ড্যাসল্ট মিরাজ 2000 চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান ৷ এই যুদ্ধবিমান তৈরি করেছে ফ্রান্সের ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন ৷ ফরাসি বায়ুসেনার সুবিধার জন্য মিরাজIII-এর বদলে হালকা যুদ্ধবিমান হিসেবে 1970 সালে মিরাজ 2000 তৈরির পরিকল্পনা করা হয় ৷ বিভিন্ন ধাপে মিরাজ 2000-কে উন্নত করে বহুক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমানে পরিণত করা হয় ৷ প্রায় 9টি দেশের হাতে এই যুদ্ধবিমান রয়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত 600টিরও বেশি মিরাজ তৈরি করা হয়েছে ৷
মিরাজ 2000-এর ডিজ়াইন
এই যুদ্ধবিমানে একজোড়া নোজ়হুইল ও প্রধান গিয়ারের প্রতিটিতে একটি করে চাকা-সহ ট্রাইসাইকেল-টাইপ ল্যান্ডিং গিয়ার রয়েছে ৷ মিরাজের শেষ অংশের নিচে একটি রানওয়ে টেলহুক বা একটি ব্রেক প্যারাসুট লাগানোর জায়গা রয়েছে, যা ল্যান্ডিং গিয়ারের কার্বন ব্রেকগুলির সঙ্গে একত্রে অবতরণ দূরত্ব সংক্ষিপ্ত করতে পরিচালনা করতে পারে ৷ একক আসনের বা দুই আসনেরও বহুক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমান মিরাজ 2000 ৷
কোন দোন দেশ মিরাজ 2000 ব্যবহার করে ?
ভারত ছাড়াও আরও আটটি দেশকে মিরাজ 2000 বিক্রি করেছে ড্যাসল্ট ৷ এর মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স, মিশর, আরব আমিরশাহি, তাইওয়ান, পেরু, গ্রিস ও ব্রাজ়িল ৷ তবে ব্রাজ়িলে এই যুদ্ধবিমান অবসর নিয়েছে ৷ 30 বছর ধরে মোট 583টি মিরাজ 2000 তৈরি করা হয়েছে ৷
ভারতে মিরাজ 2000-এর ব্যবহার
1999 সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় মিরাজ 2000-এর ব্যবহার করেছিল বায়ুসেনা ৷ শুধু তাই নয়, 2019 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংসের সময় এই যুদ্ধবিমানের ব্যবহার করা হয় ৷
মিরাজের ইতিহাস
মিরাজ 2000 নিঃসন্দেহে ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম বহুক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমান ৷ 1985 সালে প্রথম এর পরিষেবা চালু করা হয়েছিল । মিরাজ পরিষেবায় আসার পরপরই বায়ুসেনার তরফে এর নাম দেওয়া হয়েছিল বজ্র । এই যুদ্ধবিমান প্রথম উড়ান নেয় 1978 সালে ৷ 1984 সালে এটি ফরাসি বায়ুসেনার অন্তর্ভুক্ত হয় । ভারত প্রাথমিকভাবে 1982 সালে 36টি একক আসনের ও চারটি দুই আসনের মিরাজ 2000-এর অর্ডার দিয়েছিল ।
কার্গিল যুদ্ধের সময় মিরাজ 2000 গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল ৷ এর সাফল্য দেখে সরকার 2004 সালে আরও 10টি মিরাজ 2000-এর অর্ডার দেয় ৷ বর্তমানে দেশে মোট 50টি মিরাজ রয়েছে ৷ 2011 সালে মিরাজ 2000-কে মিরাজ 2000-5MK-তে উন্নত করার জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ৷ এই যুদ্ধবিমান 2030 পর্যন্ত পরিষেবা দিতে সক্ষম ৷