ETV Bharat / bharat

স্কুল যখন উৎকর্ষকেন্দ্র - centers of excellence

শিক্ষার পরিবেশকে আরও মনোরম করে তুলতে হবে । পড়ুয়াদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের আরও আগ্রহী করে তুলতে হবে । এক্ষেত্রে স্কুলগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। তাই এবার স্কুলগুলির সংস্কারে পদক্ষেপ করছে CBSE ।

ছবি
ছবি
author img

By

Published : Feb 25, 2020, 9:39 AM IST

দিল্লি, 25 ফেব্রুয়ারি : শিক্ষকতায় অত্যন্ত ধৈর্য্য এবং দায়িত্ববোধের প্রয়োজন। স্কুলের পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করতে তুলতে এবং গুণগত মান বাড়াতে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (CBSE) তাদের অনুমোদিত সমস্ত স্কুলগুলির মধ্যে মানোন্নয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে । বোর্ড নির্দেশ দিয়েছে, স্কুলগুলিকে শিক্ষাকেন্দ্র এবং শারীরিক ও মানসিক সমৃদ্ধির স্থান হিসেবে তৈরি করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শিক্ষাক্ষেত্রে কাঙ্খিত সাফল্য পেতে গেলে, পড়ুয়াদের মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকতেই হবে। হোমওয়ার্ক, গণিত বা বিজ্ঞানের প্রজেক্ট তাদের ওপর ক্রমাগত চাপ তৈরি করে চলেছে। তবে এবিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই, মনোরম শিক্ষার পরিবেশ ক্লাসরুমকে আরও সুন্দর করে তুলতে পারে । এক্ষেত্রে, CBSE-র পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে।

দুশ্চিন্তা আর মানসিক চাপের চিহ্নমাত্র না রেখে, স্কুলগুলিকে সার্বিক শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে, শিক্ষকদের জন্য একটি আচরণবিধি তৈরি করে দিয়েছে CBSE। শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন পড়ুয়াদের সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করেন । তাদের সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলেন। শিক্ষকদের বলা হয়েছে, তাঁরা যেন পড়ুয়াদের ধ্যান করতে উৎসাহ দেন, সবসময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে বারণ করেন এবং পড়ুয়াদের মনসংযোগ বাড়ে এমন কাজকর্মে তাদের সামিল করেন। যে সমস্ত পড়ুয়ারা পড়াশোনায় ভালো এবং স্বাস্থ্যকর চিন্তাভাবনা করে, তারা তাদের পরিবারেও বদল আনতে পারে। তারা বাড়িতে আনন্দে থাকবে এবং নতুন উদ্যমে স্কুলে আসবে। পড়ুয়াদের মানসিক অস্থিরতার পিছনে রয়েছে তাদের বাড়ি এবং স্কুলে যথাযথ শিক্ষার পরিবেশের অভাব। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ে পড়ুয়াদের উপর থেকে চাপ কমাতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি দিল্লিতে 'পরীক্ষা পে চর্চা' নামে একটি অনুষ্ঠান করেন। দুহাজারেরও বেশি পড়ুয়া, অভিভাবক এবং শিক্ষকরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। কী করে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, সেটা এই অনুষ্ঠানে বুঝিয়ে বলেন প্রধানমন্ত্রী। এখানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের একটি অংশ উল্লেখ করা যেতে পারে । তিনি বলছেন, প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, কিন্তু প্রযুক্তির দাসে পরিণত হলে চলবে না।

অ্যামেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের হুঁশিয়ারি, কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য সংকটের একটা দিক হচ্ছে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব। মানসিক চাপে থাকা পড়ুয়ারা প্রায়ই গুরুতর অসুখ বা স্থূলত্বের শিকার হয়। পড়ুয়াদের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যাগুলির দিকে নজর রাখতে উন্নত দেশগুলিতে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। ভারতীয় পড়ুয়াদের ঝুঁকির মুখে দাঁড় করাচ্ছে ক্রমশ বদলাতে থাকা জীবনশৈলী। মাত্রাতিরিক্ত ভেজাল খাবার খেয়ে তারা তাদের শারীরিক এবং মানসিক স্থিতিশীলতা হারাচ্ছে।গত কয়েকমাসে এমন বহু ঘটনা রয়েছে, যেখানে সামান্য কারণে কোনও না কোনও পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছে। CBSE সমস্ত স্কুলকে নির্দেশ দিয়েছে, যে পাঠ্যক্রমে যোগাসন, খেলাধুলো এবং শিল্পচর্চাকে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। শিক্ষার স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তুলতে পাঁচটি নীতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। CBSE বলছে, খেলাধুলোকে পাঠ্যক্রমে বাধ্যতামূলক করা । তার উল্লেখও রয়েছে গাইডলাইনের মধ্যে।

পড়ুয়াদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে সাহায্য করা স্কুলগুলির দায়িত্ব । কিন্তু দিশা হারালে তারাই জাতির সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বুনোট ধ্বংস করে দিতে পারে। একজন পড়ুয়ার সার্বিক উন্নতির জন্য স্কুল একা দায়ি নয়। বাড়ির পরিবেশও ছাত্রছাত্রীদের ব্যক্তিত্বের নির্মাণে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আজকের মনস্তত্ত্ববিদরা মনে করেন প্রকৃত শিক্ষার অর্থ হল, সর্বোৎকৃষ্ট মানবিক সম্পর্ক তৈরি করার ক্ষমতা। পঠনপাঠনের সময় নানা কারণে ভুগতে হয় পড়ুয়াদের। প্রয়োজনীয় জ্ঞান বা দক্ষতা অর্জন করতে না পেরে অনেক পড়ুয়াই স্কুল বা কলেজ ছেড়ে দেয়। তেলেগুভাষী রাজ্যগুলি চাপমুক্ত শিক্ষাব্যবস্থার লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছে। শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতির খোঁজে গবেষণা চালাচ্ছে তেলাঙ্গানা সরকার।

পড়ানোর ক্ষেত্রে খেলনার ব্যবহার ও নানা সৃজনশীল পদ্ধতির উপর জোর দিচ্ছেন অন্ধ্রপ্রদেশের শিক্ষকরা। এই শিক্ষাবর্ষ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এই অভিনব পদ্ধতিগুলো প্রয়োগ করা হবে। শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারে অভিভাবকদের সহযোগিতাও প্রয়োজন। যদি একজন শিশুর বাড়ির পরিবেশ মনোরম হয়, যথাযথ নিরাপত্তা থাকে, যেখানে শুরু থেকেই তার মধ্যে মূল্যবোধের সঞ্চার হয়, তাহলে বড় হয়ে সে এক অনন্য নাগরিকে পরিণত হবে।

দিল্লি, 25 ফেব্রুয়ারি : শিক্ষকতায় অত্যন্ত ধৈর্য্য এবং দায়িত্ববোধের প্রয়োজন। স্কুলের পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করতে তুলতে এবং গুণগত মান বাড়াতে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (CBSE) তাদের অনুমোদিত সমস্ত স্কুলগুলির মধ্যে মানোন্নয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে । বোর্ড নির্দেশ দিয়েছে, স্কুলগুলিকে শিক্ষাকেন্দ্র এবং শারীরিক ও মানসিক সমৃদ্ধির স্থান হিসেবে তৈরি করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শিক্ষাক্ষেত্রে কাঙ্খিত সাফল্য পেতে গেলে, পড়ুয়াদের মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকতেই হবে। হোমওয়ার্ক, গণিত বা বিজ্ঞানের প্রজেক্ট তাদের ওপর ক্রমাগত চাপ তৈরি করে চলেছে। তবে এবিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই, মনোরম শিক্ষার পরিবেশ ক্লাসরুমকে আরও সুন্দর করে তুলতে পারে । এক্ষেত্রে, CBSE-র পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে।

দুশ্চিন্তা আর মানসিক চাপের চিহ্নমাত্র না রেখে, স্কুলগুলিকে সার্বিক শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে, শিক্ষকদের জন্য একটি আচরণবিধি তৈরি করে দিয়েছে CBSE। শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন পড়ুয়াদের সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করেন । তাদের সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলেন। শিক্ষকদের বলা হয়েছে, তাঁরা যেন পড়ুয়াদের ধ্যান করতে উৎসাহ দেন, সবসময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে বারণ করেন এবং পড়ুয়াদের মনসংযোগ বাড়ে এমন কাজকর্মে তাদের সামিল করেন। যে সমস্ত পড়ুয়ারা পড়াশোনায় ভালো এবং স্বাস্থ্যকর চিন্তাভাবনা করে, তারা তাদের পরিবারেও বদল আনতে পারে। তারা বাড়িতে আনন্দে থাকবে এবং নতুন উদ্যমে স্কুলে আসবে। পড়ুয়াদের মানসিক অস্থিরতার পিছনে রয়েছে তাদের বাড়ি এবং স্কুলে যথাযথ শিক্ষার পরিবেশের অভাব। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ে পড়ুয়াদের উপর থেকে চাপ কমাতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি দিল্লিতে 'পরীক্ষা পে চর্চা' নামে একটি অনুষ্ঠান করেন। দুহাজারেরও বেশি পড়ুয়া, অভিভাবক এবং শিক্ষকরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। কী করে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, সেটা এই অনুষ্ঠানে বুঝিয়ে বলেন প্রধানমন্ত্রী। এখানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের একটি অংশ উল্লেখ করা যেতে পারে । তিনি বলছেন, প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, কিন্তু প্রযুক্তির দাসে পরিণত হলে চলবে না।

অ্যামেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের হুঁশিয়ারি, কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য সংকটের একটা দিক হচ্ছে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব। মানসিক চাপে থাকা পড়ুয়ারা প্রায়ই গুরুতর অসুখ বা স্থূলত্বের শিকার হয়। পড়ুয়াদের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যাগুলির দিকে নজর রাখতে উন্নত দেশগুলিতে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। ভারতীয় পড়ুয়াদের ঝুঁকির মুখে দাঁড় করাচ্ছে ক্রমশ বদলাতে থাকা জীবনশৈলী। মাত্রাতিরিক্ত ভেজাল খাবার খেয়ে তারা তাদের শারীরিক এবং মানসিক স্থিতিশীলতা হারাচ্ছে।গত কয়েকমাসে এমন বহু ঘটনা রয়েছে, যেখানে সামান্য কারণে কোনও না কোনও পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছে। CBSE সমস্ত স্কুলকে নির্দেশ দিয়েছে, যে পাঠ্যক্রমে যোগাসন, খেলাধুলো এবং শিল্পচর্চাকে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। শিক্ষার স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তুলতে পাঁচটি নীতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। CBSE বলছে, খেলাধুলোকে পাঠ্যক্রমে বাধ্যতামূলক করা । তার উল্লেখও রয়েছে গাইডলাইনের মধ্যে।

পড়ুয়াদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে সাহায্য করা স্কুলগুলির দায়িত্ব । কিন্তু দিশা হারালে তারাই জাতির সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বুনোট ধ্বংস করে দিতে পারে। একজন পড়ুয়ার সার্বিক উন্নতির জন্য স্কুল একা দায়ি নয়। বাড়ির পরিবেশও ছাত্রছাত্রীদের ব্যক্তিত্বের নির্মাণে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আজকের মনস্তত্ত্ববিদরা মনে করেন প্রকৃত শিক্ষার অর্থ হল, সর্বোৎকৃষ্ট মানবিক সম্পর্ক তৈরি করার ক্ষমতা। পঠনপাঠনের সময় নানা কারণে ভুগতে হয় পড়ুয়াদের। প্রয়োজনীয় জ্ঞান বা দক্ষতা অর্জন করতে না পেরে অনেক পড়ুয়াই স্কুল বা কলেজ ছেড়ে দেয়। তেলেগুভাষী রাজ্যগুলি চাপমুক্ত শিক্ষাব্যবস্থার লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছে। শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতির খোঁজে গবেষণা চালাচ্ছে তেলাঙ্গানা সরকার।

পড়ানোর ক্ষেত্রে খেলনার ব্যবহার ও নানা সৃজনশীল পদ্ধতির উপর জোর দিচ্ছেন অন্ধ্রপ্রদেশের শিক্ষকরা। এই শিক্ষাবর্ষ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এই অভিনব পদ্ধতিগুলো প্রয়োগ করা হবে। শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারে অভিভাবকদের সহযোগিতাও প্রয়োজন। যদি একজন শিশুর বাড়ির পরিবেশ মনোরম হয়, যথাযথ নিরাপত্তা থাকে, যেখানে শুরু থেকেই তার মধ্যে মূল্যবোধের সঞ্চার হয়, তাহলে বড় হয়ে সে এক অনন্য নাগরিকে পরিণত হবে।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.