দিল্লি, 23 জুন : অবশেষে জামিন পেল জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা সাফুরা জ়ারগার ৷ দিল্লি হিংসার ঘটনায় সন্ত্রাস-বিরোধী আইনের আওতায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ৷ মানবিকতার কারণে পুলিশ বিরোধিতা না করায় আজ হাইকোর্টের তরফে তার জামিন মঞ্জুর করা হয় ৷
ফেব্রুয়ারিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে আন্দোলন চলাকালীন দিল্লিতে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছিল, তার বিরুদ্ধে বেআইনি ক্রিয়াকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের অধীন 10 এপ্রিল তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ৷ সে মাঝে জামিন পেলেও তাকে আরও কঠিন অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় ৷ তার গ্রেপ্তার এবং কারাগারে বন্দী করার বিষয়ে পড়ুয়াদের একাংশ তীব্র নিন্দা করেছিল ৷
জামিন দিলেও দিল্লি হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, সাফুরা এমন কোনও কাজে জড়াতে পারবে না যা তদন্তে বাধা দিতে পারে ৷ এমন কী, অনুমতি ছাড়া দিল্লির বাইরেও সে যেতে পারবে না ৷ পাশাপাশি বলা হয়, 15 দিনে একবার একজন তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে সাফুরাকে ৷ এছাড়া, 10 হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ড পেশ করতে হবে ৷
সাফুরা জ়ারগার জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের M.Phil-র ছাত্রী ৷ সে 23 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ৷ মানবিকতার খাতিরে পুলিশের তরফে থাকা সলিসিটর জেনেরাল তুষার মেহতা এই জামিনের বিরোধিতা করেননি ৷ তুষার মেহতা বলেন, তাকে মানবিকতার কারণে নিয়মিত জামিনে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে ৷ তবে এই সিদ্ধান্ত মামলার যথার্থতার ভিত্তিতে নেওয়া হয়নি ৷
গতকাল দিল্লি পুলিশের তরফে সাফুরার জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করা হয়েছিল ৷ সঙ্গে জানিয়েছিল, তার গর্ভাবস্থা কখনওই তার অপরাধের পরিমাণকে কমাতে পারবে না ৷ তার জামিনের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের তরফে দেওয়া রিপোর্টে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে পরিষ্কার ও জোরালো মামলা করা হয়েছে ৷ সে অজান্তে এবং নিখুঁতভাবে কঠিন অপরাধের পরিকল্পনা করেছে ৷ তবে, পরে তারা তাদের বিরোধিতা মানবিকতার খাতিরে সরিয়ে নেয় ৷
পুলিশের তরফে আগে বলা হয়েছিল, সাফুরাকে একটি আলাদা সেলে রাখা হয়েছিল ৷ তাই অন্যদের থেকে তার শরীরে কোরোনা ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনাও কম ছিল ৷ যুক্তি দিতে পুলিশের তরফে জানানো হয়, বিগত 10 বছরে দিল্লির কারাগারে 39 জন মহিলা সন্তানের জন্ম দিয়েছে ৷
4 জুন সাফুরার জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় ট্রায়াল কোর্ট ৷ তারপরই তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেন ৷ জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে গ্রেপ্তারের পরই সাফুরা জামিন পেয়েছিল ৷ কিন্তু, পরে তাকে আরও কঠিন অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় ৷ জাফরাবাদের রাস্তায় হিংসা সমগঠিত করার জন্য মহিলা ও বাচ্চাদের নিয়ে আসার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে ৷