দিল্লি, 14 অগাস্ট : জল্পনার অবসান । BJP-তে যোগ দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় । আজ দিল্লিতে BJP-র সদর দপ্তরে তাঁরা যোগ দেন ।
সম্পর্কটা তলানিতে ঠেকেছিল আগেই । রাজনীতি ছেড়ে শোভনের 'বন্ধুত্ব' (বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে) মানতে পারেননি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । একাধিকবার সতর্ক করেছিলেন । এরমধ্যে আবার স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ডিভোর্সের মামলা চলছে শোভনের । রত্নাও একাধিকবার মমতার সঙ্গে দেখা করেন । শোভনের উপর ক্ষোভ বাড়তে থাকে তৃণমূল সুপ্রিমোর । একবার তো প্রশ্ন করে বসেন, "তুই কী করবি ঠিক কর ।"
দিদির 'অপমান' মানতে পারেননি শোভন । মন্ত্রী ও মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেন । দলের সঙ্গে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন করেন । মাঝে জল্পনা চলছিল খুব শিগগিরই BJP-তে যাচ্ছেন শোভন । কেটে যায় লোকসভা নির্বাচন । তখনও শোভন কোনও দলে যাননি । আশা বাড়ে তৃণমূলের । মমতার দূত হিসেবে তাঁর কাছে যান ফিরহাদ । বন্ধুর সঙ্গে খোশমেজাজে আড্ডা দিলেও তৃণমূলে ফেরার ব্যাপারে রা কাড়েননি শোভন । এরপর তাঁর কাছে রতন বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠান মমতা । চিঁড়ে ভেজেনি । সম্প্রতি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় । দেখা করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও । কিন্তু, পার্থবাবু তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি । শোভনের মতিগতি বুঝতে আসরে নামেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় । স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা বলেন । যদিও গতকালই স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে ইস্তফা দেন শোভন ।
চিত্রটা পরিষ্কার হয়ে গেছিল তখনই । সন্ধ্যায় দিল্লি চলে যান শোভন-বৈশাখি । আজ বিকেলেই করেন যোগদান । যোগদান পর্ব মুকুল রায় সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, "শোভন দলে আসায় BJP-র শক্তি বাড়ল । শোভন-বৈশাখি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সব কা সাথ সব কা বিশ্বাসে আকৃষ্ট হয়েছেন । তৃণমূলের ক্ষমতায় আসার পিছনে শোভনের ভূমিকা ছিল । আর এবার তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী দলের তকমা হারাবে । 30টিও আসন পাবে না । কলকাতা পৌরনিগম নির্বাচনেও তৃণমূল হারবে ।"
স্বাভাবিকভাবে কৌতুহল বাড়ছিল শোভন কী বলেন । মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন কি না । নাম করে আক্রমণ অবশ্য করেননি । তবে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলেছেন । বললেন, "পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় প্রশ্ন তুলেছিলাম, কেন বিরোধীদের লড়তে দেওয়া হচ্ছে না । মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হচ্ছে না ।" এরপর তাঁর সংযোজন, BJP যেভাবে দেশ চালাচ্ছে তাতে নেতিবাচক রাজনীতির কোনও জায়গা নেই ।