দিল্লি, 11 জুন : দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা । ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্র সংক্রমণে চিনকে ছাপিয়ে গেছে । দিল্লিতেও ব্যাপক হারে বাড়ছে সংক্রমণ । তাই এই দুটি রাজ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল । সেই জল্পনাতে জল ঢালল ICMR । তাদের দাবি, ভারতে এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি ।
আজ ICMR-এর ডিরেক্টর জেনেরাল বলরাম ভারগব একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন । সেখানে দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে কি না তা নিয়ে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় । উত্তরে বলরাম ভারগব বলেন, "গোষ্ঠী সংক্রমণ শব্দটির তাৎপর্য নিয়ে এখনও অনেক তর্ক চলছে । আর WHO-ও শব্দটির অর্থ স্পষ্ট করেনি । আমাদের দেশে সংক্রমণের বিস্তার খুবই কম । বলা যেতে পারে, 1 শতাংশেরও নিচে । শুধুমাত্র শহরাঞ্চল ও কনটেইনমেন্ট জ়োনগুলিতে এর বিস্তার সামান্য বেশি । আমাদের দেশে এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি ।"
প্রসঙ্গত, সোমবার দিল্লির স্বাস্থ্য মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন জানান, দিল্লির 50 শতাংশ সংক্রমিতের ক্ষেত্রে সংক্রমণের কোনও উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি । একমাত্র কেন্দ্রই ঘোষণা করতে পারে যে, দিল্লি গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে রয়েছে কি না । তিনি আরও বলেন, "AIIMS-এর ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়াও বলেছিলেন, দিল্লিতে গোষ্ঠী সংক্রমণ হচ্ছে । কিন্তু কেন্দ্র এখনও বিষয়টি স্বীকার করেনি । আমরা এটা ঘোষণা করতে পারি না । কেন্দ্রকেই এই বিষয়টা ঘোষণা করতে হবে ।" সত্যেন্দ্র জৈনর এই বক্তব্যের পর ICMR-র আজকের বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা ।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এও বলছেন, গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে ICMR-র ডিরেক্টর এটাও জানিয়েছেন, গোষ্ঠী সংক্রমণ শব্দটির তাৎপর্য নিয়ে তর্ক চলছে ।
বর্তমানে দিল্লিতে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় 30 হাজার । তবে, দিল্লি সরকারের অনুমান, 10 দিনের মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা 50 হাজার ছাড়াবে । আর 31 জুলাই পর্যন্ত দিল্লিতে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা হবে 5.5 লাখ ।
মুম্বইয়ে বর্তমানে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 45 হাজারেরও বেশি । কনটেইনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে 798 । মুম্বইয়ের 60 শতাংশের বেশি মানুষ বস্তিতে থাকে । ধারাবি বস্তিতে যে সমস্ত চিকিৎসক কাজ করছেন, তাঁদেরও অনুমান মুম্বইয়ে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে ।
ধারাবির ফিভার ক্লিনিক প্র্যাকটিসনার দিলীপ শেট্টি বলেন, "যাঁরা বস্তিতে থাকেন তাঁদের বেশিরভাগই বাইরে কাজ করেন । তাঁরা জায়গার অভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না । বস্তিগুলিতে সচেতনতার অভাব রয়েছে । তাছাড়া, বস্তিগুলিতে উপসর্গহীন রোগীরা রয়েছে । তাই আমি বিশ্বাস করি যে, মুম্বইয়ে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে ।"
