ETV Bharat / bharat

ভয়ঙ্কর বায়ুদূষণের কবলে দিল্লি, মুক্তি কোন পথে

দীপাবলির বাজির ধোঁয়ায় গোটা উত্তর ভারতের আকাশ ভরে যায়। তাই শ্বাস নিতে ভারতের রাজধানী নিঃসন্দেহে লড়াই করছে । যদিও কয়েকজন মন্ত্রীর দাবি, বৃষ্টির স্বল্পতা, চাষের জমিতে থাকা ফসলের গোড়া পোড়ানো এর জন্য দায়ী । তবে, শহরের বায়ুসূচক কিন্তু মারাত্মক কথা বলেছে ।

ছবি
author img

By

Published : Nov 7, 2019, 2:04 PM IST

Updated : Nov 7, 2019, 2:14 PM IST

দিল্লি, 7 নভেম্বর : শ্বাস নিতে ভারতের রাজধানী নিঃসন্দেহে লড়াই করছে । এটা প্রতি বছরের একটা সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে । এই বছর বায়ুদূষণের ঘটনা অনেক বেশি মারাত্মক । বর্ষার সময়, অর্থাৎ অগাস্ট এবং সেপ্টেম্বরে বায়ুর পরিস্থিতি এই শহরে সব থেকে ভালো থাকে । দীপাবলির বাজির ধোঁয়ায় গোটা উত্তর ভারতের আকাশ ভরে যায়। প্রতিবেশি রাজ্যের আগুনে পুড়ে যায় দিল্লি । কেজরিওয়াল সরকার সাধারণ স্বাস্থ্যের কারণে জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করেছে । পাঁচ তারিখ পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল । নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জোড়-বিজোড় নীতি চালু করা হয়েছিল । যদিও কয়েকজন মন্ত্রীর দাবি, বৃষ্টির স্বল্পতা, চাষের জমিতে থাকা ফসলের গোড়া পোড়ানো এর জন্য দায়ী । কারণ যাই হোক, শহরের বায়ু সূচক কিন্তু মারাত্মক কথা বলেছে । AQI যদি 400-500 মধ্যে থাকে, তাহলে বলতে হবে পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ । বাস্তবটা হল, দিল্লিতে এই মান 500 ছাড়িয়ে গেছে । এর ফলে উড়ান পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছিল । গুরগাঁও, নয়ডা, ফরিদাবাদ এবং গাজিয়াবাদের মানুষজনকে মাক্স ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে । তেলঙ্গনা, মহারাষ্ট্র, মধ্য প্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং ওড়িশাও এইরকম বায়ুদূষণের জ্বালায় জ্বলছে ।

উত্তর ভারতের কৃষকরা গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে গম ব্যবহার করেন এবং চাষের জমিতে থাকা ফসলের গোড়া পোড়ান । ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুন্যাল (NGT) চাষের জমিতে থাকা ফসলের গোড়া পোড়ানো চার বছর আগেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে । পঞ্জাব এবং হরিয়ানা সরকার NGT-এর এই নির্দেশ মানতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ । কেন্দ্রীয় সরকার এটা কার্যকর করতে 1100 কোটি টাকা ঘোষণা করেছে, যদিও পরিস্থিতির সামান্যতম পরিবর্তন হয়নি । এক টন ফসল পোড়ানো হলে 60 কোজি কার্বন মনোক্সাই, 1400 কেজি গ্রিন হাউস গ্যাস, 3 কোজি সালফার ডাই অক্সাইড বাতাসে মেশে । হরিয়ানা, পঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশ প্রতি বছর পাঁচ কোটি টন ফসল পোড়ায় । এতে টক্সিন গ্যাস নিঃসরণের ফলে উপকৃত ব্যাকটেরিয়া মারা যায় । জমির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে । পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ হরিয়ানা, পঞ্জাব এবং দিল্লি কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করতে বলেছে । বিশেষজ্ঞরা এর বিকল্প হিসেবে জোয়ার চাষের পরামর্শ দিয়েছেন ।

বায়ুদূষণ শুধুমাত্র দিল্লি বা কিছু নির্দিষ্ট শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই । ভারতীয় শহরগুলোর মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ এই সময়কালের মধ্যে দূষণের গর্ভে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে । বায়ু সূচকের নিরিখে ভারতের স্থান খুবই নিচের দিকে । প্রতি বছর বায়ু দূষণের কারণে 8 জনের মধ্যে এক জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকে । বায়ু দূষণের জন্য চিনে মৃত্যুর হার নিম্নমুখী, যারা শিল্প থেকে দূষণ ছড়ানো অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করছে । যেখানে ভারতে বায়ু দূষণের কারণে মৃত্যু 23 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে । AIIMS ইতিমধ্যেই সতর্ক করে জানিয়েছে, বায়ু দূষণের ফলে ফুসফুস এবং হৃদপিন্ড মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে । শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি এক গবেষণামূলক পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে, বায়ু দূষণের ফলে মানুষের আয়ু সাত বছর করে কমে যাচ্ছে । অপেক্ষাকৃত ছোট শহর কুরনুল এবং ওয়াঙ্গলেও বায়ু দূষণের মাত্রা বেশ বেশি । প্রায় 66 কোটি ভারতবাসীর জীবনে বায়ু দূষণ মারাত্মক প্রভাব ফেলছে । অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং বার্বাডোজের মতো দেশগুলি সাধারণ মানুষকে যথেষ্ট পরিমাণে সচেতন করতে সক্ষম । ভারতের উচিত এ বিষয়ে পুস্তিকা প্রকাশ করা এবং পরিবেশ সংক্রান্ত আইনকে সঠিক ভাবে রূপায়ণ করা । একমাত্র সরকার এবং জনসাধারণ মিলিত ভাবে পরিবেশ সচেতনতামূলক কাজ করলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব ।

দিল্লি, 7 নভেম্বর : শ্বাস নিতে ভারতের রাজধানী নিঃসন্দেহে লড়াই করছে । এটা প্রতি বছরের একটা সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে । এই বছর বায়ুদূষণের ঘটনা অনেক বেশি মারাত্মক । বর্ষার সময়, অর্থাৎ অগাস্ট এবং সেপ্টেম্বরে বায়ুর পরিস্থিতি এই শহরে সব থেকে ভালো থাকে । দীপাবলির বাজির ধোঁয়ায় গোটা উত্তর ভারতের আকাশ ভরে যায়। প্রতিবেশি রাজ্যের আগুনে পুড়ে যায় দিল্লি । কেজরিওয়াল সরকার সাধারণ স্বাস্থ্যের কারণে জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করেছে । পাঁচ তারিখ পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল । নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জোড়-বিজোড় নীতি চালু করা হয়েছিল । যদিও কয়েকজন মন্ত্রীর দাবি, বৃষ্টির স্বল্পতা, চাষের জমিতে থাকা ফসলের গোড়া পোড়ানো এর জন্য দায়ী । কারণ যাই হোক, শহরের বায়ু সূচক কিন্তু মারাত্মক কথা বলেছে । AQI যদি 400-500 মধ্যে থাকে, তাহলে বলতে হবে পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ । বাস্তবটা হল, দিল্লিতে এই মান 500 ছাড়িয়ে গেছে । এর ফলে উড়ান পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছিল । গুরগাঁও, নয়ডা, ফরিদাবাদ এবং গাজিয়াবাদের মানুষজনকে মাক্স ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে । তেলঙ্গনা, মহারাষ্ট্র, মধ্য প্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং ওড়িশাও এইরকম বায়ুদূষণের জ্বালায় জ্বলছে ।

উত্তর ভারতের কৃষকরা গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে গম ব্যবহার করেন এবং চাষের জমিতে থাকা ফসলের গোড়া পোড়ান । ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুন্যাল (NGT) চাষের জমিতে থাকা ফসলের গোড়া পোড়ানো চার বছর আগেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে । পঞ্জাব এবং হরিয়ানা সরকার NGT-এর এই নির্দেশ মানতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ । কেন্দ্রীয় সরকার এটা কার্যকর করতে 1100 কোটি টাকা ঘোষণা করেছে, যদিও পরিস্থিতির সামান্যতম পরিবর্তন হয়নি । এক টন ফসল পোড়ানো হলে 60 কোজি কার্বন মনোক্সাই, 1400 কেজি গ্রিন হাউস গ্যাস, 3 কোজি সালফার ডাই অক্সাইড বাতাসে মেশে । হরিয়ানা, পঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশ প্রতি বছর পাঁচ কোটি টন ফসল পোড়ায় । এতে টক্সিন গ্যাস নিঃসরণের ফলে উপকৃত ব্যাকটেরিয়া মারা যায় । জমির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে । পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ হরিয়ানা, পঞ্জাব এবং দিল্লি কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করতে বলেছে । বিশেষজ্ঞরা এর বিকল্প হিসেবে জোয়ার চাষের পরামর্শ দিয়েছেন ।

বায়ুদূষণ শুধুমাত্র দিল্লি বা কিছু নির্দিষ্ট শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই । ভারতীয় শহরগুলোর মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ এই সময়কালের মধ্যে দূষণের গর্ভে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে । বায়ু সূচকের নিরিখে ভারতের স্থান খুবই নিচের দিকে । প্রতি বছর বায়ু দূষণের কারণে 8 জনের মধ্যে এক জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকে । বায়ু দূষণের জন্য চিনে মৃত্যুর হার নিম্নমুখী, যারা শিল্প থেকে দূষণ ছড়ানো অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করছে । যেখানে ভারতে বায়ু দূষণের কারণে মৃত্যু 23 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে । AIIMS ইতিমধ্যেই সতর্ক করে জানিয়েছে, বায়ু দূষণের ফলে ফুসফুস এবং হৃদপিন্ড মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে । শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি এক গবেষণামূলক পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে, বায়ু দূষণের ফলে মানুষের আয়ু সাত বছর করে কমে যাচ্ছে । অপেক্ষাকৃত ছোট শহর কুরনুল এবং ওয়াঙ্গলেও বায়ু দূষণের মাত্রা বেশ বেশি । প্রায় 66 কোটি ভারতবাসীর জীবনে বায়ু দূষণ মারাত্মক প্রভাব ফেলছে । অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং বার্বাডোজের মতো দেশগুলি সাধারণ মানুষকে যথেষ্ট পরিমাণে সচেতন করতে সক্ষম । ভারতের উচিত এ বিষয়ে পুস্তিকা প্রকাশ করা এবং পরিবেশ সংক্রান্ত আইনকে সঠিক ভাবে রূপায়ণ করা । একমাত্র সরকার এবং জনসাধারণ মিলিত ভাবে পরিবেশ সচেতনতামূলক কাজ করলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব ।

New Delhi, Nov 07 (ANI): A layer of smog blankets the national capital on November 07. Air quality of Delhi took major hit due to a combination of stubble burning and firecracker emissions. According to Air Quality Index (AQI), major pollutants in Delhi's Lodhi Road area were PM 2.5 at 169 and PM 10 at 183. To curb air pollution, Chief Minister Arvind Kejriwal-led government in Delhi has announced implementation of odd-even scheme from Nov 04-15.
Last Updated : Nov 7, 2019, 2:14 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.