কটক : এ কথা যিনিই বলে থাকুন, তিনি ঠিকই বলেছিলেন যে, কোনও দেশের অবস্থা বোঝার পক্ষে সে দেশের মেয়েদের অবস্থা বোঝাই যথেষ্ট । একজন মহিলা শুধুই একজন ব্যক্তি নন, তিনি প্রজন্মের জন্ম দেন । তিনি সব দিক থেকেই পুরুষের সমান ।
মহিলাদের শুধুমাত্র স্বক্ষেত্রে স্বনামধন্য হওয়াই যথেষ্ট নয়, তাঁকে সমাজের বাকিদের কাছেও আদর্শ হতে হবে । বীণাপাণি মোহান্তির জীবনটাও প্রায় এইরকম । তিনি ওড়িশার একজন বিখ্যাত সাহিত্যিক, যিনি ওড়িয়া কথাসাহিত্যে নিজের স্থান পাকা করেছেন । তিনিও এ বছরের অন্যতম পদ্মশ্রী ।
বীণাপাণি মোহান্তি মনে করেন, আজ যে তিনি সমাজে জায়গা করে নিতে পেরেছেন, তার প্রধান কারণ তাঁর মা । তিনি শুধুমাত্র বীণাপাণি মোহান্তির আদর্শ ছিলেন না, তিনিই তাঁর শিল্পসত্তাকে সমাজের সামনে আনার সাহস জুগিয়েছেন । তিনি আরও বলেন, আসন্ন নারী দিবসে সব মহিলাদের উচিত এক হয়ে সমাজ পরিবর্তনের শপথ নেওয়া । এর ফলে অচিরেই আমরা এক নতুন সূর্যোদয় দেখতে পাব বলেও আশা করেছেন তিনি ।
বীণাপাণি বলেন, "আমার বয়স এখন 85 । কিন্তু আমি এখনও সমাজের জন্য নিজেকে লেখালিখির মধ্যে ব্যস্ত রেখেছি । আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লিখে যেতে চাই । তবে আমার শারীরিক অবস্থা এখন যথেষ্টই খারাপ । ঈশ্বরের যদি ইচ্ছা থাকে, তাহলে আগামী দিনে সমাজের কল্যাণে আমি আমার লেখা চালিয়ে যেতে চাই ।"
পিতৃতান্ত্রিক সমাজে আজকের নারীকেও নানা বাধার সামনে পড়তে হয় । অসাম্য থেকে শুরু করে যৌন হেনস্থার মতো ঘটনা মেয়েদের সঙ্গে প্রায়ই ঘটে । কখনও বা তাঁদের সমাজ যথেষ্ট অবহেলা করে, কখনও বা তাঁদের সে ভাবে গুরুত্বই দেওয়া হয় না ।
এই সবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশে বেড়ে চলেছে ধর্ষণ এবং খুনের মতো ঘটনা ৷ যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হায়দরাবাদের পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা । অপরাধ করার 7 বছর পরও নির্ভয়া মামলার অপরাধীদের এখনও ফাঁসি না হওয়ায় দেশের বিচার ব্যবস্থা সম্বন্ধে মেয়েদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে ।
একথা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই যে, এখন কোনও কোনও ক্ষেত্রে মহিলাদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে । তবুও এখনও অনেক ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে মহিলাদের প্রভূত কষ্ট ও অত্যাচার সহ্য করতে হয় । এইসব যন্ত্রণা থেকে মহিলাদের মুক্তি দিতে প্রয়োজন নারীদের ক্ষমতায়ন।
একজন মহিলা যেন বুঝতে পারেন যে তিনি যথেষ্ট ক্ষমতার অধিকারী এবং তিনি যে কোনও পরিস্থিতিতে শত্রুর মুখোমুখি হতে পারে এবং লিঙ্গ বৈষম্য কাটিয়ে উঠতে পারেন ।