দিল্লি, 7 ফেব্রুয়ারি : শাহিনবাগে অবস্থান সভা থেকে প্রতিবাদকারীদের সরানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে যে আবেদন জমা পড়েছিল নির্বাচনের পরই তার শুনানি হবে । 8 ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন । আদালতের রায়ের প্রভাব নির্বাচনে যাতে না পড়ে সেই জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে শীর্ষ আদালতের তরফে আজ জানানো হয় । নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে শাহিনবাগে আন্দোলনরত কয়েকশো মানুষকে সরানোর জন্য একজন আইনজীবী এবং দিল্লির এক প্রাক্তন BJP বিধায়ক সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন ।
আবেদনের শুনানি কেন নির্বাচনের পরেই হবে এর প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করেন আবেদনকারীরা । উত্তরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এস কে কউল কৌতূক করে বলেন, "ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়েই পড়ল ৷ এই জন্যই আমরা মামলার শুনানি স্থগিত রাখছি ।"
বিচারপতি এস কে কউল এবং বিচারপতি কে এম জোসেফ-র ডিভিশন বেঞ্চে এই আবেদনের শুনানি হয় । মামলার শুনানিতে স্থগিত রেখে আবেদনকারীদের প্রশ্নের জবাবে ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হয়, "এই জন্যই আমরা সোমবার আসতে বলছি । কেন রায় নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে ? আমরা সমস্যা বুঝেছি ৷ এবং আমরা দেখছি কীভাবে এর সমাধান করা যায় । আমরা সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করব ।"
যদিও BJP নেতা নন্দ কিশোরের তরফে শীর্ষ আদালতে যে আবেদন করা হয় তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, জনসমক্ষে যে আন্দোলন এবং অবস্থান করা হচ্ছে তাতে নির্দিষ্ট কিছু সীমারেখা বেঁধে দিক আদালত । উদাহরণ স্বরূপ শাহিনবাগের উল্লেখ করা হয়েছিল । শাহিনবাগের উদাহরণ রেখে আবেদনে বলা হয়, আন্দোলনকারীদের হঠকারী পদক্ষেপের জন্য রীতিমতো নাজেহাল হচ্ছে আইন-প্রশাসন । পাশাপাশি দক্ষিণ দিল্লি এবং নয়ডার যোগসূত্রকারী রাস্তা বন্ধ থাকার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে । সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ ।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে শাহিনবাগে প্রায় দুই মাস ধরে প্রতিবাদ করছেন কয়েকশো মানুষ । শীতের রাতেও তাঁরা খোলা আকাশের নিচে বসে প্রতিবাদ করছেন । কখনও চলছে গান । কখনও উঠছে আজ়াদির স্লোগান । দিল্লির নির্বাচন প্রচারে শাহিনবাগকেই বারবার হাতিয়ার বানিয়েছেন BJP নেতারা । অনুরাগ ঠাকুর তাঁর ভোট প্রচারে এসে বলেছেন, প্রতিবাদকারীদের গুলি করে মারা হোক । শনিবার দিল্লিতে ভোট প্রচারে এসে যোগী আদিত্যনাথ শাহিনবাগকে নিশানা করেই কার্যত আক্রমণ করেছিলেন কেজরিওয়ালকে । বলেছিলেন, তাঁরা সন্ত্রাসবাদীদের গুলি খাওয়ায় , বিরিয়ানি নয় । বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং দাবি করেছিলেন, শাহিনবাগ এলাকা আত্মঘাতী বোমারুদের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে । যারা রাজধানীতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে ।