দিল্লি, 5 সেপ্টেম্বর : চিনা সংস্থা পরিচালিত 118টি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন নিষিদ্ধ করেছে ভারত ৷ সেই সিদ্ধান্তের সমালোচনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রসঙ্গ টেনে বেজিংয়ের যুক্তি, সাহিত্যিক রবীন্দ্রানাথ ঠাকুর এবং যোগচর্চা চিনে খুব জনপ্রিয় ৷ তাহলে যখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চিনের কাছে উদ্বেগের নয়, ভারতের কাছে PUBG কেন ঝুঁকিপূর্ণ ৷
অ্যাপ্লিকেশন নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে চিনের বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয়, ভারতে 118টি অ্যাপ্লিকেশন নিষিদ্ধ করার পেছনে কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছে না চিন ৷ সেই সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ, যোগের প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়, চিনা নাগরিকদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার জনপ্রিয়তা অথবা যোগের অনুমোদনকে চিন কখনই "অনুপ্রবেশ" বা "ঝুঁকিপূর্ণ" বলে মনে করে না ৷
বুধবার ভারতের তথ্য ও সম্প্রসারণ মন্ত্রকের তরফে তথ্য সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয় টেনসেন্ট হোলডিং লিমিটেড সহ চিনা সংস্থা পরিচালিত মোট 118টি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন নিষিদ্ধ করেছে ভারত ৷ যে তালিকার মধ্যে আছে জনপ্রিয় মোবাইলের গেম PUBG-র ৷
ভারতের ইলেকট্রনিকস এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "এই সমস্ত অ্যাপ্লিকেশনগুলি গোপনীয়ভাবে তথ্য সংগ্রহ করে এবং ভাগ করে ৷ ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্যের সঙ্গে আপস করে যা রাষ্ট্রের সুরক্ষার জন্য মারাত্মক হুমকির রূপ নিতে পারে ৷"
লাদাখ সীমান্তে ভারত-চিনের মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি নতুন করে সৃষ্টি হওয়ার প্রেক্ষাপটে 29 জুন প্রথম দফায় 59টি চিনা অ্যাপ্লিকেশন নিষিদ্ধ করে ভারত ৷ এরপরই চিনা বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফে ভারতের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করা হয় ৷
চিনা বাণিজ্য মন্ত্রকের মুখপাত্র গাও ফেঙ একটি বিবৃতিতে জানান, "ভারতের পদক্ষেপ চিনা বিনিয়োগকারী সংস্থার ও পরিষেবা প্রদানকারীদের আইনি স্বার্থে আঘাত করেছে ৷ চিনের তরফে ভারতকে ভুল সংশোধন করার জন্য বলা হয়েছে ৷" গাও ফেঙ আরও বলেন, চিনা সংস্থাগুলির উপর "বৈষম্যমূলক বিধিনিষেধ" জারি করে ভারত জাতীয় সুরক্ষার অপব্যবহার করেছে ৷
এরপরই গতকাল মস্কোর মেট্রোপোল হোটেলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনেরাল ওয়েই ফেংহের বৈঠক হয় ৷ তারপর আজ শি জিনপিংয়ের সরকার একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, "চিন-ভারত সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ি ভারত । চিন এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও রাজি নয় । চিনের ভূখণ্ডকে বাঁচাতে আমাদের সেনা সব রকমভাবে তৈরি রয়েছে ।" চিনা সরকারের এই বিবৃতির পালটা জবাব দিতে পিছপা হয়নি ভারত ৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রক পালটা টুইট করে জানায়, "ভারত নিজের অবস্থান থেকে সরছে না । চিনের আগ্রাসী মনোভাবের সামনে মাথা নোয়ানোর প্রশ্নই নেই । সীমান্তে ভারতীয় ভূখণ্ড রক্ষার জন্য ভারতীয় জওয়ানরাও বদ্ধপরিকর ।"
প্রতিরক্ষামন্ত্রক আরও বলে, "আশা করি চিন দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও প্রোটোকল অনুসারে প্যাংগং লেক ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলের সমস্ত অস্থিরতা মেটানোর জন্য ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করবে । ভারত সব সময় সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করে । একই সঙ্গে ভারত ভূখণ্ডকে রক্ষা করতেও কোনও আপস করে না ।"