ETV Bharat / bharat

পিছন ফিরতেই দেখলাম বন্ধু দাউ দাউ করে জ্বলছে - Delhi fire 2019

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানাচ্ছেন, "দাউ দাউ করে জ্বলছিল আগুন ৷ বহুদূর পর্যন্ত ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছিল ৷ আমার দুই ভাইপো মহম্মদ ইমরান ও ইকরামুদ্দিন এই কারখানাতেই কাজ করেন ৷ এখন তাঁরা কী অবস্থায় জানি না ৷ কোনও খোঁজ পাচ্ছি না ৷ চারদিক থেকে শুধু কান্নার শব্দ আসছে ৷ মানুষ ছোটাছুটি করছে ৷ কারখানার মালিকের কথা জানি না ৷ ভাইপোদের সঙ্গে আমার এক বন্ধুও ছিল সেখানে ৷ ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছে ৷ তবে চোখের সামনে আর এক বন্ধুকে পুড়তে দেখেছে ৷ "

delhi
delhi
author img

By

Published : Dec 8, 2019, 11:45 AM IST

Updated : Dec 8, 2019, 4:38 PM IST

দিল্লি , 8 ডিসেম্বর : তখন কুয়াশায় মোড়া রয়েছে চারপাশ ৷ রবিবারের ছুটির দিনে সকালে একটু দেরি করেই ঘুম ভাঙার কথা ছিল আনাজ মান্ডির ৷ হঠাৎই পোড়া গন্ধ আর আতঙ্কের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় সকলের ৷ ততক্ষণে অনেকটাই ক্ষতি হয়ে গিয়েছে ৷ আগুনে পুড়ে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে 43জনের ৷

খবর ছড়িয়ে যায় চারপাশে ৷ আত্মীয়দের অনেকেই কারখানায় কাজ করছেন বা করছিলেন ৷ কেউ বা বিশ্রাম করছিলেন ৷ খবর পেতেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ৷ এক প্রত্যক্ষদর্শী জানাচ্ছেন, "দাউ দাউ করে জ্বলছিল আগুন ৷ বহুদূর পর্যন্ত ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছিল ৷ আমার দুই ভাইপো মহম্মদ ইমরান ও ইকরামুদ্দিন এই কারখানাতেই কাজ করেন ৷ এখন তাঁরা কী অবস্থায় জানি না ৷ কোনও খোঁজ পাচ্ছি না ৷ চারদিক থেকে শুধু কান্নার শব্দ আসছে ৷ মানুষ ছোটাছুটি করছে ৷ কারখানার মালিকের কথা জানি না ৷ ভাইপোদের সঙ্গে আমার এক বন্ধুও ছিল সেখানে ৷ ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছে ৷ তবে চোখের সামনে আর এক বন্ধুকে পুড়তে দেখেছে ৷ " তিনি জানাচ্ছেন , দুজনেই একসঙ্গে পালানোর চেষ্টা করেছিল ৷ কিন্তু হঠাৎই পিছন ফিরে দেখলাম দাউ দাউ করে জ্বলছে বন্ধুটা ৷ আর কিছু ভাবতে পারছি না ৷

photo
ধোঁয়ায় ঢেকে যায় আনাজ মান্ডি

আর এক প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন , "তখন ভোরের আলো ঠিক মত ফোটেনি ৷ আজ ঠিক ছিল কয়েকজন মিলে ঘুরতে যাব ৷ ছুটির দিন তাই একটু দেরি করে ঘুম থেকে ওঠার ইচ্ছা ছিল ৷ বন্ধুদের সঙ্গে আমিও ঘুমাচ্ছিলাম ৷ চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় ৷ প্রাণ হাতে করে পালাতে থাকি ৷ ঈশ্বরকে ধন্যবাদ ৷ তাঁর কৃপাতেই আজ বেঁচেছি ৷ কিন্তু বন্ধুদের কোনও খবর নেই ৷ কী খবর পাব জানি না ৷ "

আরও পড়ুন : দিল্লিতে কারখানায় আগুন, মৃত কমপক্ষে 43

প্রাথমিকভাবে পুলিশ ও দমকলকর্মীরা জানিয়েছেন অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে ঘুমের মধ্যে ৷ চারপাশ থেকে আগুন ঘিরে ধরেছিল গোটা বাড়িটাকে ৷ বাইরে বেরিয়ে আসার বিন্দুমাত্র সুযোগ পাননি অনেকে৷ ঘুম ভাঙলেও বাইরে বেরোনোর আগেই ঝলসে গেছে অনেক দেহ ৷ যখন দমকল পুলিশ বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থানে এসেছেন ততক্ষণে মৃতের সংখ্যা 20 ছাড়িয়েছে ৷ আগুনের ভিতর থেকে বাঁচার আকুতি ক্রমেই তীব্র হচ্ছিল ৷ শেষ চেষ্টা করতে অনেকে আগুনের ভিতর দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন ৷ ঘিঞ্জি এলাকার ভিতর দিয়ে গাড়ি-জলের পাইপ আনতে যে সময়টুকু দমকলের লাগত সেটুকুও তাদের হাতে ছিল না ৷

প্রাণে বাঁচতে জানলা দিয়ে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করেন অনেকে ৷ দেনও কেউ কেউ ৷ শরীরটা যখন বাইরে বেরিয়েছে তখন তা আধপোড়া ৷ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার কাজ শুরু হলেও মৃতের সংখ্যা 30 ছাড়িয়েছে ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যেই ৷ কারখানার ভিতরে যন্ত্রাংশ এবং বহু দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুনের গতি তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে ৷ এক বাড়ি থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে আর এক বাড়িতে ৷ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রথমে বেগ পেতে হয় দমকলকে ৷ একদিকে ঘিঞ্জি এলাকা ৷ অন্যদিকে স্থানীয়দের ছোটাছুটি ৷

আরও পড়ুন : শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর; পরিস্থিতিতে নজর অরবিন্দ কেজরিওয়ালের

দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদের তৎপরতাকে অবশ্য কুর্নিশ জানাচ্ছেন স্থানীয়রা ৷ যে তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছিল তা না হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত ৷ হাসপাতালগুলিতে দ্রুত শুরু হয় চিকিৎসা ৷ একের পর এক আহতকে আনা হতে থাকে স্থানীয় হাসপাতালগুলিতে ৷ খবর দেওয়া হয় চিকিৎসকদের ৷ বাতিল হয় ছুটি ৷ প্রতিটা হাসপাতালে একই ছবি ৷ মৃতদেহগুলি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হয় দ্রুতহারে ৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক ৷

রুটিরুজির জন্য এই কারখানায় কাজ করেন পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের বহু মানুষ ৷ নিহত , আহতদের অনেকেই এই দুই রাজ্যের বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে ৷ পাশাপাশি কারখানার অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ৷ অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ৷ সঠিক অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা থাকলে পরিস্থিতি এতটা ভয়ঙ্কর হত না বলে দাবি অনেকের ৷ তবে এবিষয়ে মুখ খোলেনি দিল্লি পুলিশ ৷ কিছু বলেনি দমকলও ৷

দিল্লি , 8 ডিসেম্বর : তখন কুয়াশায় মোড়া রয়েছে চারপাশ ৷ রবিবারের ছুটির দিনে সকালে একটু দেরি করেই ঘুম ভাঙার কথা ছিল আনাজ মান্ডির ৷ হঠাৎই পোড়া গন্ধ আর আতঙ্কের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় সকলের ৷ ততক্ষণে অনেকটাই ক্ষতি হয়ে গিয়েছে ৷ আগুনে পুড়ে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে 43জনের ৷

খবর ছড়িয়ে যায় চারপাশে ৷ আত্মীয়দের অনেকেই কারখানায় কাজ করছেন বা করছিলেন ৷ কেউ বা বিশ্রাম করছিলেন ৷ খবর পেতেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ৷ এক প্রত্যক্ষদর্শী জানাচ্ছেন, "দাউ দাউ করে জ্বলছিল আগুন ৷ বহুদূর পর্যন্ত ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছিল ৷ আমার দুই ভাইপো মহম্মদ ইমরান ও ইকরামুদ্দিন এই কারখানাতেই কাজ করেন ৷ এখন তাঁরা কী অবস্থায় জানি না ৷ কোনও খোঁজ পাচ্ছি না ৷ চারদিক থেকে শুধু কান্নার শব্দ আসছে ৷ মানুষ ছোটাছুটি করছে ৷ কারখানার মালিকের কথা জানি না ৷ ভাইপোদের সঙ্গে আমার এক বন্ধুও ছিল সেখানে ৷ ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছে ৷ তবে চোখের সামনে আর এক বন্ধুকে পুড়তে দেখেছে ৷ " তিনি জানাচ্ছেন , দুজনেই একসঙ্গে পালানোর চেষ্টা করেছিল ৷ কিন্তু হঠাৎই পিছন ফিরে দেখলাম দাউ দাউ করে জ্বলছে বন্ধুটা ৷ আর কিছু ভাবতে পারছি না ৷

photo
ধোঁয়ায় ঢেকে যায় আনাজ মান্ডি

আর এক প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন , "তখন ভোরের আলো ঠিক মত ফোটেনি ৷ আজ ঠিক ছিল কয়েকজন মিলে ঘুরতে যাব ৷ ছুটির দিন তাই একটু দেরি করে ঘুম থেকে ওঠার ইচ্ছা ছিল ৷ বন্ধুদের সঙ্গে আমিও ঘুমাচ্ছিলাম ৷ চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় ৷ প্রাণ হাতে করে পালাতে থাকি ৷ ঈশ্বরকে ধন্যবাদ ৷ তাঁর কৃপাতেই আজ বেঁচেছি ৷ কিন্তু বন্ধুদের কোনও খবর নেই ৷ কী খবর পাব জানি না ৷ "

আরও পড়ুন : দিল্লিতে কারখানায় আগুন, মৃত কমপক্ষে 43

প্রাথমিকভাবে পুলিশ ও দমকলকর্মীরা জানিয়েছেন অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে ঘুমের মধ্যে ৷ চারপাশ থেকে আগুন ঘিরে ধরেছিল গোটা বাড়িটাকে ৷ বাইরে বেরিয়ে আসার বিন্দুমাত্র সুযোগ পাননি অনেকে৷ ঘুম ভাঙলেও বাইরে বেরোনোর আগেই ঝলসে গেছে অনেক দেহ ৷ যখন দমকল পুলিশ বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থানে এসেছেন ততক্ষণে মৃতের সংখ্যা 20 ছাড়িয়েছে ৷ আগুনের ভিতর থেকে বাঁচার আকুতি ক্রমেই তীব্র হচ্ছিল ৷ শেষ চেষ্টা করতে অনেকে আগুনের ভিতর দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন ৷ ঘিঞ্জি এলাকার ভিতর দিয়ে গাড়ি-জলের পাইপ আনতে যে সময়টুকু দমকলের লাগত সেটুকুও তাদের হাতে ছিল না ৷

প্রাণে বাঁচতে জানলা দিয়ে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করেন অনেকে ৷ দেনও কেউ কেউ ৷ শরীরটা যখন বাইরে বেরিয়েছে তখন তা আধপোড়া ৷ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার কাজ শুরু হলেও মৃতের সংখ্যা 30 ছাড়িয়েছে ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যেই ৷ কারখানার ভিতরে যন্ত্রাংশ এবং বহু দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুনের গতি তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে ৷ এক বাড়ি থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে আর এক বাড়িতে ৷ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রথমে বেগ পেতে হয় দমকলকে ৷ একদিকে ঘিঞ্জি এলাকা ৷ অন্যদিকে স্থানীয়দের ছোটাছুটি ৷

আরও পড়ুন : শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর; পরিস্থিতিতে নজর অরবিন্দ কেজরিওয়ালের

দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদের তৎপরতাকে অবশ্য কুর্নিশ জানাচ্ছেন স্থানীয়রা ৷ যে তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছিল তা না হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত ৷ হাসপাতালগুলিতে দ্রুত শুরু হয় চিকিৎসা ৷ একের পর এক আহতকে আনা হতে থাকে স্থানীয় হাসপাতালগুলিতে ৷ খবর দেওয়া হয় চিকিৎসকদের ৷ বাতিল হয় ছুটি ৷ প্রতিটা হাসপাতালে একই ছবি ৷ মৃতদেহগুলি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হয় দ্রুতহারে ৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক ৷

রুটিরুজির জন্য এই কারখানায় কাজ করেন পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের বহু মানুষ ৷ নিহত , আহতদের অনেকেই এই দুই রাজ্যের বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে ৷ পাশাপাশি কারখানার অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ৷ অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ৷ সঠিক অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা থাকলে পরিস্থিতি এতটা ভয়ঙ্কর হত না বলে দাবি অনেকের ৷ তবে এবিষয়ে মুখ খোলেনি দিল্লি পুলিশ ৷ কিছু বলেনি দমকলও ৷

Balrampur (Chhattisgarh), Dec 08 (ANI): As part of the initiative by district forest department, waste plastic bottles are being recycled to plant and grow saplings at Ramanujganj nursery in Chhattisgarh's Balrampur. The women collect bottles from the city and recycle it to plant and grow saplings. The bottles are cut and a sapling is planted by filling it with fertile soil. The initiative was adopted after a ban was imposed on the use of single-use plastics.
Last Updated : Dec 8, 2019, 4:38 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.