হায়দরাবাদ, 19 ডিসেম্বর: ভারতীয় অর্থনীতির হাল যখন বেহাল, ঠিক সেই সময়ই কোরোনা এসে ধাক্কা মারে ভারতীয় অর্থনীতিতে৷ ফলত ভারতীয় অর্থনীতি পিছিয়ে পড়েছে ৷ জিডিপি নেমে দাঁড়িয়েছে 3.1 শতাংশে ৷ প্রভাব পড়েছে ভারতীয় কৃষি, বাণিজ্য, শিল্প, অর্থনৈতিক বাজারসহ একাধিক ক্ষেত্রে৷ চলতি অর্থবর্ষের জুন ও সেপ্টেম্বর কোয়ার্টারে ভারতীয় অর্থনীতির সংকোচন হয়েছে যথাক্রমে 23.9 শতাংশ এবং 7.5 শতাংশে৷
দেখে নেওয়া যাক ভারতীয় অর্থনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলতে পেরেছে কোরোনা-
উৎপাদন ক্ষেত্রে প্রভাব
কোরোনার প্রাদুর্ভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভারতীয় উৎপাদন ক্ষেত্র৷ 20-21 আর্থিক বছরের প্রথম কোয়ার্টারে আর্থিক হার সংকুচিত হয়েছে 39.3 শতাংশে৷ প্যানডেমিকের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাপ্লাই চেন, গ্লোবাল ভ্যালু চেন এবং ডোমেস্টিক প্রোডাকসন ব্যবস্থা৷ জুলাই মাসের পর কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত আত্মনির্ভরতা প্যাকেজ কিছুটা হলেও চাঙ্গা করেছে ভারতীয় পণ্য উৎপাদনের বাজারকে৷ ফলস্বরূপ সেপ্টম্বরের প্রথম দিকে পণ্য উৎপাদনের হার বেড়ে হয়েছে 0.6 শতাংশে ৷ আশা করা যায় পিআইএল প্রকল্পের ফলে এই উতপাদনের হার কিছুটা হলেও বাড়বে৷ প্রধানমন্ত্রীর 'ভোকাল ফর লোকাল' প্রকল্পের ফলেও উৎপাদন খাতে অর্থিক মন্দা কিছুটা হলেও কাটবে৷
কৃষিক্ষেত্রে প্রভাব-
ভারতীয় অর্থনীতির বাজার যখন বিপন্ন, একমাত্র আশার আলো জাগিয়েছিল কৃষি৷ একমাত্র কৃষি ক্ষেত্রেই জুন ও সেপ্টেম্বর কোয়ার্টারে বৃদ্ধির হার ছিল অব্যহত৷সেপ্টেম্বর কোয়ার্টারে বৃদ্ধির হার ছিল 3.4 শতাংশ৷ শুরুর দিকে গ্রামের তুলনায় শহরে কোরোনার প্রাদুর্ভাব ছিল বেশি৷ ফলত জীবিকার সন্ধানে মানুষ একপ্রকার পালিয়ে এসেছিল গ্রামে৷ রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের 19-20র রিপোর্ট অনুযায়ী, 20-21 সালে ন্যায্য হারে কৃষি বাণিজ্যকরণ হওয়া উচিত৷ তা না হলে উৎপাদন এবং আয়ের সমতা বজায় রাখা সম্ভব নয়৷
কর্মসংস্থানে প্রভাব-
সিএমআইই এর তথ্য অনুসারে, লকডাউন চলাকালীন এপ্রিল-মে মাসে ভারতে বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছিল 23.5 শতাংশ৷ জুনে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল 11 শতাংশে৷ সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে 6 শতাংশে এবং নভেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে 6.5 শতাংশে৷
মুদ্রাস্ফীতি-
একবছরের বেশি সময় ধরে ভারত মুদ্রাস্ফীতির মুখোমুখি৷ স্থানীয় লকডাউন ও দেশব্যাপী লকডাউনের কারনে ব্যাহত হয়েছে সাপ্লাই চেন৷ ফলত বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতি৷ সিপিআই-এর তথ্য অনুসারে, 2020 সালের মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে হয়েছে 6 শতাংশ৷ যা ছাপিয়ে গিয়েছে আরবিআই এর অনুমানকে৷ এপ্রিল মাসে খুচরো বিক্রির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছিল 7.2 শতাংশে৷ নভেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে 6.93 শতাংশে৷
ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি-
আশার আলো দেখা যাচ্ছে নয়া আর্থিক বর্ষে৷ চলতি বছরের ডিসেম্বরে আরবিআই অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পূর্বাভাষকে সংশোধন করেছে -9.5 শতাংশ থেকে -7.5 শতাংশে৷