শ্রীনগর : 14 মাস গৃহবন্দী ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির সভানেত্রী মেহবুবা মুফতি । তিনি মুক্তি পাওয়ার পরদিনই সেখানকার মূলধারার 6 টি রাজনৈতিক দল বৃহস্পতিবার বৈঠক করে । সেই বৈঠকে গড়ে তোলা হয় ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকর ডিক্লারেশন’ । এই জোট কাশ্মীরের বিষয়টিকে শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাধান ও বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করবে ।
ওই বৈঠক আয়োজন করা হয়েছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের সভাপতি ফারুক আবদুল্লার বাড়িতে । এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা ওই বৈঠকে অন্য পাঁচটি রাজনৈতিক দলের প্রধানরাও উপস্থিত ছিলেন । তাঁরা সকলেই চলতি বছরের 22 অগাস্ট গুপকর ঘোষণাপত্রে সাক্ষর করেছিলেন ।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন PDP এর প্রধান মেহবুবা মুফতি, পিপলস কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সাজাদ লোন, জম্মু ও কাশ্মীর পিপলস মুভমেন্টের সভাপতি জাভেদ মুস্তাফা মীর, CPI(M)-এর রাজ্য সম্পাদক এম ওয়াই তারিগামি এবং আওয়ামি ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহ সভাপতি মুজাফ্ফর শাহ ।
ওই ঘোষণাপত্রে যাঁরা সাক্ষর করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীর কংগ্রেস কমিটির সভাপতিও । তবে তিনি ওই বৈঠকে সামিল হননি । এই নিয়ে দলের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন যে তাঁদের সভাপতি ‘চিকিৎসা জনিত কারণে’ উপস্থিত হতে পারেননি ।
বৈঠকের পর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ফারুক আবদুল্লা জানান যে গুপকর ঘোষণাপত্র এখন থেকে ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকর ডিক্লারেশন’ হিসেবে জানা যাবে ।
মেহবুবা, সাজাদ লোন, এম ওয়াই তারিগামিকে সঙ্গে নিয়ে ফারুক জানান যে এই জোট 2019 সালের 4 অগাস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের যে মর্যাদা ছিল, তা ফিরিয়ে আনার দাবিতে লড়াই করবে । সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীরের রাজনৈতিক ইশুগুলি সমাধান করার চেষ্টা করবে ।
তিনি বলেন, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের কাছ থেকে যা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা ফিরিয়ে আনার দাবিতে আমরা আন্দোলন করব । এটা আমাদের সাংবিধানিক লড়াই । আমরা সংবিধান পুনস্থাপন করার দাবি তুলব ( জম্মু ও কাশ্মীর সম্বন্ধীয় ), যা 2019 সালের 5 অগাস্ট পর্যন্ত বলবৎ ছিল ।’’
আবদুল্লা জানান, জোটের সদস্যরা আবার বৈঠক করবেন । আর সেই বৈঠকে গত বছর অগাস্ট মাসের 5 তারিখ BJP সরকার যে বিশেষ মর্যাদার বিলোপ ঘটিয়েছিল, তা ফিরিয়ে আনার জন্য একটি রূপরেখা তৈরি করা হবে ।
গত বছরের 5 অগাস্ট BJP-র নেতৃত্বাধীন সরকার 370 ধারার অবলুপ্তি ঘটায় । আর জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে 2 টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু কাশ্মীর ও লাদাখে পরিণত করে । তার 14 মাস পর এই প্রথম কাশ্মীরে বড় কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি নেওয়া হল । ফলে 6 টি দলের মধ্যে হওয়া এই বৈঠকের রাজনৈতিক গুরুত্ব যথেষ্ট রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে ।