ইসলামাবাদ ও দিল্লি, 1 জুলাই : নতুন মানচিত্র প্রকাশ করার পরনিজের দল, নেপালকমিউনিস্ট পার্টির একাংশেরই বিরাগভাজন হয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মাওলি । 28 জুনএই বিষয়ে মুখও খোলেন তিনি । সরাসরি আক্রমণ করেন ভারত ও নেপালের কিছু রাজনীতিবিদদেরউপর । ওলির অভিযোগ, লেপুলেখপাস, কালাপানিও লিম্পিয়াধুরাকে নেপালের ভূখন্ডে দেখিয়ে মানচিত্র প্রকাশ করার পর থেকেইনিন্দুকেরা তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে । এই পরিস্থিতিতে নেপালেরপাশে দাঁড়াল ইসলামাবাদ । পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই কূটনৈতিকটানাপোড়েনের মাঝে নেপালের সমর্থনে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । শি জিনপিংয়ের পরইমরান খানও এবার নতুন মানচিত্র ইশুতে ওলির পাশে দাঁড়ালেন ।
এদিকেওলির এই অভিযোগ নেপালের রাজনীতিতে তাঁকে আরও বেশি করে কোণঠাসা করে দিয়েছে । গতকাল, পুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ড- সহ নেপালেবর্তমান নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির একাধিক নেতা সরকার থেকে ও দল থেকে ওলির পদত্যাগেরদাবি তুলেছেন । প্রসঙ্গত, এর আগেওওলির বিরোধীরা একাধিকবার সরব হয়েছিল, সরকার অথবা দল, যে কোনও একটির নেতৃত্ব থাকার জন্য ।কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি ওলি ।
একদিকেভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ইশুতে দলের ভিতরে ও বাইরে উভয়দিক থেকেই চাপেরমুখে পড়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী । ঠিক এই পরিস্থিতিতে বেজিংয়ের পরইসলামাবাদকেও বন্ধু হিসাবে পাওয়ায় ওলির চাপ কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করছেনকূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ।
সর্বভারতীয়এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ইসলামাবাদথেকে ইতিমধ্যেই আধিকারিক স্তরে যোগাযোগ করা হয়েছে নেপালের বিদেশমন্ত্রকের সঙ্গে ।ওলির সঙ্গে ইমরান খানের ফোনে কথোকথনের জন্য সময় ধার্য করার বিষয়ে কথা হয়েছে দু'পক্ষের মধ্যে । আগামীকাল নেপালের সময়অনুযায়ী দুপুর 12 টা45 মিনিটনাগাদ ফোনে কথা বলার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন ইমরান খান । (ভারতীয় সময় অনুযায়ী দুপুর12 টা30 মিনিট)
কূটনৈতিকবিশ্লেষকদের একাংশের মতে, দু'পক্ষের মধ্যে আলোচনার মুখ্য বিষয় হতেপারে ভারত । সম্প্রতি পাকিস্তানের করাচিতে স্টক এক্সচেঞ্জে যে জঙ্গি হানা হয়েছে, তার জন্য দিল্লিকেই দায়ী করছেইসলামাবাদ । অন্যদিকে ওলির অভিযোগ, ভারত নেপালের সরকার ভেঙে ফেলার চেষ্টাকরছে ।
এদিকেআবার লাদাখেও প্রকৃত সীমান্তরেখা বরাবর ভারত-চিন সীমান্ত উত্তেজনা অব্যাহত । ঠিকএই পরিস্থিতিতেই ওলিকে ফোন ইমরান খানের । নেপাল ও পাকিস্তান উভয় দেশেরই চিনের কাছেবিশাল অঙ্কের দেনা রয়েছে । সেদিক থেকে কাঠমান্ডু ও ইসলামাবাদের ভারত-ইশুতে একইধরনের মতামত আসবে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা ।
নেপালেররাজনীতির অন্দরমহলে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে যে, ওলি নাকি দলের মধ্যে নিজের জায়গা ধরেরাখতেই নেপালের এই নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছেন । ওলির বরাবরই চিনের প্রতিদুর্বলতা রয়েছে । এমনকি ওলির নেপালের প্রধানমন্ত্রী পদে বসার পিছনেও চিনের মদত ছিলবলে মনে করেন নেপালের রাজনীতিবিদদের অনেকে । এই পরিস্থিতিতে লেপুলেখ পাস, কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরাকে নিজেদেরভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত বলে দাবি করে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করার পিছনের আসল রহস্যটিহল চিনকে সাহায্য করা, - মত অনেকের ।