দিল্লি, 2 মার্চ : দিল্লির হিংসাকে কেন্দ্র করে বিরোধীদের প্রতিবাদে উত্তপ্ত রাজ্যসভা ৷ যার জেরে আজকের মতো মুলতুবি হয়ে গেল রাজ্যসভা ৷ বিরোধীদের অভিযোগ দিল্লি যখন জ্বলছিল, সরকার তখন ঘুমাচ্ছিল ৷
রাজ্যসভার প্রথমভাগ মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পর দুপুর 2টোয় তা ফের চালু হয় ৷ দ্বিতীয় ভাগ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কংগ্রেস, বাম, TMC, SP, BSP, AAP ও DMK-র সাংসদরা সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ দেখাতে শুরু করেন ৷
ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ সভা চলাকালীন বিক্ষোভকারীদের বারবার অনুরোধ করেন, তাঁদের আসনে ফিরে যাওয়ার জন্য ৷ রাজ্যসভার তিন সদস্য, যারা চোখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ দেখাচ্ছিলেন, তাঁদের অনুরোধ করেন কালো কাপড় খুলতে, কারণ এটি রাজ্যসভার নিয়ম বিরুদ্ধ ৷
উত্তর-পূর্ব দিল্লির জাফরাবাদ, মৌজপুর, বাবরপুর, চান্দবাগ, শিববিহার, ভজনপুরা, যমুনা বিহার ও মুস্তফাবাদে বিগত কয়েকদিন ধরে CAA সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে বিরোধের ফলে হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ে ৷ এই ঘটনায় 42 জন মারা যান ও 200-র বেশি মানুষ জখম ৷
তবে স্নোগান-বিক্ষোভের মাঝেই মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল একটি বিল পেশ করেন, যেখানে তিনটি সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্রীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনার অনুরোধ করা হয়েছে ৷ গতবছর ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় বিলও পাশ করা হয় ৷ পোখরিয়াল এই বিলটি আনেন সংস্কৃতে পড়ানো ও গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সংযুক্ত করার জন্য ৷ বিরোধীদের বিক্ষোভের মাঝেই পোখরিয়াল সংস্কৃত ভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন ৷
দিল্লি হিংসার প্রেক্ষিতে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না ৷ প্রথমার্ধে বিরোধীদের আনা এই অভিযোগ নিয়ে চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, "ঘটনাটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ৷ তবে এই মুহূর্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দিকে জোর দেওয়া উচিত ৷ তারপর কীভাবে এই ধরনের ঘটনা আটকানো সম্ভব সেই বিষয়ে আলোচনা করা উচিত ৷" তবে নাইডুর এই আবেদনে কর্ণপাত করেননি সাংসদরা ৷ তারপরই 2টো অবধি সভা স্থগিত করে দেওয়া হয় ৷
বিরোধী পক্ষের প্রধান গুলাম নবি আজাদ বলেন, "তিনদিন ধরে যখন সন্ত্রাসে দিল্লি কাঁপছিল, তখন সরকার ঘুমোচ্ছিল ৷"
তিন সপ্তাহের বিরতির পর আজ বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় ভাগ শুরু হয় ৷ এই অধিবেশন গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান নাইডু ৷ তবে দিল্লি ইশুতে সভা উত্তপ্ত হওয়ায় আলোচনা এগোতে পারেনি ৷ বিরোধীরা তাঁর কাছে সভা মুলতুবি রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ৷ তার জবাবে নাইডু বলেন, ‘‘বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ও এই বিষয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে ৷" তিনি আরও বলেন, "আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা ৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারপর এই ধরনের সন্ত্রাস রোখার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে ৷’’