ভুবনেশ্বর, 13 ডিসেম্বর : একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিক বন্ধ করতে দেশজুড়ে প্রচার চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ এবার একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিক বন্ধে এগিয়ে এল স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা ৷ ওড়িশার সম্বলপুরের গুমেই এলাকার এই স্বনির্ভর গোষ্ঠী শালপাতার থালা, বাটি ইত্যাদি তৈরি করছে ৷ তাদের এই উদ্যোগকে সফল করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সম্বলপুর প্রশাসন ৷ তাদের তরফে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ৷ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্লাস্টিকের থালা, বাটি বা ওই জাতীয় জিনিসপত্রের ব্যবহার বন্ধ করার জন্য শালপাতার ব্যবহারে জোর দেওয়া হচ্ছে ৷
শালপাতা ব্যবহারের ফলে কেবল যে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমছে তাই নয়, মহিলারাও আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়ে উঠছেন ৷ এই কাজের প্রধান কাঁচামাল শালপাতা ৷ সুবিধে হল, এই শালপাতা মহিলাদের কিনতে হয় না ৷ নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে জঙ্গল থেকে শালপাতা কুড়িয়ে আনেন ৷ তা নিয়ে আসেন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৷ সেখানে সবাই মিলে থালা, বাটি তৈরি করেন ৷ আর তাই বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখান থেকে যা আয় হয়, তা মহিলাদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয় ৷
কী ভাবে তৈরি হয় প্লেট বা বাটি ? জঙ্গল থেকে শালপাতা কুড়িয়ে আনার পর হাতে করে সেই পাতাকে থালা ও বাটির আকার দেওয়া হয় । তারপর তা রোদে শুকোনো হয় । রোদ থেকে তুলে সেলাই করা হয় । তারপর তা বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ।
কেমন দাম এই প্লেটের? একটা সময় দিনে 100-র বেশি প্লেট বানাতে পারতেন না একজন মহিলা । কিন্তু, মেশিনের দৌলতে সেই সংখ্যা এখন বেড়েছে । এক এক জন দৈনিক 500টি প্লেট বানাতে পারেন । একটা সময় প্রতি প্লেটের দাম ছিল 70 পয়সা ৷ এখন তার দাম বেড়ে হয়েছে সাড়ে তিন টাকা ৷
সম্বলপুর প্রশাসনের পাশাপাশি ওড়িশা বন দপ্তরের তরফেও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সাহায্য করা হচ্ছে ৷ বন দপ্তরের তরফে ইতিমধ্যেই 10টি সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে গোষ্ঠীকে ৷ স্থায়ী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য সবরকম সাহায্য করছে জেলা প্রশাসন ৷
এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সরকারি আধিকারিক সুকান্ত ত্রিপাঠী জানালেন, একবার ব্যববহার যোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে সবরকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷ তাঁর কথায়, "এখানে তৈরি শালপাতা এখন গোয়ায় পাঠানো হচ্ছে ৷ ভবিষ্যতে ভোপাল, রাইপুর ও কলকাতায় পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে ৷ উৎপাদন বাড়ানো হবে যাতে স্থানীয় বাজারেও এই শালপাতার থালা পাওয়া যায় ৷"