মুম্বই, 17 এপ্রিল : কোরোনা ভাইরাসের জেরে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়বে ৷ মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ৷ তবে RBI গভর্নর শক্তিকান্ত দাস আশার কথা শোনালেন ৷ তাঁর মতে, প্রভাব পড়লেও মন্দার প্রভাব বেশি পড়বে না ৷ আর্থিক বৃদ্ধির হার দেশ ধরে রাখবে ৷ আজ সাংবাদিক বৈঠকে এই কথা বলেন তিনি ৷
আজকের সাংবাদিক বৈঠক থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য 50 হাজার কোটি টাকার প্যাকেজও ঘোষণা করেন শক্তিকান্ত দাস ৷ তিনি আরও বলেন, ভারতের সম্ভাব্য আর্থিক বৃদ্ধির হার 1.9 শতাংশ । 2020-21 অর্থবর্ষে বৃদ্ধির সম্ভাব্য হার 7.4 শতাংশ । G-20 দেশগুলোর মধ্যে ভারতের বৃদ্ধির হার সবথেকে বেশি । কোরোনা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে RBI ৷ দেশের স্বার্থে, সাধারণ মানুষের স্বার্থে যা যা করার প্রয়োজন তা করতে হবে ৷
RBI গভর্নর বলেন ‘‘COVID-19 বিশ্বে মারণ থাবা বসানোয় আজ মানবজাতি এক কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে সম্পূর্ণ বিষয়টির উপর নজরদারি চালাচ্ছে ৷’’
ব্যাঙ্ক যাতে সহজে ঋণ দিতে পারে, তার জন্য পর্যাপ্ত নগদ ব্যবস্থাকে সহজতর করতে ও আর্থিক চাপ কমাতে একাধিক নতুন পদক্ষেপের কথাও ঘোষণা করেন শক্তিকান্ত দাস ৷ এর মধ্যে রয়েছে রিভার্স রেপো রেট কমানো ও বিভন্ন ক্ষেত্রে আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা ৷
প্রসঙ্গত, 25 মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হওয়ার পর এই নিয়ে দ্বিতীয়বার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেন গভর্নর ৷ দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরলেন RBI-এর অবস্থান ৷
সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর বক্তব্যের মূল গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি হল-
- বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেমন নাবার্ড, ন্যাশনাল হাউজ়িং ব্যাঙ্ক ও ক্ষুদ্র শিল্প ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন ব্যাঙ্কের জন্য 50 হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হল ৷
- আবাসন শিল্পে ঘোষণা করা হল 10 হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ৷
- বর্তমানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য 50 হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হল ৷ পরিবর্তিত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরে এই টাকার অঙ্ক বাড়ানো হতে পারে ৷
- কোরোনার জেরে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে গাড়ি শিল্প ৷ গাড়ি তৈরি, বিক্রির হার কমেছে মার্চ মাসে ৷ বৈদ্যুতিক পণ্যের চাহিদাও বিপুল হারে কমেছে ৷
- আপাতত অপরিবর্তিত থাকছে রেপো রেট ৷ এর ফলে ব্যাঙ্কগুলি উৎপাদন ক্ষেত্রগুলিকে আর্থিকভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে ৷
- রিভার্স রেপো রেট 25 বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে 4 শতাংশ থেকে কমিয়ে 3.75 শতাংশে আনা হল ৷
- সম্পদের শ্রেণীবদ্ধকরণ মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত স্থগিত রাখা হল ৷
- COVID-19 র ফলে তৈরি হওয়া কঠিন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ব্যাঙ্কগুলি কোনও ডিভিডেন্ট পেআউট করবে না ৷
- পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে ৷
- লকডাউনের সময় ইন্টারনেট পরিষেবা বা মোবাইল ব্যাঙ্কিংয়ে কোনও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি ৷ ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা সুষ্ঠভাবেই পরিচালিত হচ্ছে ৷
- জি 20 দেশগুলির মধ্যে ভারতের বৃদ্ধির হার সবথেকে বেশি ৷
- 2021-2022 অর্থবর্ষে বৃদ্ধির সম্ভাব্য হার 7.8 শতাংশ ৷
- IMF জানিয়েছে ভারতের সম্ভাব্য বৃদ্ধির হার 1.9 শতাংশ হতে পারে ৷
- 14 এপ্রিল IMF 2020 সালের বিশ্বের বৃদ্ধির হার প্রকাশ করে বলেন যে চরম মন্দার মুখে পড়তে চলেছে ৷
- 2020-21 সালে আনুমানিক 9 ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে ৷
- কোরোনা মোকাবিলায় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক পরিস্থিতির উপর নজরদারি করছে ৷
- বৃষ্টির স্বাভাবিক পূর্বাভাস খানিকটা স্বস্তি দেবে অর্থনীতিতে ৷
RBI র ঘোষণার পর ইন্সটিটিউট অব ইনসিউরেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক কে শ্রীনিবাস রাও ETV ভারতকে জানান, ‘‘পর্যাপ্ত নগদের উপস্থিতি , রিভার্স রেপো রেটের হার হ্রাস ও NBFC-কে আর্থিক অনুদান দেশের অর্থনীতিকে সাহায্য করবে ৷’’