দিল্লি, 27 জুন : কেন্দ্রীয় সরকার এবং BJP সভাপতি জে পি নড্ডাকে এক হাত নিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও প্রবীন কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম । জেপি নাড্ডা অভিযোগ করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে 20 লাখ টাকা রাজীব গান্ধি ফাউন্ডেশনে দিয়েছিল UPA সরকার । BJP সভাপতির অভিযোগের পালটা জবাবে চিদাম্বরম বলেন, “ 20 লাখ টাকা ফেরত দিলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কি দেশকে আশ্বাস দিতে পারেন যে, চিন তাদের আগ্রাসন বন্ধ করবে এবং নিজেদের অবস্থানে ফিরে যাবে ?”
সম্প্রতি BJP-র তরফে অভিযোগ করা হয়, 2004 সালের সুনামির পর আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ত্রাণের কাজ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে । প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে 2005 সালে 20 লাখ টাকা রাজীব গান্ধি ফাউন্ডেশনে জমা পড়ে । এরপর একের পর এক টুইটে জবাব দিতে থাকেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম । তিনি বলেন, “BJP সভাপতি অর্ধসত্য বলার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছেন । গতকাল আমার দলের আরেক সদস্য রণদীপ সুরজেওয়ালা BJP সভাপতির অর্ধসত্যের উপর থেকে পর্দা সরিয়েছেন ।” এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে আক্রমণ করে চিদম্বরম বলেন, “2005 সালে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সুনামির ত্রাণ সংক্রান্ত কাজের জন্য রাজীব গান্ধি ফাউন্ডেশনকে 20 লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল । ওই টাকা প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে দেওয়া হয় । BJP সত্য ঘটনা চেপে যাচ্ছে কেন ? 20 লাখ টাকার সম্পূর্ণ খরচ সুনামির ত্রাণের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে এবং তার হিসেব আছে ।”
কেন্দ্রের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে প্রবীন কংগ্রেস নেতা সরাসরি বলেন, “15 বছর আগে রাজীব গান্ধি ফাউন্ডেশনকে দেওয়া অর্থের সঙ্গে ভারতীয় সীমানায় চিনের অনুপ্রবেশ কী সম্পর্ক ? যদি ওই 20 লাখ টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাহলে কি প্রধানমন্ত্রী মোদি আশ্বাস দিতে পারবেন যে, চিন ভারতীয় সীমানা ছেড়ে দেবে এবং নিজেদের অবস্থানে ফিরে যাবে ।” BJP সভাপতিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “বাস্তবের মাটিতে পা রেখে চলা উচিত নাড্ডার । অর্ধসত্য বলা অতীতে বাঁচা উচিত নয় । ভারতে চিনের অনুপ্রবেশ নিয়ে দয়া করে কথা বলুন ।”
গতকাল কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে BJP সভাপতি জে পি নাড্ডা, 2005 সালে রাজীব গান্ধি ফাউন্ডেশনকে দেওয়া অর্থের প্রসঙ্গ তোলেন । এর জবাবে রাজীব গান্ধি ফাউন্ডেশনের তরফে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা এক বিবৃতিতে বলেন, “2004 সালের শেষ সপ্তাহে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে আছড়ে পড়েছিল সুনামি । তার ত্রণ কাজের জন্য 2005 আর্থিক বর্ষে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে 20 লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল রাজীব গান্ধি ফাউন্ডেশনকে । যা ত্রাণ কাজে সম্পূর্ণ ব্যবহার করা হয় । নির্দিষ্ট কাজে ব্যবহার করার জন্য এই অর্থ অনুমোদন করা হয়েছিল ।” পাশাপাশি বিবৃতিতে সূর্যেওয়ালা আরও বলেন, “রাজীব গান্ধি ফাউন্ডেশনের অ্যাকাউন্ট অডিট করা হয় । সেই অনুযায়ী নিয়ম মেনে ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট (FCRA)-এর অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ওই অর্থ গ্রহণ করা হয়েছিল । পুরো বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং আয়কর দপ্তরকে জানানো হয় । কেউ এ বিষয়ে আপত্তি জানায়নি ।” সূর্যেওয়ালা আরও অভিযোগ করেন, ভুল তথ্য দেওয়া, মানুষের নজর অন্যদিকে ঘোরানো এবং ভাঙন ধরানো BJP-র নীতি । যখন জাতীয় সুরক্ষা ও নিজেদের সীমানা রক্ষার বিষয়ে মোদি সরকারের মিথ্যাচার ধরা পড়ে গেছে, তখন তারা নজর ঘোরানোর জন্য এসব করছে ।"