দিল্লি, 12 ডিসেম্বর : ফিকির বার্ষিক সভায় কৃষি আইন নিয়ে সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ কেন্দ্রের এই আইন নিয়ে প্রায় সারা দেশে কৃষকদের মধ্যে উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে ৷ পঞ্জাব, হরিয়ানাসহ বিভিন্ন জায়গায় কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত ৷ ঠিক সেই সময় কৃষি আইনের পক্ষে ফের সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী ৷ আজ, ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্সের 93 তম বার্ষিক সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন কৃষি আইন কৃষি ও সহযোগী ক্ষেত্রের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা দূর করবে ৷ প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং বিনিয়োগের ফলে কৃষকদের জন্য তৈরি হবে নতুন বাজার ৷ ফিকি(এফআইসিসিআই) -এর বার্ষিক সাধারণ সভায় মোদি বলেন, একটি ক্ষেত্রের উন্নয়ন যখন বৃদ্ধি পায় তখন তার প্রভাব অন্যান্য বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রেও পড়ে ৷
নয়া কৃষি আইন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এই সওয়াল কী কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষ দূর করবে? মোদি বলেন, "কল্পনা করুন, যখন শিল্পগুলির মধ্যে অপ্রয়োজনীয় দেওয়াল তৈরি করা হবে তখন কী ঘটবে। কোনও শিল্পের যত দ্রুত গতি বৃদ্ধি হওয়ার তা আর হবে না।" কৃষি আইন নিয়ে এবার পরোক্ষে বিরোধীদের টার্গেট করে মোদি বলেন, কৃষি এবং এর সহযোগী ক্ষেত্র যেমন, কৃষি পরিকাঠামো, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ফসল সঞ্চয়, হিমঘরগুলির মধ্যে প্রাচীর ছিল । নয়া আইনের ফলে এতদিনকার সেই দেওয়াল সরে গিয়েছে। নয়া কৃষি আইনে এই সংস্কারগুলি করা হয়েছে ৷ এরফলে কৃষকদের নতুন বাজার, প্রযুক্তির সুবিধা এবং বিনিয়োগ আনতে সহায়তা করবে । প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমার দেশের কৃষকরা এই সমস্ত থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন ৷" প্রধানমন্ত্রীর মতে, দেশে এতদিন বিভিন্ন শিল্পের পরস্পরের মধ্যে প্রতিবন্ধকতার দেওয়াল ছিল ৷ কিন্তু এখন সেই দেওয়াল তুলে দেওয়া হয়েছে ৷ ভারতের অর্থনীতিতে যা অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল ৷ পারস্পারিক ক্ষেত্রে প্রাচীর নয় বরং আরও বেশি করে সেতু তৈরি করা হচ্ছে যাতে তারা একে অপরকে সহায়তা করতে পারে ।
চলতি বছরে সেপ্টেম্বরে নয়া কৃষি আইন পাশ হলে সারা দেশে, বিশেষ করে পঞ্জাব ও হরিয়ানায় কৃষকেরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ৷ হাজার হাজার কৃষক দত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন ৷ প্রায় 16টির মতো রাজনৈতিক দলও কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরোধিতা করে কৃষকদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ৷ কৃষকদের শান্ত করতে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা আলোচনায় বসে ৷ কিন্তু কোনও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি ৷ কৃষকেরা তাঁদের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ৷
ফিকির অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের গ্রাম ও ছোটো শহরগুলিতে শিল্পের বিনিয়োগ প্রয়োজন, কারণ সেখান থেকেই একবিংশ শতাব্দীতে দেশের উন্নয়ন বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে, বেসরকারি ক্ষেত্রগুলি দেশের কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নে এখন পর্যন্ত যতটা নজর দেওয়া উচিত ছিল তেমন মনোযোগ দেয়নি । তিনি বলেন, এখন কৃষকদের কাছে তাঁদের পণ্য কৃষি মান্ডির পাশাপাশি বাইরেও বিক্রি করার বিকল্প থাকবে। এই প্রচেষ্টা কৃষকদের আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে করা হয়েছে ৷"
আরও পড়ুন : এই প্রথম নয়, গত 10 বছরে একাধিকবার রাস্তায় নেমেছেন কৃষকরা
আরও পড়ুন : আরও আলোচনায় প্রস্তুত কেন্দ্র, দেশজুড়ে রেল অবরোধের হুঁশিয়ারি কৃষকদের