লাহোর, 3 সেপ্টেম্বর : কয়েকদিন আগে এক শিখ যুবতিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ধর্মান্তরিত করে নিকাহ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানে ৷ ওই যুবতির নাম জগজিৎ কৌর (19) ৷ তাঁর পরিবারের তরফে অভিযোগ, জগজিৎকে কয়েকজন বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় ৷ তারপর বন্দুক দেখিয়ে ইসলামে ধর্মান্তরিত করে জোর করে এক মুসলিম যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয় ৷ লাহোরের নানকানা সাহিব এলাকার ঘটনা ৷ ঘটনার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং ৷ গতকাল তিনি এই বিষয়ে একটি টুইট করেন ৷ টুইটে লেখেন, "জগজিৎ কৌরকে সাহায্য করতে ব্যর্থ হয়েছেন ইমরান খান সরকার৷ আমার পুরো সমর্থন রয়েছে ওই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ৷ আমি খুশি হব যদি জগজিৎ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা পঞ্জাবে (ভারতের) এসে বসবাস শুরু করেন৷ ওদের সাহায্য করতে পারলে খুশি হব৷"
ঘটনার পর বৃহস্পতিবার 6জনের নামে FIR দায়ের হয় ৷ আর্সালান নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ৷ তবে সূত্রের খবর, জগজিৎ শনিবার তাঁর বাড়ি ফিরে যেতে অস্বীকার করেছেন ৷ তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়নি ৷ বরং তিনি নিজের ইচ্ছাতেই মুসলিম যুবককে বিয়ে করেছেন - তাঁর এমন বয়ানের একটি ভিডিয়ো সামনে এসেছে ৷ যদিও বিষয়টি মানতে চাননি জগজিতের পরিবার ৷ তাঁদের দাবি জগজিৎকে দিয়ে জোর করে বলানো হয়েছে ওইসব কথা ৷গতকাল এই ঘটনা নিয়ে ফের টুইট করেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ৷
লাহোরের গুরুদুয়ারার গ্রন্থি তম্বু সাহিবের মেয়ে জগজিৎ ৷ জগজিতের ভাই বলেন, "কয়েকদিন আগে আমাদের বাড়িতে কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি চড়াও হয় ৷ আমার বোনকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় ওরা ৷ আমার বোনের উপর অত্যাচার করা হয়েছে ৷ জোর করে ওকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে ৷ আমরা এই বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পুলিশ স্টেশনে গিয়েছিলাম ৷ কিন্তু আমাদের অভিযোগ প্রথমে নেওয়া হয়নি ৷ অনেক পরে আমাদের অভিযোগ নেওয়া হয় ৷ এই ঘটনার পর ওই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা আমাদের বাড়িতে আবার চড়াও হয় ৷ হুমকি দেয় যাতে আমরা আমাদের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিই ৷ যদি না করে নিই তবে আমাদেরও জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হবে বলে হুমকি দেয় ওরা ৷"
সূত্রের খবর, এরপর জগজিৎকে বাড়ি ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী হয় পুলিশ ৷ কিন্তু জগজিৎ বাড়ি ফিরে যেতে রাজি হননি বলে খবর ৷ তাঁর দাবি, সে নিজের ইচ্ছায় মুসলিম যুবককে বিয়ে করেছে ৷ কেউ তাঁকে জোর করেনি ৷ তাঁর বয়ানের একটি ভিডিয়ো সামনে এসেছে ৷ যদিও তাঁকে দিয়ে ওইসব কথা জোর করে বলানো হয়েছে বলে দাবি জগজিতের পরিবারের ৷
এই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে পাকিস্তানের শিখ সম্প্রদায় ৷ সরব হয়েছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংও ৷ প্রথমে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গোটা বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করতে বলেন তিনি৷ দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের হস্তক্ষেপের আবেদন জানান ৷ ঘটনার পর ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং প্রথমে টুইট করেছিলেন, "পাকিস্তানের নানকানা সাহিব এলাকা থেকে এক শিখ যুবতিতে তুলে নিয়ে গিয়ে ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হল ৷ বিষয়টি খুবই নিন্দনীয় ৷ ব্যবস্থা নিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরকে আবেদন জানিয়েছি ৷" গতকাল ফের এই বিষয়ে টুইট করেন তিনি ৷