ETV Bharat / bharat

কোরোনা ভাইরাস ও অর্থনীতি : সরকার ও আমাদের কাছে দ্বৈত চ্যালেঞ্জ

বিশিষ্ট সাংবাদিক শেখর আইয়ারের মতে, সরকারের উচিত ক্ষতিপূরণ দেওয়া সংক্রান্ত কোনও কর্মসূচি আনা ৷ যার মধ্যে অসংগঠিত ক্ষেত্রে সরাসরি টাকা দিয়ে কয়েক মিলিয়ন মানুষকে বাঁচানোর বিষয়টিও রয়েছে ৷

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি
author img

By

Published : Mar 25, 2020, 6:07 PM IST

Updated : Mar 25, 2020, 9:30 PM IST

দিল্লি, 25 মার্চ : ভারতে প্রায় সাড়ে পাঁচশো জন আক্রান্ত ৷ মৃত্যুর সংখ্যা দশজনের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় COVID-19 সংক্রান্ত বিপদ এখন বাস্তব পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে ৷ জীবন এবং অর্থনীতিতে এর পুরো প্রভাব আমরা হয়তো বুঝতে পারছি না ৷ কিন্তু আমরা এটা বুঝতে পারছি যে এই বিপদ আমাদের অনেক দূর টেনে নিয়ে যাবে এবং আমাদের অর্থনীতিকে সমস্যার মধ্যে ফেলবে ৷ COVID-19 প্যানডেমিকের প্রভাবে যে আমাদের দেশের প্রতিটি নাগরিককে বাস্তব সমস্যার সম্মুখীন করবে, তা 19 মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণের আগে দেশের মানুষ বুঝতেই পারেনি ৷ 22 মার্চ সফল ‘জনতা কারফিউ’য়ের পরের দিন মোদি রাজ্য সরকারগুলিকে লক ডাউন করার পরামর্শ দেন এবং সেগুলিকে যথাযথা মেনে চলার কথা বলেন ৷

দেশজুড়ে লকডাউন

আগামীদিনে ভারতকে স্বাধীনতার পর তাদের সবচেয়ে কঠিন লড়াই লড়তে হবে ৷ কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন এই রোগের ট্রান্সমিশন সাইকেল ভাঙতে সম্পূর্ণ লক ডাউন করতে বাধ্য হচ্ছে ৷ রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনীতি, একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত ৷ যখন কেউ বাড়ির বাইরে বেরোবে না, কোনও ব্যবসায়িক কাজ হবে না এবং সবকিছু দাঁড়িয়ে যাবে, তখনই এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে এই রোগের ছড়িয়ে পড়া আটকে দেওয়া যাবে ৷ কিন্তু এটা অর্থনীতির উপর চরম আঘাত হানবে ৷ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর কড়াকড়ি যত কমবে, অর্থনীতির উপর প্রভাব ততই কম হতে থাকবে ৷ অন্তত কিছুটা সময়ের জন্য তো বটেই ৷ যদিও অর্থনৈতিক লাভের তুলনায় মানুষের জীবনের দাম অনেক বেশি ৷ এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার মানুষের জীবন এবং জীবনযাত্রার সুরক্ষার জন্য করা পদক্ষেপের মধ্যে যথেষ্ট ভারসাম্য বজায় রেখে চলার চেষ্টা করছে ৷ যখন কোনও সংকট এবং আতঙ্ক তৈরি হয়, তখন সাধারণ মানুষ সরকারের মুখাপেক্ষী হয়েই থাকে ৷ মধ্যবর্তী পর্যায়ে যদি এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়, তাহলে অনেক সমস্যার সমাধানই সহজে করা যাবে ৷ অন্তত সরকারি আধিকারিক ও ব্যবসায়ীরা তাই বলছেন ৷ যদি এই সংকট দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাঘাতের প্রভাব সরকারি কোষাগারেও পড়বে ৷ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের নেতৃত্বে একটি টাস্ক ফোর্স গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ৷ ওই টাস্ক ফোর্স এই সংকটের নেতিবাচক দিকগুলি বিশ্লেষণ করবে এবং যে সমস্ত ক্ষেত্রগুলি চরম সংকটে পড়বে, তাদের জন্য রিলিফ প্যাকেজ তৈরি করবে ৷

ভারতীয় শেয়ার বাজারে একটা বড় আঘাত দেখা যাচ্ছে, রোজই সূচক নেমে যাচ্ছে ৷ অর্থনীতিবিদরা বলছেন, একদিন সবকিছু পুরোপুরি বন্ধ থাকা মানে সমস্ত উৎপাদন বন্ধ করে রাখা এবং এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকার GDP ৷ দশদিন কাজ বন্ধ করে রাখলে ৫ লাখ কোটি টাকা বা ৩.৪ শতাংশ প্রভাব পড়বে GDP-তে ৷

বিভিন্ন ক্ষেত্রের উপর প্রভাব

একদিকে যখন সরকার বৃহৎ ভাবে সাহায্যের পরিকল্পনা করছে, তখন প্রতিটি বড় শিল্পেরই কিছু নিজস্ব সমস্যা সমাধান করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে ৷ এই বন্ধের পরিস্থিতি শেষ হওয়ার পরই বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রভাব হিসেব কষে দেখা যাবে ৷ যেহেতু এটা রবি শস্য উৎপাদনের শুরুর সময়, তাই কৃষিক্ষেত্র এখন একটি দুর্বল পরিস্থিতিতে রয়েছে ৷ লক ডাউন লাগু হয়ে যাওয়ার পর যোগানে ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে ৷ যার ফলে কৃষকদের আয়ের উপর খারাপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ উৎপাদন শিল্প কাঁচামাল ঘাটতি এড়াতে সরবরাহের শৃঙ্খল তৈরি করার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ৷ ত্রাণের চাহিদা মেটানোর জন্য পরিকাঠামোর দিকে যদি সরকার সবকিছু বরাদ্দ করে, তাহলে স্টিল ও সিমেন্টের মতো শিল্পগুলি সমস্যায় পড়তে পারে ৷ যখন বিনিয়োগের পরিমাণ কম হয়, তখন চাকরির ক্ষেত্রই দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় ৷ কিন্তু বর্তমানে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার জেরে বিমান শিল্প, হোটেল, রেঁস্তরা, পর্যটন, মল ও বিনোদন শিল্পের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ৷

আয়ের সাহায্যের দিকেই নজর দিতে হবে

আরও ভয়ঙ্কর ক্ষেত্র অংসগঠিত অর্থনীতির কী হবে ? জনগণের জীবিকা রক্ষার জন্য সরকারের কি উচিত সমস্ত রাজস্ব এবং ঘাটতি অনুপাতের সমস্ত সুবিধা ছেড়ে দিয়ে নগদ যোগানের দিকে নজর দেওয়া ? নাগরিকদের ঠিক কতটা ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত হতে হবে ?

সম্প্রতি ভারতের শীর্ষস্তরের শিল্পপতিরা ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন ৷ অসংগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত কয়েক মিলিয়ন মানুষকে সরাসরি টাকা দিতে 2-3 লাখ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণার জন্য তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন ৷ এই মানুষেরা Covid-19 ছড়িয়ে পড়ার জন্য কাজ হারিয়েছেন ৷

একদিকে প্রধানমন্ত্রী শিল্প ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রগুলিকে তাদের কর্মীদের ছাঁটাই না করতে কিংবা বেতন বন্ধ না করার আবেদন জানিয়েছেন ৷ পাশাপাশি বেতন ও পেনশন চালু রাখা এবং বেকারত্ব দূরীকরণ কর্মসূচির অর্থ বরাদ্দ বজায় রাখার দিকেও সরকার নজর দিয়েছে ৷ একই সঙ্গে উপার্জন কমে যাওয়ায় বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিকে কর্মীদের বেতন দেওয়ার বিষয়ে সরাসরি চাপ দিতেও পারছে না সরকার ৷ ঠিক এই জায়গাতেই সরকারকে নগদ টাকা দিয়ে ক্ষতিপূরণ কর্মসূচি চালু করতে হবে ৷ শিল্পপতিরা সরকারকে জানিয়েছে যে একদিকে তিন মাসের জন্য সমস্ত ঋণশোধ বন্ধ রাখা হোক এবং অন্যদিকে যাঁদের আয় বছরে ৫ লাখ টাকার কম, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরকার সরাসরি টাকা পাঠিয়ে দিক ৷

সমস্ত নাগরিককেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরাসরি টাকা দেওয়ার অনুরোধ তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানিয়েছেন ৷কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (CII) প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছে যে ২৫ বছরের নিচে যাঁদের বয়স, তাঁদের এককালীন ৫ হাজার টাকা দেওয়া হোক ৷ আর যাঁদের বয়স ৬৫ বছরের উপরে তাঁদের দেওয়া হোক ১০ হাজার টাকা ৷সংক্ষেপে, টাকা পাঠানো, ভর্তুকিযুক্ত খাবার, ঋণশোধের মেয়াদ বাড়ানো, বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা বাড়ানো, প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম কমানোর কাজ করা যেতে পারে ৷এই অর্থনৈতিক ঘাটতির সময়, যখন রাজস্ব আদায় লক্ষ্যণীয় ভাবে কমছে, তখন কি ভারত এমন একটা পদক্ষেপ করতে পারবে ? সরকারকে অবশ্যই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে ৷তাঁরা যেমন বলেছেন যে এটা অকটা ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি এবং নজিরবিহীন ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে ৷

লেখক : শেখর আইয়ার ৷ মতামত ব্যক্তিগত ৷

দিল্লি, 25 মার্চ : ভারতে প্রায় সাড়ে পাঁচশো জন আক্রান্ত ৷ মৃত্যুর সংখ্যা দশজনের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় COVID-19 সংক্রান্ত বিপদ এখন বাস্তব পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে ৷ জীবন এবং অর্থনীতিতে এর পুরো প্রভাব আমরা হয়তো বুঝতে পারছি না ৷ কিন্তু আমরা এটা বুঝতে পারছি যে এই বিপদ আমাদের অনেক দূর টেনে নিয়ে যাবে এবং আমাদের অর্থনীতিকে সমস্যার মধ্যে ফেলবে ৷ COVID-19 প্যানডেমিকের প্রভাবে যে আমাদের দেশের প্রতিটি নাগরিককে বাস্তব সমস্যার সম্মুখীন করবে, তা 19 মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণের আগে দেশের মানুষ বুঝতেই পারেনি ৷ 22 মার্চ সফল ‘জনতা কারফিউ’য়ের পরের দিন মোদি রাজ্য সরকারগুলিকে লক ডাউন করার পরামর্শ দেন এবং সেগুলিকে যথাযথা মেনে চলার কথা বলেন ৷

দেশজুড়ে লকডাউন

আগামীদিনে ভারতকে স্বাধীনতার পর তাদের সবচেয়ে কঠিন লড়াই লড়তে হবে ৷ কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন এই রোগের ট্রান্সমিশন সাইকেল ভাঙতে সম্পূর্ণ লক ডাউন করতে বাধ্য হচ্ছে ৷ রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনীতি, একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত ৷ যখন কেউ বাড়ির বাইরে বেরোবে না, কোনও ব্যবসায়িক কাজ হবে না এবং সবকিছু দাঁড়িয়ে যাবে, তখনই এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে এই রোগের ছড়িয়ে পড়া আটকে দেওয়া যাবে ৷ কিন্তু এটা অর্থনীতির উপর চরম আঘাত হানবে ৷ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর কড়াকড়ি যত কমবে, অর্থনীতির উপর প্রভাব ততই কম হতে থাকবে ৷ অন্তত কিছুটা সময়ের জন্য তো বটেই ৷ যদিও অর্থনৈতিক লাভের তুলনায় মানুষের জীবনের দাম অনেক বেশি ৷ এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার মানুষের জীবন এবং জীবনযাত্রার সুরক্ষার জন্য করা পদক্ষেপের মধ্যে যথেষ্ট ভারসাম্য বজায় রেখে চলার চেষ্টা করছে ৷ যখন কোনও সংকট এবং আতঙ্ক তৈরি হয়, তখন সাধারণ মানুষ সরকারের মুখাপেক্ষী হয়েই থাকে ৷ মধ্যবর্তী পর্যায়ে যদি এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়, তাহলে অনেক সমস্যার সমাধানই সহজে করা যাবে ৷ অন্তত সরকারি আধিকারিক ও ব্যবসায়ীরা তাই বলছেন ৷ যদি এই সংকট দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাঘাতের প্রভাব সরকারি কোষাগারেও পড়বে ৷ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের নেতৃত্বে একটি টাস্ক ফোর্স গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ৷ ওই টাস্ক ফোর্স এই সংকটের নেতিবাচক দিকগুলি বিশ্লেষণ করবে এবং যে সমস্ত ক্ষেত্রগুলি চরম সংকটে পড়বে, তাদের জন্য রিলিফ প্যাকেজ তৈরি করবে ৷

ভারতীয় শেয়ার বাজারে একটা বড় আঘাত দেখা যাচ্ছে, রোজই সূচক নেমে যাচ্ছে ৷ অর্থনীতিবিদরা বলছেন, একদিন সবকিছু পুরোপুরি বন্ধ থাকা মানে সমস্ত উৎপাদন বন্ধ করে রাখা এবং এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকার GDP ৷ দশদিন কাজ বন্ধ করে রাখলে ৫ লাখ কোটি টাকা বা ৩.৪ শতাংশ প্রভাব পড়বে GDP-তে ৷

বিভিন্ন ক্ষেত্রের উপর প্রভাব

একদিকে যখন সরকার বৃহৎ ভাবে সাহায্যের পরিকল্পনা করছে, তখন প্রতিটি বড় শিল্পেরই কিছু নিজস্ব সমস্যা সমাধান করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে ৷ এই বন্ধের পরিস্থিতি শেষ হওয়ার পরই বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রভাব হিসেব কষে দেখা যাবে ৷ যেহেতু এটা রবি শস্য উৎপাদনের শুরুর সময়, তাই কৃষিক্ষেত্র এখন একটি দুর্বল পরিস্থিতিতে রয়েছে ৷ লক ডাউন লাগু হয়ে যাওয়ার পর যোগানে ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে ৷ যার ফলে কৃষকদের আয়ের উপর খারাপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ উৎপাদন শিল্প কাঁচামাল ঘাটতি এড়াতে সরবরাহের শৃঙ্খল তৈরি করার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ৷ ত্রাণের চাহিদা মেটানোর জন্য পরিকাঠামোর দিকে যদি সরকার সবকিছু বরাদ্দ করে, তাহলে স্টিল ও সিমেন্টের মতো শিল্পগুলি সমস্যায় পড়তে পারে ৷ যখন বিনিয়োগের পরিমাণ কম হয়, তখন চাকরির ক্ষেত্রই দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় ৷ কিন্তু বর্তমানে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার জেরে বিমান শিল্প, হোটেল, রেঁস্তরা, পর্যটন, মল ও বিনোদন শিল্পের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ৷

আয়ের সাহায্যের দিকেই নজর দিতে হবে

আরও ভয়ঙ্কর ক্ষেত্র অংসগঠিত অর্থনীতির কী হবে ? জনগণের জীবিকা রক্ষার জন্য সরকারের কি উচিত সমস্ত রাজস্ব এবং ঘাটতি অনুপাতের সমস্ত সুবিধা ছেড়ে দিয়ে নগদ যোগানের দিকে নজর দেওয়া ? নাগরিকদের ঠিক কতটা ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত হতে হবে ?

সম্প্রতি ভারতের শীর্ষস্তরের শিল্পপতিরা ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন ৷ অসংগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত কয়েক মিলিয়ন মানুষকে সরাসরি টাকা দিতে 2-3 লাখ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণার জন্য তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন ৷ এই মানুষেরা Covid-19 ছড়িয়ে পড়ার জন্য কাজ হারিয়েছেন ৷

একদিকে প্রধানমন্ত্রী শিল্প ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রগুলিকে তাদের কর্মীদের ছাঁটাই না করতে কিংবা বেতন বন্ধ না করার আবেদন জানিয়েছেন ৷ পাশাপাশি বেতন ও পেনশন চালু রাখা এবং বেকারত্ব দূরীকরণ কর্মসূচির অর্থ বরাদ্দ বজায় রাখার দিকেও সরকার নজর দিয়েছে ৷ একই সঙ্গে উপার্জন কমে যাওয়ায় বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিকে কর্মীদের বেতন দেওয়ার বিষয়ে সরাসরি চাপ দিতেও পারছে না সরকার ৷ ঠিক এই জায়গাতেই সরকারকে নগদ টাকা দিয়ে ক্ষতিপূরণ কর্মসূচি চালু করতে হবে ৷ শিল্পপতিরা সরকারকে জানিয়েছে যে একদিকে তিন মাসের জন্য সমস্ত ঋণশোধ বন্ধ রাখা হোক এবং অন্যদিকে যাঁদের আয় বছরে ৫ লাখ টাকার কম, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরকার সরাসরি টাকা পাঠিয়ে দিক ৷

সমস্ত নাগরিককেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরাসরি টাকা দেওয়ার অনুরোধ তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানিয়েছেন ৷কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (CII) প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছে যে ২৫ বছরের নিচে যাঁদের বয়স, তাঁদের এককালীন ৫ হাজার টাকা দেওয়া হোক ৷ আর যাঁদের বয়স ৬৫ বছরের উপরে তাঁদের দেওয়া হোক ১০ হাজার টাকা ৷সংক্ষেপে, টাকা পাঠানো, ভর্তুকিযুক্ত খাবার, ঋণশোধের মেয়াদ বাড়ানো, বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা বাড়ানো, প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম কমানোর কাজ করা যেতে পারে ৷এই অর্থনৈতিক ঘাটতির সময়, যখন রাজস্ব আদায় লক্ষ্যণীয় ভাবে কমছে, তখন কি ভারত এমন একটা পদক্ষেপ করতে পারবে ? সরকারকে অবশ্যই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে ৷তাঁরা যেমন বলেছেন যে এটা অকটা ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি এবং নজিরবিহীন ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে ৷

লেখক : শেখর আইয়ার ৷ মতামত ব্যক্তিগত ৷

Last Updated : Mar 25, 2020, 9:30 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.