দিল্লি, 13 মে : লকডাউনের চতুর্থ দফা আসতে চলেছে । গতকাল জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে সেকথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । কিন্তু সেই লকডাউনের মেয়াদ কতদিন তা স্পষ্ট করে জানাননি কিছুই । তা জানার জন্য 18 মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন । শুধু যে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী ভাষণে স্পষ্ট করে এবং বার বার বলেছেন তা হল, "ভারতকে স্বনির্ভর হতে হবে । " সেই উদ্দেশ্যে 20 লাখ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন । কিন্তু এক্ষেত্রেও ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী । এই প্যাকেজে কাদের জন্য কতটা বরাদ্দ করা হয়েছে তা নিয়ে কিছুই বলেননি । তবে, এই আর্থিক প্যাকেজ সম্পর্কে পরে বিস্তারিতভাবে অর্থমন্ত্রক জানাবে তা নিজের ভাষণে জানিয়েছেন মোদি । মোদির গতকালের এই ভাষণকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি । গতকালই কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সূরযেওয়ালা মোদির ভাষণ নিয়ে টুইট করেছেন । লিখেছেন, "আপনি ভাষণে যা বলেছেন তা দেশ ও সংবাদমাধ্যমকে শিরোনাম দিয়েছে । কিন্তু পাতার বাকি অংশটুকু ফাঁকা থেকে গেছে । এই ফাঁকা পাতায় যেদিন মানুষের সাহায্যের কথা উল্লেখ থাকবে সেদিন দেশ ও কংগ্রেস সাড়া দেবে ।" আজ একই মন্তব্য করলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম । তিনি বলেন, "গতকাল প্রধানমন্ত্রী আমাদের একটি শিরোনাম ও একটি ফাঁকা পাতা দিয়েছেন । তাই আমই প্রতিক্রিয়াহীন ।"
গতকাল প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এই আর্থিক প্যাকেজ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানাবে অর্থমন্ত্রক । তাই সেকথা টেনে এনে মোদিকে কটাক্ষ করে চিদম্বরম বলেন, "আমরা আজ অর্থমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছি । আশা করি, প্রধানমন্ত্রীর ফাঁকা পাতাটি তিনি পূরণ করবেন ।" প্রধানমন্ত্রী আর্থিক প্যাকেজ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, "2020-র বিকাশে গতি প্রদান করবে এই 20 লাখ কোটি টাকা ।" এই প্রসঙ্গে পি চিদম্বরম জানান, সরকার দেশের অর্থনীতিতে যে অতিরিক্ত ব্যয় করছে তার প্রতিটি পয়সা গুরুত্বের সঙ্গে নজরে রাখা হবে ।
এই আর্থিক প্যাকেজ কাদের জন্য ? কারা উপকৃত হবেন এই প্যাকেজ থেকে ? নরেন্দ্র মোদির ভাষণ অনুযায়ী, মূলত ভূমি, শ্রমিক, নগদ অর্থ ও আইন-এই চারটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে প্যাকেজে । দেশের ক্ষুদ্র, ছোটো, মাঝারি ব্যবসায়ী, উদ্যোগপতি, শ্রমিক, কৃষক ও মধ্যবিত্তদের জন্য এই প্যাকেজ । নরেন্দ্র মোদির এই কথা বাস্তবে কতটা রূপ পাচ্ছে সেবিষয়েও নজর থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী । বলেন, "কে কী পেল তাও আমরা গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করব । আর সেক্ষেত্রে আমরা সবার প্রথমে যে বিষয়টি দেখব তা হল শত শত কিলোমিটার পথ হেঁটে বাড়ি পৌঁছানোর পর গরিব, ক্ষুধার্ত ও জর্জরিত শ্রমিকরা কী পেলেন । অর্থের নামে ভারতের জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষ কী পেলেন তাও আমরা পরীক্ষা করে দেখব ।"
আজ এই আর্থিক প্যাকেজ সম্পর্কে বিস্তারিত ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন । এখন শুধু দেখার প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ অনুযায়ী, সত্যিই কি এই আর্থিক প্যাকেজ দেশের অর্থনীতিকে চাঙা করে তুলবে ? স্বনির্ভর করে তুলবে দেশকে ? প্রধানমন্ত্রীর ফাঁকা পাতাটি কি পূরণ করতে পারবেন অর্থমন্ত্রী । নাকি পাতা ফাঁকাই থেকে যাবে ।