পেশায় গণিতের শিক্ষক । কিন্তু তিনি পরিচিত অন্য কারণে । এলাকায় যত্রতত্র পড়ে থাকা প্লাস্টিক সংগ্রহ করে তা আলাদাভাবে ব্যবহার করেন । ফেলে দেওয়া চিপস, বিস্কুটের প্যাকেট দিয়ে তৈরি করেন বই-খাতার কভার । এই অভিযান শুধু এখানেই থেমে নেই । গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কাজও দিয়েছেন তিনি । এখান থেকে যে অল্প টাকা কর্মীরা পেয়েছেন তা দিয়ে আবার গরিব পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থাও করা হয়েছে ।
লোমাস ধুঙ্গেল । সিকিমের এই গণিতের শিক্ষক একসময় এলাকায় যত্রতত্র পড়ে থাকা প্লাস্টিক সংগ্রহ করে তাকে যথাযথ কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করেন । 2013 সাল । সেখান থেকেই এই ধারণার পথচলা শুরু । কিন্তু প্রথম দু'বছর এই উদ্যোগে কেউ সাড়া দেয়নি । পরের দিকে নিজের স্কুলের কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়ে আশপাশের এলাকা, রাস্তাঘাটে পড়ে থাকা বিস্কুটের প্যাকেট, চিপসের প্যাকেট সংগ্রহ করতে শুরু করেন । আর সেগুলি দিয়ে স্কুলের ছেলে-মেয়েদের পড়ার বই-খাতার কভার তৈরি শুরু করেন । শিক্ষকের এই উদ্যোগে পাশে দাঁড়ান অভিভাবকরা । সেই থেকে কাজ চলছে । লোমাস ধুঙ্গেল জানান, বছর দুয়েকের মধ্যে 85 হাজার প্যাকেট সংগ্রহ করে প্রায় হাজার আটেক বই-খাতার কভার তৈরি হয় ।
তাঁর এই প্রকল্পের নাম ছিল হারিয়ো মাখা-সিকিম এগেইনস্ট পলিউশন । 2015 থেকে জোরকদমে কাজ শুরু হয় । পরের দিকে এলাকার আশপাশের সরকারি, বেসরকারি স্কুল ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিও এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হয় । প্রথমবার পাশের গ্রাম শিংগবেলের এক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে এই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন লোমাস । তারপর আজমবাড়ি, উড়ান, স্মারিকা, চাঁদনি ও উজ্জ্বল নামে পাঁচটি গ্রুপ কাজ শুরু করে । স্বেচ্ছায় প্রায় 300 জন স্থানীয় যোগ দেন এই কাজে । লোমাস ধুঙ্গেল বলেন, এই প্রকল্প থেকে শেষ যা আয় হয়েছে, তা দিয়ে মোট সাতজনকে NIOS, IGNOU -তে গ্র্যাজুয়েশনের জন্য ভরতি করা হয়েছে ।
এখনও নিরন্তর কাজ করে চলেছেন সিকিমের এই গণিত শিক্ষক । লক্ষ্য- প্লাস্টিক দূরে সরিয়ে আলাদাভাবে ব্যবহার করে আশপাশের এলাকাকে তার কাঙ্ক্ষিত রূপ দেওয়া ।