দিল্লি, 24 সেপ্টেম্বর : বিরোধীদের রাজনীতি দিশাহীন হয়ে গেছে । কৃষি বিল ও অন্য ইশুগুলি নিয়ে বিরোধী দলগুলির কাছে সংসদে তাদের মতামত জানানোর সুযোগ ছিল । কিন্তু তা না করে তারা ওয়াক আউট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । আজ এই কথাই বললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাওড়েকর । মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ইশু নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করা বা বিক্ষোভ দেখানোর জন্য বছরের তিনশোটি দিন পড়ে রয়েছে । কিন্তু সংসদের অধিবেশন বয়কট করা উচিত হয়নি ।
তাঁর কথায়, “বিরোধী দলগুলির রাজনীতি দিশাহীন । সংসদে নিজেদের মতামত জানানোর অধিকার রয়েছে বিরোধীদের কাছে । কিন্তু তাঁরা সংসদের অধিবেশন বয়কট করে বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন । রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করছেন । এইসবের জন্য আরও তিনশোটি দিন পড়ে রয়েছে । সংসদের অধিবেশন চলে মাত্র 70-80 দিন । আমরা কাউকে নিজের মতপ্রকাশে বাধা দিইনি ।”
একইসঙ্গে রাজ্যসভায় অধিবেশন চলাকালীন বিরোধী দলের নেতাদের আচরণ নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করেন । বলেন, “এই ধরনের আচরণ লজ্জাজনক ।”
তাঁর কথায়, "কৃষি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলি পেশ ও আলোচনা করার সময়, বিরোধীরা যে ধরনের আচরণ করেছেন, তা সংসদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক । বিরোধীরা ডিভিশন চেয়েছিলেন । ডেপুটি চেয়ারম্যান বারবার তাঁদের নিজেদের আসনে গিয়ে বসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন । সাংসদরা নিজেদের আসন গ্রহণ করলে তবে ডিভিশন হবে বলে আশ্বস্তও করেছিলেন । কিন্তু এখন তাঁরা সবজায়গায় অভিযোগ জানিয়ে ফিরছেন, ডিভিশন হয়নি । এ তো বুক ফুলিয়ে চুরি করার মতো অবস্থা ।"
আরও পড়ুন : ছিঁড়তে গেলেন রুল বুক, কৃষি বিলের প্রতিবাদে ওয়েলে ডেরেক
বিতর্কিত কৃষি বিলগুলি প্রসঙ্গেও আজ মুখ খোলেন তিনি । বলেন, “দেশের কৃষকদের কাছে এটি একটি আশীর্বাদ । বিরোধীরা প্রথমে বলেছিলেন ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য থাকবে না । তবে তা থাকছে । এবার ক্রয় করা হবে । এরপর তাঁরা বলেছিলন যে APMC বন্ধ হয়ে যাবে । কিন্তু সেটিও থাকছে । বিরোধীরা যা করছে তা খুব খারাপ।”
প্রসঙ্গত, রবিবার রাজ্যসভায় পাশ হয় কৃষি সংক্রান্ত দু'টি বিল । কৃষিজাত পণ্যের লেনদেন ও বাণিজ্যিক উন্নতি এবং কৃষিজাত পণ্যের মূল্যের ক্ষেত্রে কৃষকদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ণ সংক্রান্ত বিল দুটি রাজ্যসভার পেশ হতেই শুরু হয় তুমুল গন্ডগোল । তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েনের নেতৃত্বে ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ দেখান বিরোধীরা । রুল বুক ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করেন ডেরেক । তৃণমূলের তরফে বিল নিয়ে ভোটাভুটির দাবিও তোলা হয়েছিল । এর জেরে মিনিট দশেকের জন্য মুলতুবি হয়ে গেছিল অধিবেশন । ফের অধিবেশন চালু হলে ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে পাশ হয় বিলগুলি ।
এদিকে এই ধরনের আচরণের জন্য সোমবার ডেরেকসহ আট সাংসদকে সাতদিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয় রাজ্যসভার অধিবেশন থেকে । আর এরই জেরে ফের শুরু হয় হট্টগোল । একে একে রাজ্যসভা থেকে ওয়াক আউট করে যান কংগ্রেস, তৃণমূল, আম আদমি পার্টি-সহ একাধিক বিরোধী দলের নেতারা । রাজ্যসভা কার্যত বিরোধীশূন্য হয়ে যায় ।