকা ৷’’ যা তাদের পক্ষে অসম্ভব ৷ সংবাদমাধ্যমে সচিন এও বলেন, ‘‘কেউ নিজের ঘর ছাড়তে চায় না ৷ কিন্তু এই ধরনের অপমান সহ্য করা যায় না ৷ আমার বিধায়ক ও সমর্থকরা ব্যথিত এবং আমি তাঁদের কথা শুনব ৷’’
সচিনের বিদ্রোহে টালমাটাল রাজস্থান সরকার ৷ পরিস্থিতি বুঝে জয়পুরে ছুটে যান রণদীপ সুরজওয়ালার মতো শীর্ষ কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ দলের সাংসদ কে সি বেণুগোপাল তখনও চেষ্টা করে যাচ্ছেন সচিনকে বুঝিয়ে ঘরে ফেরানোর ৷ কিন্তু নাছোড়বান্দা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ৷ তিনি তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় ৷ রাজনৈতিক মহল উদগ্রীব হয়ে রয়েছে, এই বুঝি রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার পড়ে যায় ৷ অবস্থার গুরুত্ব বুঝে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট দাবি করেন, তাঁর সমর্থনে রয়েছেন 109জন বিধায়ক ৷ পালটা সচিন দাবি করেন, তাঁকে 25 জন বিধায়ক সমর্থন জানিয়েছেন ৷ গতকাল অশোক গেহলটের বাড়িতে বৈঠক করেন তাঁর অনুগামী বিধায়করা ৷ এদিকে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজওয়ালা সাংবাদিক বৈঠক থেকে সচিনকে ফেরার ইঙ্গিত দেন ৷ বলেন, ‘‘দলের দরজা সব সময় খোলা রয়েছে ৷ কারওর কোনও সমস্যা হলে আমাদের সঙ্গে কথা বলুন ৷ পরিবারের সদস্যদের যদি কোনও সমস্যা হয়, তাহলে পরিবারের মধ্যে তা মিটিয়ে নিতে হয় ৷’’
আজ ফের মুখ্যমন্ত্রী গেহলটের উপস্থিতিতে জয়পুরের ফেয়ারমন্ট হোটেলে কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের বৈঠক করা হয় ৷ সেখানে 102 জন বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন ৷ গতকালের বৈঠকে সচিনকে সরানোর জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ৷ আজ ফের এক প্রস্তাব ওঠে ৷ এবারে আর সময়ের অপেক্ষা নয় ৷ সচিনকে বরখাস্তের প্রস্তাবে 102 জন বিধায়ক একযোগে সমর্থন জানান ৷ প্রস্তাব পাশ হয়ে যায় ৷ সেইমতো সচিনকে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয় ৷ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির পদ কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর থেকে ৷ সচিনের পাশাপাশি মন্ত্রিত্ব হারান বিদ্রোহী বিধায়কদের দু’জন ৷ বিশ্বেন্দ্র সিং ও রমেশ মিনাকে মন্ত্রী পদ থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয় রাজস্থান সরকার ৷ সচিনের জায়গায় গোবিন্দ সিং দোতাসরাকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ঘোষণা করা হয় ৷
সচিন পাইলটকে সরানোর প্রসঙ্গে রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেছিলেন, ‘‘নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছেন সচিন ৷ তা সফল হতে দেওয়া যায় না ৷’’ রণদীপের পথে হেঁটে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেন, ‘‘গত ছ’মাস ধরে ষড়যন্ত্র চলছিল ৷ আমরা সবাই একথা জানতাম ৷ বাধ্য হয়ে দলকে কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে ৷ আমাদের কিছু সঙ্গীকে নিয়ে সচিন দিল্লিতে গেছিলেন ৷ কিন্তু এক্ষেত্রে BJP-র মনোবাঞ্ছনা পূর্ণ হয়নি ৷ কর্নাটকে একভাবে সরকারে এসেছে BJP ৷ ওরা প্রকাশ্যে এই খেলা খেলছিল ৷ সাধারণ মানুষের উপর এর প্রভাব পড়ছিল ৷ পাঁচ বছরের জন্য তারা সরকারকে নির্বাচিত করেছে ৷ কিন্তু মাত্র দেড় বছরে যদি সেই সরকার পড়ে যায়, তাহলে মানুষ বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে ৷’’ BJP-কে কটাক্ষ করে গেহলট জানান, ‘‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে, কেন্দ্রে এমন এক সরকার এসেছে, যারা টাকার লোভ দেখিয়ে বিধায়কদের দলে টানছে ৷ দেশে ঘোড়া কেনা-বেচার রাজনীতি চলছে ৷ 70 বছর হয়ে গেছে ৷ কিন্তু গণতন্ত্র শেষ হয়ে গেছে ৷ ইন্দিরা গান্ধি, রাজীব গান্ধিও নির্বাচনে হেরে গেছিলেন ৷ কিন্তু তাঁরা এভাবে সরকারে আসতেন না ৷ পাকিস্তানে যা হয় না, আমাদের দেশে তা হচ্ছে ৷’’