আহমেদাবাদ, 16 মে : যেকোনও বিয়ের অনুষ্ঠানে সে যেতে ভালোবাসে । আর নাচেও ভালো । তাই গ্রামের কোনও বিয়ের অনুষ্ঠান হলেই তার ডাক পড়ে । হইচই-আনন্দে সকলকে মাতিয়ে রাখতে তার জুড়ি নেই । কিন্তু, মনে একটা ব্যথা ছিল । ইচ্ছা হত, নিজের বিয়ের অনুষ্ঠানেও যদি আনন্দ করতে পারতাম । তবে সেটা সম্ভব ছিল না । কারণ, তার মতো বিশেষ ভাবে সক্ষমের জন্য কনে পাওয়া যে দুষ্কর । তবে, ইচ্ছাপূরণে ত্রুটি রাখেননি পরিবারের সদস্যরা । কনে ছাড়াই বিয়ে হল বছর সাতাশের জয় বারতের । উৎসবে মাতল গোটা গ্রাম ।
গুজরাতের হিম্মতনগরের চামপলানার গ্রাম । সরকারি বাসের কনডাক্টর বিষ্ণু বারতের চার সন্তান । বড় ছেলে অজয় ছোটো থেকেই বিশেষ ভাবে সক্ষম । তাকে বিশেষভাবে সক্ষমদের স্কুলে ভরতি করা হয় । কিন্তু, পরিবারের অবস্থা স্বচ্ছল না হওয়ায় ছাড়িয়ে দেওয়া হয় স্কুল থেকে । যদিও অজয় ছোটো থেকেই খুব বুদ্ধিমান । বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু গুণ আয়ত্ব করে ফেলে সে । ভালো নাচতে পারে । হইচই, আনন্দ, মজা করে সবাইকে মাতিয়ে রাখতে পারে । গ্রামের বিয়ের অনুষ্ঠান হলেই ডাক পড়ে অজয়ের ।
তবে মনে একটি দুঃখ ছিল, সকলের বিয়েতে আনন্দ করি, নিজের বিয়েতেও যদি তা করা যেত । কিন্তু, বাধ সেধেছিল কনে খোঁজা । তার মতো বিশেষ ভাবে সক্ষমের জন্য কনে পাওয়া যে দুষ্কর । তবে অনেক ভেবে সমাধান খুঁজে বের করেন পরিবারের লোকেরা । শুরু হয় বিয়ের অনুষ্ঠানের তোড়জোড় ।
বন্ধুবান্ধব, অতিথিদের শুরু হয় নিমন্ত্রণপত্র বিলি । আয়োজন করা হয় সংগীতের । চলতি মাসের 10 তারিখ ধুমধাম করে হয় বিয়ে । তবে কনে ছাড়াই । অজয়ের এক কাকা বলেন, "অজয় সবকিছুর জন্যই আমাদের উপর নির্ভরশীল । তাই কনে পাওয়াও মুশকিল । তবে ভবিষ্যতে যদি সত্যি ওর বিয়ে হয় আমাদের মতো খুশি কেউ হবে না ।"
অজয়ের দাদা হাসমুখ বারত বলেন, "আমরা ওকে চিরকাল খুশি দেখতে চাই । নিজের বিয়েতে অজয়ের এই আনন্দ আমাদের সারা জীবন মনে থাকবে ।"