দিল্লি, 29 জুন : ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর উত্তেজনার মাঝেই এবার উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য । চিনের সেনা আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ দিতে এবার মার্শাল আর্টের সাহায্য নিচ্ছে বেজিং । মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষকদের নিয়োগ করা হচ্ছে চিনের সেনায় । চিনের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তিব্বতে চিনের জওয়ানদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কমপক্ষে 20 জন মার্শাল আর্ট ট্রেনারকে পাঠানো হয়েছে ।
চিনের একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, 15 জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের আগে থেকেই তিব্বতের স্থানীয় ক্লাবগুলি থেকে মার্শাল আর্ট ট্রেনারদের সেনায় নিয়োগ করা হচ্ছিল । এবার বেজিংকে পালটা দিতে তৈরি দিল্লিও । মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষিত সেনাকে টেক্কা দিতে ঘাতক কমান্ডোদের তৈরি রাখা হচ্ছে । ঘাতক কমান্ডো ভারতের প্রতিরক্ষার অন্যতম শক্তিশালী স্তম্ভ ।
কী এই ঘাতক কমান্ডো ? কেন 'ঘাতক' বাকিদের থেকে আলাদা ?
একনজরে দেখে নেওয়া যাক ঘাতক কমান্ডোর খুঁটিনাটি ।
- ভারতীয় সেনার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, একজন ঘাতক কমান্ডো 43 দিনের বিশেষ কমান্ডো ট্রেনিং কোর্স করেন । কর্নাটকের বেলগামে হয় এই বিশেষ কমান্ডো ট্রেনিং ।
- না থেমে অনায়াসে একটানা 40 কিলোমিটার দৌঁড়ে যেতে পারেন একজন ঘাতক কমান্ডো । পিঠে 35 কেজি পর্যন্ত ভার নিয়েও এই লম্বা পথ একনাগাড়ে দৌঁড়ে যেতে সক্ষম তিনি ।
- সমরাস্ত্র ছাড়াও খালি হাতে লড়াইয়েও দক্ষ ঘাতক কমান্ডোরা ।
- ঘাতক কমান্ডোদের দেওয়া হয় বিশেষ মার্শাল আর্ট ট্রেনিং ।
- কোনও একটি ইউনিটের সঙ্গে থাকাকালীনও এদের ট্রেনিং চলতে থাকে সমান তালে ।
- উচ্চ পার্বত্য এলাকায় ও মরুভূমি এলাকায় শত্রুপক্ষের মোকাবিলা করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয় এই ঘাতক কমান্ডোদের ।
1996 সালে স্বাক্ষরিত ভারত চিন সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের কোনও পক্ষই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দুই কিলোমিটারের ভিতর গোলাগুলি করতে পারবে না । কোনওরকম রাসায়নিক অস্ত্র, বন্দুক বা যে কোনও রকমের বিস্ফোরকের ব্যবহারও নিষিদ্ধ এই এলাকার মধ্যে ৷
ভারতীয় সেনার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘাতক কমান্ডোদের একটি ইউনিটে একজন আধিকারিক, একজন JCO-সহ মোটামুটি 22 জন কমান্ডো থাকেন । তবে ব্যাকআপ হিসেবে আরও একটি একই ধরনের ইউনিট তৈরি রাখা হয় পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য । এইভাবে একটি ঘাতক ইউনিটে প্রকৃত অর্থে দেখতে গেলে 40-45 জন কমান্ডো থাকেন ।
ভারতীয় সেনার প্রত্যেক ইনফ্যানট্রি আধিকারিককে বিশেষ প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় । এদের মধ্যে বাছাই করা কিছু আধিকারিককেই এই ঘাতক ট্রেনিং দেওয়া হয় । প্রতিবছর, 30-40 জন জওয়ান প্রতিটি ইউনিটের সঙ্গে যুক্ত হন ট্রেনিংয়ের জন্য । এরপর তাঁদের মধ্যে থেকে শুধুমাত্র নির্বাচিত কয়েকজনকেই কমান্ডো দলে রেখে দেওয়া হয় ।