দিল্লি, 21 সেপ্টেম্বর : "বিতর্কিত" কৃষি বিলের বিরোধিতায় গতকাল রাজ্যসভার ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ডেরেক ও'ব্রায়েন-সহ বেশ কয়েকজন সাংসদ । রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু এই ঘটনার জেরে ডেরেক ও'ব্রায়েন-সহ আট সাংসদকে রাজ্যসভার অধিবেশনকক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে নির্দেশ দেন ৷ সাতদিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয় সাংসদদের । আর এই ঘটনার জেরেই বেজায় চটেছে বিরোধীরা । রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিংয়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগে কংগ্রেস । প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশমতো রাজ্যসভা পরিচালনা করছেন ডেপুটি চেয়ারম্যান । অভিযোগ কংগ্রেস শিবিরের ।
গতকাল 12 টি বিরোধী দলের তরফে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল ডেপুটি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে । কৃষি সংক্রান্ত দু'টি বিল পাশ করানোর ক্ষেত্রে ভোটাভুটির আবেদনকে তিনি গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ বিরোধীদের । যদিও সেই অনাস্থা প্রস্তাব “সঠিক পদ্ধতি মেনে করা হয়নি” বলে আজ খারিজ করে দিয়েছেন চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু ।
আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরি বলেন, “সংসদীয় ব্যবস্থার নিয়ম অনুযায়ী, আমরা ভোটাভুটির জন্য আবেদন করতে পারি । প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশ মতো রাজ্যসভার অধিবেশনকক্ষ চালানো হচ্ছে । রাজ্যসভার নবনির্বাচিত ডেপুটি চেয়ারম্যানের সরকারের প্রতি কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে । তিনি বিরোধী দলগুলির কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছেন ।”
তিনি আরও বলেন, “ যদি এটি সত্যি প্রমাণিত হয় যে ডেপুটি চেয়ারম্যান পক্ষপাতমূলক আচারণ করছেন, তবে আমাদের যা করার আমরা করব । এটা আমাদের সংসদীয় অধিকার ও গণতান্ত্রিক ব্য়বস্থার মধ্যেই রয়েছে । সাংসদদের যেভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে, আমি তার তীব্র নিন্দা জানাই ।”
আরও পড়ুন : ডেরেক-দোলা সহ 8 সাংসদ সাসপেন্ড
কৃষকদের দুর্দশার দিক থেকে নজর সরানোর জন্য, সরকার রাজ্যসভার ভিতরে এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি । বলেন, "আমরা যেন জানি না সংসদ কীভাবে পরিচালনা করা হয়। কংগ্রেস সংসদীয় কার্যকলাপ সম্পর্কে যথেষ্টই ওয়াকিবহাল ।
কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র ও নবনিযুক্ত সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিং সুরযেওয়ালার মুখেও একই কথা । বলেন, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গদি বাঁচাতে সরকার দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করছে । গণতন্ত্র এখন একতরফা স্বৈরাচারে পরিণত হয়েছে। আজ সকালে যেভাবে রাজ্যসভার আট জন সাংসদকে অধিবেশনকক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, যেভাবে বিরোধী দলগুলির কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে, তার জন্য এই দেশ মোদি সরকারকে কখনও ক্ষমা করবে না। "
আজ সকালে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন, দোলা সেন, CPI(M)-র কে কে রাগেশ ও এলামারান করিম, আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিং, কংগ্রেসের রাজু সাতাব, সইদ নাজির হুসেন ও রিপুন বোরাকে সাতদিনের জন্য রাজ্যসভার অধিবেশনকক্ষ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ডেরেক ও’ব্রায়েন, AAP সাংসদ সঞ্জয় সিং, কংগ্রেস সাংসদ রিপুন বোরা ডেপুটি চেয়ারম্যানের মাইক কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে । এমনকী ডেরেক ও'ব্রায়েনের বিরুদ্ধে রাজ্যসভার রুলবুক ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয় । যদিও তাঁর বক্তব্য, তিনি রুলবুক ছেঁড়েননি । তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে ।