দিল্লি, 16 অক্টোবর : ক্ষুধা ও অপুষ্টির নিরিখে খাদ্যসূচকে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, নেপাল ও বাংলাদেশের পিছনে ভারত । মানবিকতার কাজে যুক্ত দুই আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা 117 দেশের একটি তালিকা প্রকাশ করে । সেই তালিকা অনুযায়ী 117 দেশের মধ্যে 102 নম্বরে রয়েছে ভারত । অথচ পাকিস্তান রয়েছে 94, বাংলাদেশ 88 ও নেপাল 73 নম্বরে রয়েছে ।
বিশ্ব খাদ্যসূচক অনুসারে অনাহারের (GHI) 100 পয়েন্টের একটি তীব্রতা স্কেল রয়েছে । এই স্কেল অনুযায়ী যদি কোনও দেশের স্কোর 0 হয় তাহলে সেই দেশ অনাহার মুক্ত । অন্যদিকে তীব্রতা স্কেলে 100 স্কোর পাওয়ার অর্থ চূড়ান্ত অনাহার । রিপোর্ট অনুযায়ী এই তীব্রতা স্কেলে ভারতের স্কোর 30.3 ।
2014 সালে খাদ্যসূচকে ভারত ছিল 55 নম্বরে । সেখানে 2019 সালে ভারত খাদ্যসূচকে 102 নম্বরে রয়েছে । যার থেকে বোঝা যায় প্রতি বছর পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে এগোচ্ছে । 2014 সালে 76 টি দেশের মধ্যে খাদ্যসূচকে ভারতের স্থান ছিল 55 নম্বরে । 2017 সালে 119 টি দেশের মধ্যে 100-তে স্থান ছিল ভারতের । 2018 সালে 119 টি দেশের মধ্যে 103 নম্বরে ছিল ভারতের স্থান ।
আয়ারল্যাণ্ডের কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও জার্মানির ওয়েলথহাঙ্গারলাইফ নামক দুটি সংস্থা বিশ্ব খাদ্যসূচকের এই বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করে । এই রিপোর্ট অনুযায়ী, বিপুল জনসংখ্যাই ভারতের খাদ্যসূচকে বড়সড় প্রভাব ফেলেছে । পাশাপাশি ভারতে পাঁচ বছরের নিচে অপুষ্টির শিকার শিশুদের হার 20.8 শতাংশ । বিশ্ব খাদ্যসূচকের রিপোর্ট অনুসারে এই হার সারা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ ।
চারটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে এই খাদ্যসূচকটি তৈরি হয়েছে । সেগুলি হল অপুষ্টি, চাইল্ড ওয়েস্টিং বা পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ওজনের ভিত্তি, পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের উচ্চতা বয়সের তুলনায় কম এবং পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের মৃত্যুর হার ।
বিশ্ব খাদ্যসূচকের এই রিপোর্ট সামনে আসার পর থেকেই বিরোধী দলগুলি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণের নিশানায় রাখে । কেরালার অর্থমন্ত্রী থমাস আইজ়্যাক টুইট করেন, "2019 সালের বিশ্ব খাদ্যসূচক প্রকাশ হয়েছে । ভারত 102 নম্বরে নেমেছে । খাদ্যসূচকে ভারতের এই পতন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উত্থানের সঙ্গেই শুরু হয়েছিল ।"
কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া টুইট করেন, "বিশ্ব খাদ্যসূচকে ভারত 102 নম্বরে রয়েছে । রিপোর্ট বলছে ভারত যে পর্যায়ের অনাহারে ভুগছে তা চিন্তাজনক । তারপরও অনেকে বিশ্বাস করেন আচ্ছে দিন আয়েগা । কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কখন ?"