দিল্লি, 2 জুন : জেসিকা লাল খুনে যাবজ্জীবনকারাদণ্ড হয়েছিল । সংশোধনাগারে থাকাকালীন ভালো আচরণ কিছুটা হলেও ছাড়া পাওয়ারক্ষেত্রে সুবিধা করে দিয়েছিল । তবে 2018 সালে জেসিকা লালের ছোটো বোন সাবরিনালাল মামলা তুলে নেওয়ার পর মনু শর্মার মুক্তির পথ প্রশস্ত হয়ে যায় । সেবছর সাবরিনালাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন তিনি মনু শর্মাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন । মনু শর্মারমুক্তিতে কোনওরকম আপত্তি নেই তার । কিন্তু, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তিনি দিল্লিরউপরাজ্যপালের উপর ছেড়ে দিয়েছিলেন । এরপর গতমাসে তাকে মু্ক্তি দেওয়া নিয়ে পরামর্শদিয়েছিল দিল্লির সেনটেন্স রিভিউ বোর্ড । পাশাপাশি দেশের কোরোনা পরিস্থিতি বিষয়টাআরও পাকা করে দেয় । শেষমেশ গতকাল মু্ক্তি দেওয়া হল জেসিকা লালের খুনি মনু শর্মাকে।
এরআগে ভালো আচার-আচরণকে ইশু করে মনু শর্মার আইনজীবী দিল্লি হাইকোর্টের কাছে তারমুক্তির আবেদন জানান । কিন্তু চারবার তার মুক্তির আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয় । পরেকয়েকবার প্যারোলে মুক্তি পায় মনু । কিন্তু ছাড়া পেয়েই নানা বচসায় আবার জড়িয়েপড়ে সে । তাই এই ভালো আচরণের বিষয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে । কিন্তু জেসিকা লালেরছোটো বোন সাবরিনা লালের মামলা তুলে নেওয়ার জেরে মনু শর্মার মুক্তির বিষয়টি আরও সহজহয়ে যায় । প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছিল । এর মাঝেই কোরোনা থাবা বসায় দেশে । ফলেসংক্রমণ প্রতিরোধে ও ভিড় কমাতে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ ধীরে ধীরে দোষীদের মুক্তিদিতে শুরু করে । মনু শর্মার মুক্তি নিয়ে মাস খানেক আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসত্যেন্দ্র জৈনের সঙ্গে বৈঠক করে দিল্লির সেনটেন্স রিভিউ বোর্ড (SRB) । পরে SRB-র তরফে মনু শর্মার মুক্তির সুপারিশকরা হয় । এবং বিষয়টিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সেই সুপারিশ পাঠিয়ে দেওয়াহয় উপরাজ্যপাল অনিল বৈজালের কাছে । দিন কয়েক আগে সুপারিশে সম্মতি দেন বৈজাল ।গতকাল মুক্তি দেওয়া হয় মনু শর্মাকে । প্রায় 17 বছর কারাবাসের পর মুক্তি পেল সে ।
1999 সালের30 এপ্রিলদিল্লিতে প্রকাশ্যে খুন হন মডেল জেসিকা লাল । দিল্লির একটি বারে কাজ করতেন তিনি ।এই খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় বেশ কয়েকজন হেভিওয়েটের । পরে দোষী সাব্যস্ত হয় প্রাক্তনকেন্দ্রীয়মন্ত্রী বিনোদ শর্মার ছেলে মনু শর্মা । জানা যায়, দিল্লির এক পানশালায় মনু শর্মাকে মদপরিবেশন না করায় জেসিকাকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করেছিল সে । 2006 সালে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিতকরে দিল্লি হাইকোর্ট । প্রথমে দিল্লির এক নিম্ন আদালত মুক্তি দিয়েছিল মনু শর্মাকে। কিন্তু তারপরই দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ শুরু হয় । ধিক্কার মিছিল চলে । পরেমামলাটি হাইকোর্টে উঠলে অপরাধী মনু শর্মাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হয় ।
গতদু'বছর ধরেভালো আচার-আচরণের জন্য তাকে অনেকটা ছাড় দেওয়া হয় । সংশোধনাগার কর্মীদেরপুনর্বাসনের জন্য একটি অসরকারি সংস্থার হয়ে কাজ শুরু করে সে । এই কাজের জন্যসংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের তরফে প্রতিদিন সকাল 8টা থেকে সন্ধ্যা 6টা পর্যন্ত তাকে বাইরে বেরোনোর অনুমতিদেওয়া হত ।