লখিমপুর (উত্তরপ্রদেশ), 22 জুলাই : বহুবিবাহ প্রথা রদের আইন চালু হয়েছে প্রায় 150 বছর আগে ৷ কিন্তু দেশেরই একটি জায়গায় এখনও চালু কৌলিন্য প্রথা ! একাধিক স্ত্রী নিয়ে 'সুখে সংসার' করছেন একাধিক বাসিন্দা । উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি জেলার ফতেপুর গ্রাম ৷ এমন ঘটনায় অবাক হয়েছেন অনেকেই ৷
এই গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবারের ''কর্তা''-র দুই থেকে তিন জন স্ত্রী ৷ অনেকেই গ্রামের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করেন । সেই সূত্রে পরিবারের থেকে অনেক দূরেই থাকেন তাঁরা । কর্মস্থানে শান্তিতে থাকতে সেখানেও তাঁরা আরও একটি বিয়ে করেছেন । আর তাতেই নাকি গ্রামে 'সম্মান বজায়' থাকে তাঁদের । তবে এঁরা কিন্তু বেশিরভাগই রাজ্য সরকারি কর্মী৷ তাই বাইরে কারও সামনে বহুবিবাহ প্রথা বলার বিষয়ে লুকোছাপাও রয়েছে ৷ কারণ সরকারি কর্মীর একাধিক স্ত্রী জানলে চাকরি যেতে বাধ্য ৷
কারও ক্ষেত্রে একই বাড়িতে আলাদা আলাদা ঘরে রয়েছেন তিন জন বা দু'জন স্ত্রী ৷ স্থানীয়দের মত, শুধুমাত্র সমীহ আদায় করতেই নাকি এই প্রথা ! প্রায় 30টি ব্রাহ্মণ ও ঠাকুর পরিবার রয়েছে গ্রামে, যাঁদের প্রত্যেকেরই তিনজন স্ত্রী ৷ সম্প্রতি একজন স্কুল শিক্ষক মারা গেছেন, তাঁর তিনজন স্ত্রী রয়েছে ৷ এই পরিবারের প্রত্যেক পুরুষেরই তিনজন স্ত্রী ৷
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি সংবাদসংস্থাকে বলেন, অনেক সময়েই দরিদ্র পরিবারের মেয়েকে ‘উদ্ধার’ করতে ‘হাত’ বাড়িয়ে দিয়েছেন অর্থবান প্রৌঢ় বা বৃদ্ধরা । আবার ‘ভবিষ্যৎ নিশ্চিন্ত’ হবে ভেবে এমন বিয়েতে রাজিও হন অনেক মহিলা ৷ কারণ বৃদ্ধস্য তরুণী ভার্যা হলে দরিদ্র পরিবারটি মোটা অঙ্কের অর্থ পায়, ''জামাই''-এর অর্থে অন্নসংস্থান হয়ে যায় ৷
স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, পঞ্চায়েতের সৌজন্যে এমন ব্যবস্থা রয়েছে, যাতে স্বামীর মৃত্যু হলে প্রত্যেক স্ত্রী সম্পত্তির সমানাধিকার পান ৷ তবে সময় বদলাচ্ছে ৷ গ্রামের আধুনিক যুবকদের অনেকেই এই প্রথা মানতে পারেন না বলে শহরেই চলে যাচ্ছেন ৷
একাধিক বিবাহের ''যুক্তি'' হিসেবে বছর পঁচাত্তরের সুন্দরলাল শুক্লা বলেন, ''আমার প্রথম স্ত্রী বিতোনাই খুব ঝগড়ুটে ছিলেন ৷ বারবারই ঘর ছেড়ে চলে যেতেন । অনেক বোঝানোর পর আবার ফিরে আসতেন । এ সব দেখে আমাকে দ্বিতীয় বিয়ের পরামর্শ দেন আত্মীয়রা । বিয়ের খবর পেয়েই আমার প্রথম স্ত্রী ঘরে ফিরে আসেন । পঞ্চায়েতের পরমার্শে আমিও জমিজমা দুই স্ত্রীর মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দিয়েছি ।''